‘বিজনেস টাইম’পর্ব- ২৫
চীন ও চীনের বাইরের দুনিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি-উন্নয়নের হালচাল নিয়ে নিয়মিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘বিজনেস টাইম’।
বিজনেস টাইম’ য়ের এই পর্বে থাকছে:
বাংলাদেশের নতুন সরকার এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভবিষ্যত
বাংলাদেশ সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের কাছে নত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে এখন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার। অভ্যন্তরীণ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনে দেশকে গতিশীল রাখা এখন চ্যালেঞ্জ। নতুন সরকার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশি দেশগুলোর সাথে কৌশলগত সম্পর্ক কেমন থাকবে বা হওয়া উচিৎ তা জানতে চাইলে বাংলাদেশের বিশিষ্ট কোম্পানি আইন ও অর্থনীতি বিশ্লেষক ব্যারিস্টার এ.এম মাসুম চায়না আর্ন্তজাতিক বেতারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বোঝা যাচ্ছে এখন যে সরকার আসছে তারা আগের মতো একতরফা ভারতমুখী হবেনা।
অবশ্যয়ই চীন এবং পশ্চিমের দেশগুলোর অগ্রাধিকার পাবে এবং বাংলাদেশের সাথে তাদের সম্পর্ক আরো মজবুত হবে, সেই সাথে বিনিয়োগও বেশি আসবে। তিনি মনে করছেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অনেক বড় সুযোগ লক্ষ করা যাচ্ছে।
বাণিজ্যিক মহাকাশ শিল্পের বিকাশে ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ বাড়ছে
মহাকাশ গবেষণায় দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে চীন। সম্প্রতি চাঁদের দূরবর্তী প্রান্তে মহাকাশযান ছাং-এ সিক্সের সফল অভিযানের পর মহাকাশ গবেষণায় নতুন দুয়ার খুলতে কোমর বেঁধে নেমেছে চীন সরকার।
সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপ সিএমজ ‘র একটি টিভি শোতে এ খাতের কিছু নেতৃত্বস্থানীয় বেসরকারি বাণিজ্যিক মহাকাশ কোম্পানির প্রতিনিধি এবং শিল্প বিশেষজ্ঞরা করেছেন আলোচনা। তারা কথা বলেছেন চীনের বেসরকারি বাণিজ্যিক মহাকাশ খাতের উন্নয়নের অবস্থা ও সম্ভাবনা নিয়ে।
গত কয়েক দশকে চীনের মহাকাশ অভিযানগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন ‘টু বম্বস, ওয়ান স্যাটেলাইট’ শীর্ষক হিস্ট্রি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র গবেষণা ফেলো চাং ইউমিন।
টু বম্বস ওয়ান স্যাটেলাইট হিস্ট্রি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো চাং ইউমিন বলেন,
‘আমি মনে করি বেসরকারি বাণিজ্যিক মহাকাশ গবেষণা ইতোমধ্যে প্রভাব রাখার মতো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ১৯৭০ সালে প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে ২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত, ৫৪ বছরে চীন থেকে মোট ৫৭৪টি মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কম উৎক্ষেপণ করা হলেও পরে তা বাড়তে থাকে। শুধু গত বছরেই আমরা ৬৭টি উৎক্ষেপণের মাধ্যমে ২২১টি মহাকাশযান কক্ষপথে পাঠিয়েছি, যা একটি রেকর্ড।’
এর মধ্যে বেসরকারি মহাকাশ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
টু বম্বস ওয়ান স্যাটেলাইট হিস্ট্রি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো চাং ইউমিন জানান,
‘গতবছরের ৬৭টি অভিযানে বেসরকারি মহাকাশ কোম্পানি ছিল ২৬টি। ওই ২৬টির মধ্যে ১৩টি উৎক্ষেপণ হয়েছিল পুরোপুরি বেসরকারি রকেট কোম্পানির মাধ্যমে। এটা প্রশংসা করার মতো একটি অর্জন।’
চীনে, সেন্ট্রাল ইকোনমিক ওয়ার্ক কনফারেন্স গত বছর বাণিজ্যিক মহাকাশ শিল্পের মতো কৌশলগত শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং এই বছরের সরকারি কর্মপ্রতিবেদনেও বাণিজ্যিক মহাকাশ শিল্পকে একটি নতুন প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গ্যালাকটিক এনার্জি বেইজিং স্পেস টেকনোলজি কোং লিমিটেডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সিয়া তোংখুন বলেছেন, এ খাতের অগ্রগতির জন্য তিনি এবং এই শিল্পের আরও অনেকেই শক্তিশালী নীতি সমর্থনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন।
গ্যালাকটিক এনার্জি বেইজিং স্পেস টেকনোলজির সহ-প্রতিষ্ঠাতা সিয়া তোংখুন বলেন,
‘আমরা স্পষ্টই অনুভব করতে পারি যে, চীন সরকার এ খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে সম্প্রতি আমরা এই শিল্পে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন দেখেছি। কিছু জাতীয় নীতি ও নথির প্রবর্তন হয়েছে এবং নতুন মানের উৎপাদনশীল উন্নয়নের উদ্যোগগুলো এ শিল্পে নতুন অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছে।’
বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা খাতে এখন বাড়ছে ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ। এ খাতে বিনিয়োগ থেকে ফল পাওয়াটা দীর্ঘমেয়াদি, আবার কঠিন সব প্রযুক্তির ব্যবহার আছে এতে। তা সত্ত্বেও চীনের মহাকাশ গবেষণায় এখন বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক অনেক আর্থিক সংস্থা। এমনকি অন্যান্য শিল্পের তুলনায় চীনের বেসরকারি মহাকাশ খাতে বিনিয়োগ, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বেশ কিছুটা বেড়েছেও।
।। প্রতিবেদন: ফয়সল আব্দুল্লাহ
।। সম্পাদনা: শাহানশাহ রাসেল
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: শাহানশাহ রাসেল
অডিও সম্পাদনা: নাজমুল হক রাইয়ান
সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী