বাংলা

ফিলিপাইনের ‘দুষ্ট আইন’ অবৈধভাবে সামুদ্রিক অধিকার সম্প্রসারণের রাজনৈতিক কারসাজি: সিএমজি সম্পাদকীয়

CMG2024-11-10 19:13:54

নভেম্বর ১০: ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট মার্কোস ৮ই নভেম্বর তথাকথিত ‘সামুদ্রিক এলাকা আইন’ এবং ‘দ্বীপ ও সমুদ্রপথ আইন’ স্বাক্ষর করেন, যাতে অবৈধভাবে চীনের হুয়াংইয়ান দ্বীপ ও এবং নানশা দ্বীপপুঞ্জের বেশিরভাগ দ্বীপ এবং সংশ্লিষ্ট সমুদ্র এলাকা ফিলিপাইনের সামুদ্রিক এলাকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফিলিপাইনের এই পদক্ষেপটি কেবলমাত্র দেশীয় আইনের মাধ্যমে দক্ষিণ চীন সাগরের সালিশি মামলার অবৈধ রায়কে পোক্ত করার একটি প্রচেষ্টা নয়, নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল ও পররাষ্ট্রনীতির প্রেক্ষাপটে বর্তমান সরকারের একটি রাজনৈতিক ‘গোপন পদক্ষেপও বটে।

সময়ের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, ফিলিপাইনের এই সময়ে তথাকথিত ‘সামুদ্রিক এলাকা আইন’ স্বাক্ষর করার জন্য তিনটি প্রধান দুরভিসন্ধি রয়েছে। প্রথমত, এটি অশান্ত আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এবং সদ্য সমাপ্ত মার্কিন নির্বাচনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বিলে স্বাক্ষরের ফলে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিণতির চাপ কমানোর প্রচেষ্টা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, দক্ষিণ চীন সাগরে তার অবৈধ কর্মকাণ্ডের জন্য আইনি ব্যবচ্ছেদ করার চেষ্টা করা। তৃতীয়টা হল, পরবর্তী মার্কিন সরকারকে সমর্থন অব্যাহত রাখার জন্য চাপ সৃষ্টি করা।

যাহোক, এই দুটি তথাকথিত বিল দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব, সামুদ্রিক অধিকার ও স্বার্থকে গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করে, ‘দক্ষিণ চীন সাগর সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর আচরণের ঘোষণাপত্রে’ নির্ধারিত ‘সংলাপ ও পরামর্শের মাধ্যমে মতপার্থক্য নিরসনের’ গুরুত্বপূর্ণ নীতি লঙ্ঘন করে, যা আন্তর্জাতিক আইনী নিয়মের বিদ্যমান ব্যবস্থাকে দুর্বল করে, এবং এ জন্যই এগুলো অবৈধ।

প্রথমত, ফিলিপাইন সামুদ্রিক এলাকা আইনের মাধ্যমে অবৈধ দক্ষিণ চীন সাগরের সালিশিকে বৈধ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এটি এই সত্যকে পরিবর্তন করতে পারে না যে, সালিশি মামলা ‘সমুদ্রের আইন সম্পর্কিত জাতিসংঘের কনভেনশনের’ বিপরীত এবং একটি রাজনৈতিক প্রহসন হিসাবে বিবেচিত হয়।

উপরন্তু, বিলটি উন্মত্তভাবে দাবি করে যে ২০০-নটিক্যাল-মাইলের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত কৃত্রিম ব্যবস্থাগুলো এবং ‘নিম্ন জোয়ারের উচ্চভূমি’ সব ফিলিপাইনের মালিকানাধীন। এটি আসলে জাতিসংঘের কনভেনশনের ব্যাখ্যা এবং প্রয়োগের সুযোগের বাইরে চলে যায়। এটি কেবল কনভেনশনের নামে এর অবৈধ অধিকার এবং স্বার্থ সম্প্রসারণ ছাড়া আর কিছুই নয়।

তৃতীয়ত, ফিলিপাইন চীনের হুয়াংইয়ান দ্বীপ এবং নানশা দ্বীপপুঞ্জের বেশিরভাগ দ্বীপ ও সংশ্লিষ্ট সামদ্রিক এলাকাকে তার দাবিকৃত এখতিয়ারের সুযোগে নিয়ে এসেছে, অভ্যন্তরীণ আইনের মাধ্যমে তার অঞ্চল সম্প্রসারণের দীর্ঘস্থায়ী খারাপ অনুশীলন অব্যাহত রেখেছে এবং ‘ভূমি সমুদ্রকে শাসন করা’ যে আন্তর্জাতিক আইনের নীতির বিপরীতে চলছে।

এটি দেখা যায় যে, ফিলিপাইনের দ্বারা প্রবর্তিত ‘দুষ্ট আইন’, আইনের মূল চেতনা লঙ্ঘন করে, রাজনৈতিক কারসাজির প্রকৃতি এবং অবৈধভাবে সামুদ্রিক অধিকার ও স্বার্থ সম্প্রসারণের অভিপ্রায়কে তুলে ধরে। নানশা দ্বীপপুঞ্জ ও হুয়াংইয়ান দ্বীপসহ জংশান দ্বীপপুঞ্জ এবং তাদের সংলগ্ন জলের উপর চীনের সার্বভৌম অধিকার ও এখতিয়ার রয়েছে। এগুলোর যথেষ্ট ঐতিহাসিক ও আইনগত ভিত্তি রয়েছে। ফিলিপাইনের আঞ্চলিক পরিধি ১৮৯৮ সালের ‘স্প্যানিশ-আমেরিকান শান্তি চুক্তি (প্যারিস চুক্তি)’ এবং ১৯০০ সালের ‘স্প্যানিশ-আমেরিকান ট্রিটি অন দ্য সেশন অফ দ্য আউটলাইং আইল্যান্ডস অফ দ্য ফিলিপাইনে’র (ওয়াশিংটন চুক্তি) মতো ধারাবাহিক আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। এসব চুক্তিতে হুয়াংইয়ান এবং নানশা দ্বীপপুঞ্জ ফিলিপাইনের ভূখণ্ডের বাইরে।

জাতিসংঘের কনভেনশনের একটি সদস্য দেশ হিসাবে, ফিলিপাইন এই কনভেনশনটিকে সামুদ্রিক এবং আঞ্চলিক সম্প্রসারণের একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এবং অন্যান্য দেশের অধিকারকে গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করে। এটি দক্ষিণ চীন সাগরের পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক সম্পর্কের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে বাধ্য।

Close
Messenger Pinterest LinkedIn