‘বিজনেস টাইম’পর্ব- ২৮
চীন ও চীনের বাইরের দুনিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি-উন্নয়নের হালচাল নিয়ে নিয়মিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘বিজনেস টাইম’।
বিজনেস টাইম’ য়ের এই পর্বে থাকছে:
§ থাকছে বার্ষিক উদ্যোক্তা সম্মেলনের খবর
§ গ্রাম ও পুরান শহরকে উন্নত মানে উন্নয়ন ও আবাসনে চীনের সফল্য
কাজের অগ্রগতি নিয়ে বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অয়োজন করে চীনের আবাসন ও শহর-গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রণালয় । চীনের আবাসন ও শহর-গ্রাম উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী নি হং বলেন,
”২০২৩ সালের শেষ নাগাদ ৬৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে শহরাঞ্চলে নির্মিত হয়েছে আবাসন যা জনপ্রতি গৃহনির্মাণ ৪০ বর্গ মিটার অতিক্রম করেছে। এতে চীনের ১৫ কোটিরও বেশি মানুষের উপকার হয়েছে বলে জানিয়েছেন নি হং।
তিনি আরও বলেন, ’প্রথম সাত মাসে সরকারি ভর্তুকিতে সাড়ে তেইশ লাখ ইউনিটের নতুন আবাসন নির্মিত হয়েছে সেই সঙ্গে ৪৪০ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগে গ্রামের পুরাতন বাড়িগুলোকে সংস্কার করা হয়েছে।
গত বছরের শেষ নাগাদ ৬৪ হাজার বর্গকিলেমিটার এলাকা জুড়ে গৃহায়নের ফলে শহরায়ণের স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছে ৯৩ কোটি মানুষ, যা শতকরা ৬৬ দশমিক এক ছয় ভাগ।’
শহরের কার্যক্রম ক্রমাগত উন্নত হচ্ছে পাশাপাশি জীবনযাপনের মানও উন্নত হচ্ছে। আড়াই লাখ নতুন আবাসন প্রকল্পে মধ্য দিয়ে পুরান শহর সংস্কারের ফলে ৪ কোটি ৪০ লাখ পরিবার সুবিধা পাচ্ছে উপকার হচ্ছে ১১ কোটি জনগণের এমনটাই বলেন মন্ত্রী লি।
সংবাদ সম্মলনের অন্য কর্মকতারা বলেন, আবাসন ও শহর-গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রনালয় মানুষের জন্য আবাসন নির্মাণ ও সরবরাহের এই প্রণোদনা চালিয়ে যাবে। স্থানীয় প্রশাসন যেন উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্হা ও জনগণের সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এলাকায় আরও গৃহায়ন প্রস্তুত কাজ অব্যাহত রাখে সেই দিক নির্দেশনাও দেন তারা।
চীনে এরকম ৫০ হাজারেরও বেশি পুরান শহর গুলোর আবাসন ও উন্নয়নের জন্য কাজ করবে প্রশাসন। ’গুড হোমস’ বা ভালো বাড়ি তৈরি এই গতি হবে ত্বরান্বিত, যা হবে সবুজ, যা কার্বন নিঃসরণ কমাবে, হবে আধুনিক এবং নিরাপদ। মানুষের জীবনমান হবে সুন্দর।
।। প্রতিবেদন: শাহানশাহ রাসেল
।। সম্পাদনা: ফয়সল আব্দুল্লাহ
§ ভিডিও গেমের দুনিয়া কাঁপাচ্ছে চীনা গেইম সায়েন্সের ব্ল্যাক মিথ উখং গেমটি
ব্ল্যাক মিথ উখং। বহুল প্রত্যাশিত এই গেমটি বাজারে আসার দিন থেকেই বদলে দিয়েছে চীনের গেমিং শিল্পের মানচিত্র। রিলিজ পাওয়ার দিন সকালেই গেমিং প্লাটফার্ম স্টিমে খেলাটি একযোগে খেলতে শুরু করে সাড়ে ১০ লাখ গেইমার। তিন দিন না পেরোতেই বিশ্বজুড়ে গেইমটি বিক্রি হয় এক কোটিরও বেশি কপি। সেদিনই স্টিম প্লাটফর্মের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনপ্রিয় গেমের জায়গা দখল করে ব্ল্যাক মিথ উখং।
ষোড়শ শতকে লেখা চীনের উপন্যাস ‘পশ্চিমের পথে যাত্রা’ ও সেই গল্পের প্রধান চরিত্র বানর রাজার কাহিনি থেকেই তৈরি হয়েছে এই ভিডিও গেইম। প্রতিটি মিশনেই মিলবে প্রাচীন চীনের আবহ, এবং সেই সময়কার চীনা নির্মাণশৈলী। গেইমের প্রতিটি পর্বে বানর রাজাকে মোকাবেলা করতে হবে
চীনের পৌরাণিক সব দৈত্য-দানোর সঙ্গে, খুঁজে বেড়াতে হবে প্রাচীন চীনের বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী।
