‘বিজনেস টাইম’পর্ব- ৩৩
বিজনেস টাইম’ য়ের এই পর্বে থাকছে:
Ø চীন বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৯ বছর নিয়ে থাকছে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের সাক্ষাৎকার
আজ ৪ অক্টোবর। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪৯ বছর পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে। দীর্ঘ এই কূটনৈতিক সম্পর্কে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী চীন। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে চায়না আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ জানিয়েছেন
বাংলাদেশে জনমতের উপর দুইবার জরিপে দেখা গেছে, এদেশের জনগণের একটা বড় অংশ চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক খাতে চীনের বিনিয়োগের বড় সুযোগ ও সম্ভাবনার সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন।
Ø চীনের হ্যনানে সেন্সর প্রযুক্তি শিল্প বদলে দিয়েছে একটি শহরের অর্থনীতির চিত্র
হ্যনানের প্রাদেশিক রাজধানী চেংচৌ। হাই-টেক পণ্য তৈরির সুবাদে ক্রমশ উচ্চমানের অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত হয়েছে শহরটি। আর প্রযুক্তিপণ্যের প্রাণকেন্দ্রে থাকে যে সেন্সর, সেই সেন্সর তৈরিতেই শহরটি দেখিয়েছে অনবদ্য কৃতিত্ব। গত তিন বছরে চেংচৌতে সেন্সর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজারে।
সম্প্রতি চেংচৌয়ের একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন সেন্সর গবেষণাগার দেখতে গিয়েছিলেন চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন সিসিটিভির এক সংবাদকর্মী। সেখানে তিনি দেখেন আধুনিক সেন্সরের সমন্বয়ে তৈরি বিশেষ বৈদ্যুতিক ত্বক। পাতলা ফিল্মের তৈরি হাতমোজার মতো বস্তুটি হাতের সামান্যতম স্পর্শও শনাক্ত করতে পারে এবং চাপের সূক্ষ্ম পার্থক্যও পরিমাপ করতে পারে।
বৈদ্যুতিক ত্বকটির প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে প্রায় ১০০টি সেন্সিং পয়েন্ট রয়েছে। এগুলোর সাড়া দিতে সময় লাগে মাত্র ১ মিলিসেকেন্ড। রিয়েল টাইমে এ সময়ের পার্থক্য ধরা পড়ে না।
এক দশকেরও বেশি আগে, চীনে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সেন্সরগুলো আকারে বড় ছিল। অতটা নিখুঁত কাজ করতো না এগুলো। বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিতে অগ্রগতির কারণে চেংচৌয়ের কোম্পানিগুলো ছোট আকারের সেন্সর তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে। এখন একটি চালের দানার সমান সেন্সরের ভেতরই দুই ধরনের ফাংশন একীভূত করা যাচ্ছে।
চেংচৌর তৈরি সেন্সরের ব্যবহার ইতোমধ্যে দৈনন্দিন বস্তুসামগ্রীর সীমারেখা ছাড়িয়ে উৎপাদন শিল্প, যন্ত্রপাতি, উড়োজাহাজ, মহাকাশ গবেষণা, গাড়ি, ওষুধ এবং রোবোটিক্সেও পৌঁছেছে।
চেংচৌয়ের কাউন্টি-স্তরের শহর তেংফেংয়ে আছে হুইছুইশান উইন্ড ফার্ম। উন্নত সেন্সরের কারণে প্রতিটি বায়ুকল ঘণ্টায় প্রায় ২ হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে।
চেংচৌ চোংখ্য ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট অ্যান্ড সিস্টেমের, সহকারী পরিচালক ফাং সিন বলেন,
‘এটি হলো লেজার উইন্ড ডিটেকশন রাডার। আমরা এটি তৈরি করেছি। এর সেন্সর প্রচলিত বায়ু পরিমাপকের চেয়ে বেশি সময়োপযোগী ও দক্ষ। এটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের দক্ষতা ৩ থেকে ৫ শতাংশে উন্নীত করতে পারে। এতে প্রতিটি উইন্ড টারবাইন ১০ লাখ ইউয়ান সাশ্রয় করবে। এখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথ উন্নয়ন পরিচালনা করছি, যাতে এমন আরও সেন্সর তৈরি করে চাহিদা পূরণ করা যায়।’
হ্যনানের বুদ্ধিমান সেন্সর শিল্পে মূল চারটি বিষয়ের ওপর ফোকাস করা হয়েছে। এতে আছে গবেষণা ও উন্নয়ন, প্রক্রিয়াকরণ ও উৎপাদন, প্যাকেজিং পরীক্ষা, উপাদান এবং সরঞ্জাম। আবার গ্যাস সেন্সরের বাজারটাও এখানে ভালো। আর তাই মাইক্রো ন্যানো ফটোইলেক্ট্রন প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠায় ২০০ কোটি ইউয়ানেরও বেশি বিনিয়োগ পেয়েছে চেংচৌয়ের মোচি ল্যাবরেটরির।
২০১৯ সালে প্রোগ্রাম ফর চায়না ইন্টেলিজেন্ট সেন্সর ভ্যালি আত্মপ্রকাশ করে, যার লক্ষ্য ছিল শহরের সেন্সর শিল্পের আরও বিকাশ ঘটানো। প্রকল্পটির নির্মাণকাজ ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলছে।
প্রতিবেদন: ফয়সল আব্দুল্লাহ
সম্পাদনা: শাহানশাহ রাসেল
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: শাহানশাহ রাসেল
অডিও সম্পাদনা: নাজমুল হক রাইয়ান
সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী