বাংলাদেশে পাইকারি পর্যায়ে বাড়ল বিদ্যুতের দাম
আফরিন মিম, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: দ্রব্যমূল্যের ক্রমশ ঊর্ধ্বগতির মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট ৫ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ২০ পয়সা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
এর মধ্য দিয়ে পাইকারি পর্যায়ে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বা ১ টাকা ৩ পয়সা বাড়াল সরকার।আগামী বিল মাস ডিসেম্বর থেকেই নতুন এই মূল্য কার্যকর হবে বলেও জানিয়েছে কমিশন।
সোমবার দুপুর ১২টায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেন বিইআরসির চেয়ারম্যান আবদুল জলিল।
গত ১৩ অক্টোবর বিদ্যুতের দাম অপরিবর্তিত রেখে সিদ্ধান্ত দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। তারও আগে ১৮ মে কোম্পানিগুলোর পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের প্রস্তাবিত দামের ওপর গণশুনানি করে বিইআরসি।
বিইআরসি আইন অনুযায়ী, গণশুনানির পর ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে আদেশ দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে অনুযায়ী ওইদিন ফল ঘোষণা করা হয়।
সর্বশেষ ২০২০ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি আরেক দফা বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম। পাইকারি, খুচরা ও সঞ্চালন- এই তিন পর্যায়ে তখন বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে (খুচরা) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা করা হয়। যা আগে ছিল প্রতি ইউনিট ৬ টাকা ৭৭ পয়সা।
পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট গড়ে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ টাকা ১৭ পয়সা করা হয়। যা আগে ছিল প্রতি ইউনিট ৪ টাকা ৭৭ পয়সা। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন মূল্যহার বা হুইলিং চার্জ প্রতি ইউনিটে ০ দশমিক ২৭৮৭ টাকা থেকে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ০ দশমিক ২৯৩৪ টাকা করা হয়ে। ওই বছরের ১ মার্চ থেকে কার্যকর করে বিইআরসি।
যা বলছে বিইআরসি
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)জানিয়েছে, এই দাম পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভর্তুকি ধরা হয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ দাম বাড়ানোর পরও বিদ্যুতের উৎপাদন পর্যায়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেবে সরকার।
আব্দুল জলিল, চেয়ারম্যান , বিইআরসি
বিই আরসির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জানায়, “ আবেদন করার পরে গণ শুনানিতে যাবে বিতরণ কোম্পানী । এটার শুনানি ছাড়া বিতরণ পর্যায়ে কিংবা ভোক্তা পর্যায়ে হার নির্ধারণ করা যাবে না। আমরা পরবর্তী আদেশ না পাওয়া পর্্যন্ত ভোক্তা পর্যায়ে দাম অপরিবর্তিত থাকবে”।
যা বললেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জেনারেশন পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত এখনও নেয়া হয়নি।
নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
সোমবার পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানোর বিষয়ে নসরুল হামিদ বলেন, পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রভাব গ্রাহক পর্যায়ে কতটা পড়বে তা যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সিদ্ধান্ত নেবে।
সম্পাদনা- সাজিদ রাজু