‘এ গেমে আমার কাছে সত্যিই দুর্দান্ত লেগেছে তা হলো এর দৈত্যগুলোর নকশা। বিশেষ করে রক্তের পুকুরে থাকা বাঘটি আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। আমি এর মধ্যে চীনা সংস্কৃতির একটি আভাস পেয়েছি এবং এটি সত্যিই আমাকে বেশ টেনেছে।’ একজন গেমারের অভিজ্ঞতা এভাবেই বর্ণনা করলেন।
এটি এরইমধ্যে ট্রিপল এ রেটিং পেয়েছে।
চীনের অনেক ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক উপাদানের দেখা মিলবে ব্ল্যাক মিথ উখং গেমটিতে, যেগুলো দেশ-বিদেশের গেমারদের মধ্যে প্রাচীন চীনা স্থাপত্য ও সংস্কৃতির প্রতি দারুণ আকর্ষণ তৈরি করেছে।
গেমটিতে চীনজুড়ে থাকা ৩৬টি আইকনিক ল্যান্ডমার্ক দেখানো হয়েছে, যার মধ্যে ২৭টির দেখা মিলবে উত্তর চীনের শানসি প্রদেশে। সরাসরি ছবি তুলে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ত্রিমাত্রিমক স্ক্যান করে এ স্থানগুলোর ডিজিটাল নকশা তৈরি করা হয়েছে গেমটিতে।
গেইমটি শুধু যে চীনের আইটি শিল্পের প্রসার ঘটাচ্ছে তা নয়, ব্ল্যাক মিথ উখংয়ে দেখানো স্থাপনাগুলোয় বেড়েছে পর্যটকদের আনাগোনা।
চাঞ্চল্যকর এ গেমটি বিশ্বব্যাপী গেমারদের আকর্ষণীয় এক চীনা পৌরাণিক জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। চীনা অপেরার ছন্দে ছন্দে এ খেলাটিতে দেখানো হয়েছে চীনের মহিমান্বিত পর্বত, নদী এবং কালোত্তীর্ণ সব উপসনালয়। গেমাররাও শুধু ডিজিটাল পর্দায় নিজেদের আটকে না থেকে সরাসরি এসব ঐতিহ্য দেখতে ছুটে চলেছেন নানা পর্যটন স্পটে।
।। প্রতিবেদন: ফয়সল আব্দুল্লাহ
।। সম্পাদনা: শাহানশাহ রাসেল
§ বার্ষিক উদ্যোক্তা সম্মেলনের খবর
বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কোন উদ্যোগ বা আইডিয়া এবং উদ্যোক্তা। থাকছে এনিয়ে কিছু তথ্য:
২০২৪ সালের সান আইল্যান্ড বার্ষিক উদ্যোক্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে হারবিনে। চীনের উত্তর-পূর্ব হেইলংচিয়াং প্রদেশের রাজধানী হারবিনে তিন দিন ব্যাপি চলে এই সম্মেলন।
এক হাজারেরও বেশি উদ্যোক্তার অংশগ্রহণে উদ্ভাবন ও বিকাশের পথ অনুসন্ধান এবং উন্নত মানের উৎপাদনশীল ক্ষমতার বিকাশ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় সম্মেলনে।
এদিকে হয়ে গেল আরেকটি সম্মেলন , হাইকুল বৈশ্বিক উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২৪। এটি বিশ্বজুড়ে স্টার্টআপ বা নতুন উদ্যোক্তাদের ধারণা বিনিময় এবং সুযোগ সন্ধানের একটি প্ল্যাটফর্ম।
এই ইভেন্টে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যেখানে স্টার্টআপ দলগুলো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংস্থাগুলোর কাছ থেকে তহবিল পাওয়ার আশায় তাদের যার যার ধারণা ও পণ্য উপস্থাপন করে।
২০২০ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রতিযোগিতায় ১৪৫টি দেশ ও অঞ্চলের উদ্যোক্তারা অংশ নেয়। এ পর্যন্ত এখানে উপস্থাপিত ২৪ হাজারের বেশি প্রকল্প বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করেছে।
আয়োজকরা জানান, বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা গতবছরের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে ৩ হাজার ২শ’ ছাড়িয়ে গেছে।
তিন দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান, উদ্ভাবনী অনুশীলন, ফোরাম, গোলটেবিল প্রদর্শনী, উদ্যোক্তাদের শীর্ষ-স্তরের জোটের উদ্বোধনসহ আরও কিছু থিমেটিক ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: শাহানশাহ রাসেল
অডিও সম্পাদনা: নাজমুল হক রাইয়ান
সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী