বাংলা

চীনা কৃষি প্রকল্পের সাহায্যে গণতান্ত্রিক কঙ্গোর গ্রামবাসীদের জীবনে সুখ আর সমৃদ্ধির ছোঁয়া

CMG2024-09-30 14:35:53

“আমি সত্যই খুব খুশী। চলতি বছরের ফসল গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। এখন ক্ষুধার জন্য আর চিন্তা করতে হবে না।” গণতান্ত্রিক কঙ্গোর দক্ষিণাঞ্চলীয় লুয়ালাবা প্রদেশের কোলওয়েজি শহরের একটি গ্রামের অধিবাসী নাটালির হাতে ভুট্টা ধরা, আর ফসলের আনন্দে ভরা তার মুখ।

ভুট্টা স্থানীয় মানুষের প্রধান খাবারগুলোর অন্যতম। অনেক গ্রামবাসী জীবিকার জন্য ভুট্টা চাষ করেন। কিন্তু কৃষি জ্ঞানের অভাবে এবং পুরানো চাষ পদ্ধতির কারণে ফসলের উত্পাদনের পরিমাণ খুব কম এবং জীবনযাপনের চাহিদা মেটানো যায় না। নাটালি জানান, তাঁর পরিবারে ৮টি বাচ্চা আছে। আগে পরিবারটি প্রধানত কাসাভা চাষ করত, কিন্তু এর উত্পাদনের পরিমাণ বেশি নয় এবং সহজে পঁচে যায়। মাঝেমাঝেই তার পরিবারকে ক্ষুধার্থ থাকতে হতো।

২০২২ সাল থেকে সিআরইসি ও পাওয়ার চায়না’র মতো চীনা প্রতিষ্ঠান এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গোর মাইনিং কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত সিকোমাইনস সার্ল স্থানীয় গ্রামবাসীদের ভুট্টা চাষে সহায়তা দেওয়া সামাজিক দায়িত্ব পালন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করে, স্থানীয় গ্রামের জন্য বীজ, ট্র্যাক্টর ও বীজ বপন মেশিনের মতো কৃষি উত্পাদন উপকরণ এবং যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিন বছরের মধ্যে ৫টি স্থানীয় গ্রামকে ৫শ’র বেশি হেক্টর ভুট্টা চাষ সম্পন্ন করবে। সিকোমাইনস সার্ল ইতিবাচকভাবে উচ্চ-কার্যকর ভূমিকর্ষণ প্রযুক্তি তুলে ধরে, কৃষি প্রযুক্তিবিদদের নিয়মিতভাবে গ্রামবাসীদের জন্য কৃষি ও কৃষি যন্ত্র ব্যবহার জ্ঞান ব্যাখ্যা করতে আমন্ত্রণ জানায়। বিশেষজ্ঞরা মাঝেমাঝে জমিতে গিয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেন।

এতে গ্রামবাসী কাজাদি’র ভুট্টার ফলন খুবই ভাল হয়। তিনি বলেন, “চলতি বছর আমার পরিবারে ভুট্টার উত্পাদনের পরিমাণ গত বছরের দ্বিগুণ হয়েছে। এটি চীনা বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণের কারণেই হয়েছে।” তিনি নিজের বাসার সামনে প্লাস্টিকের সিট দিয়ে একটি শস্যভাণ্ডার বানিয়েছেন।

তিনি জানান, এখন তিনি গ্রামে ভুট্টা চাষের বড় পরিবার। নিজের পরিবারের সদস্যদের খাওয়ার সমস্যা সমাধান ছাড়াও তিনি বাড়তি উৎপাদনের আয়ে গ্রামে একটি বাগান এবং শহরে একটি ভবন নির্মাণ করেছেন।

অন্য একটি গ্রামের ট্রাক্টর চালক সামলো নিজের ট্রাক্টর চালিয়ে সারা গ্রামের জমি চাষ করার জন্য গৌরব বোধ করেন। আগে এক হেক্টর জমি চাষ করতে, পুরো পরিবারের মাসখানেক সময় লাগতো। এখন ট্রাক্টর দিয়ে দুই বা তিন ঘন্টায় সহজে তা করা যায়।

একটি গ্রামসের প্রধান বনিফেস চীনা প্রতিষ্ঠানের চালু করা ‘ভুট্টা চাষ সহায়তা’ এই মূল্যবান উপহারের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটি আমাদের বৈজ্ঞানিক জমি চাষের পদ্ধতি আয়ত্ত করে ভুট্টার উত্পাদন ও ফসল বৃদ্ধি বাস্তবায়ন করতে সাহায্য দিয়েছে। গ্রামবাসীকে ক্ষুধা থেকে মুক্ত করে, ‘পর্যাপ্ত খাবার’ খাওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছে।

ভবিষ্যৎ নিয়ে গ্রামের প্রধান মুসাঙ্গু’র আস্থবান। তিনি আশা করেন, এক দিন সারা গ্রাম ৫শ’ হেক্টর এমনকি হাজার হেক্টরের ভুট্টা চাষ করতে পারবে এবং ক্ষুধা থেকে মুক্ত হবে, সবাই যথেষ্ট খাবার খেতে পারবেন।

Close
Messenger Pinterest LinkedIn