দেহঘড়ি পর্ব-৫৭
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে স্বাস্থ্যখাতের একটি প্রতিবেদন, স্বাস্থ্য বুলেটিন, সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’, খাদ্যের গুণাগুণ নিয়ে আলোচনা ‘কী খাবো, কী খাবো না’, এবং ‘মৌসুমি হেলথ টিপস’।
#প্রতিবেদন
বাংলাদেশে স্পোর্টস মেডিসিন ক্লিনিক নির্মাণের পরিকল্পনা
ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট ইনজুরিসহ নানা সমস্যা সংক্রান্ত চিকিৎসা সেবায় স্পোর্টস মেডিসিন ক্লিনিক তৈরির পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব স্পোর্টস মেডিসিন –বিএএসএম।
প্রতিষ্ঠানটির কোষাধ্যক্ষ ও বিশিষ্ট বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ক্রীড়াঙ্গন ও ক্রীড়াবিদ সংশ্লিষ্ট যারা আছে, তারা ফিজিওথেরাপি ছাড়া আর কোনো চিকিৎসা সেবা পান না। তাদের যথাযথ চিকিৎসায় একটি স্পোর্টস মেডিসিন ক্লিনিক করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ডা. আতিকুর রহমান বলেন, স্পোর্টস মেডিসিনের পরিসরটা বেশ বিস্তৃত। এটা কোনো ইনজুরি সংক্রান্ত ব্যাপার নয়। একজন খেলোয়াড়ের নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। স্পোর্টস মেডিসিনের মূল কাজ হলো ইনজুরি, ফিটনেস, পুষ্টি, ডোপিং ইত্যাদি নিয়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্পোর্টস মেডিসিন মূলত মেডিসিনের এমন একটি শাখা যেটি শরীরচর্চা এবং খেলাধুলা যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে শারীরিক নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। স্পোর্টস মেডিসিনের মাধ্যমে অস্টিওআর্থ্রাইটিস, পিঠ ব্যথা, হাড়ের সংযোগস্থলের ব্যথা, পেশীর সমস্যা, মানসিক নানা সমস্যা দূর করা সম্ভব। ডায়াবেটিস, স্থুলতা এবং উচ্চমাত্রার কোলেস্টোরল ঠিক রাখতেও এই মেডিসিন ব্যবহার করা হয়। - অভি/রহমান
#বুলেটিন
কেন্দ্রে গেলেই টিকা, লাগবে না এসএমএস
করোনাভাইরাসের টিকা পেতে নিবন্ধন করেও যারা এসএমএস পাচ্ছেন না, তাদের জন্য সুখবর জানালো স্বাস্থ্য অধিদফতর। এখন থেকে কেন্দ্রে গেলেই টিকা দেওয়া হবে, কোনো এসএমএসের প্রয়োজন হবে না। বুধবার দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক। নিবন্ধন করেও টিকার জন্য এসএমএস না পেলে অপেক্ষা না করে সরাসরি টিকা কেন্দ্রে চলে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি কেন্দ্রকেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সবাইকে যেন এসএমএস দিয়ে দেওয়া হয়।
একদিনে দেওয়া হবে এক কোটি টিকা: প্রথম ডোজ শেষ হচ্ছে ২৬ ফেব্রুয়ারি
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী ১ কোটি ডোজ টিকা প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম। সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তিনি। পাশাপাশি দেশে চলমান টিকা কর্মসূচিতে প্রথম ডোজ টিকা প্রয়োগ কার্যক্রম আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে বলে জানান তিনি। এরপর দ্বিতীয় ডোজ ও বুস্টার ডোজ প্রয়োগ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে বলেও জানান তিনি। এক সমীক্ষার বরাত দিয়ে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং তাদের মধ্যে যারা মারা গিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই টিকা নেননি। আর যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার কম বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের ৭০ শতাংশই সুস্থ হয়
দেশে মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতিবছর বাংলাদেশে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে ২০ হাজার আক্রান্তই শিশু। আর আক্রান্ত এসব শিশুদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয় বলে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। সম্প্রতি বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব তথ্য জানান। - তানজিদ/রহমান
## আপনার ডাক্তার
দেহঘড়ির আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করেছি ব্রঙ্কিউলাইটিস নিয়ে। ব্রঙ্কিউলাইটিস একটি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি মূলত শিশুদের রোগ। বাংলাদেশে ব্রঙ্কিউলাইটিস অনেকটা আকস্মিক বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কয়েক বছর পরপর ব্রঙ্কিউলাইটিস রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব ঘটে। ২০০০ ও ২০০১ সালে প্রাদুর্ভাব ঘটায় বাংলাদেশে ব্রঙ্কিউলাইটিস রোগটি সম্পর্কে প্রথম সচেতনতা তৈরি হয়। এর আগে শিশুদের সব শ্বাসকষ্টকে নিউমোনিয়া বলেই ভুল করা হতো। এক বছরের কম, বিশেষ করে দুই থেকে ছয় মাস বয়সের শিশুরাই প্রধানত ব্রঙ্কিউলাইটিস আক্রান্ত হয়। যেসব শিশু বুকের দুধ খেতে পারেনি, যারা স্বল্প ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে, যাদের ধূমপানকারী পরিবারের জন্ম হয়েছে এবং যারা জন্মগত হৃদ্রোগে আক্রান্ত তারা ব্রঙ্কিউলাইটিসে আক্রান্ত হলে অসুখটি দীর্ঘস্থায়ী হয়। সামান্য জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, অস্থিরতা, খেতে না পারা, অবিরাম কান্না, গলা বসে যাওয়া, হাসি থেমে যাওয়া, ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া, শ্বাসকষ্ট হওয়া ইত্যাদি ব্রঙ্কিউলাইটিসের উপসর্গ। এ রোগের নানা দিক নিয়ে কথা বলতে আমাদের সাথে যুক্ত হন ডাক্তার এআরএম লুৎফুল কবীর । তিনি কাজ করছেন আদ-দ্বীন ওমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক হিসাবে।
#কী_খাবো_কী_খাবো_না
শালগমের এত উপকারিতা!
শীতের অন্যতম সবজি শালগম। শুধু স্বাদেই ভালো নয়, এটি অনেক পুষ্টিকরও। বিশেষজ্ঞদের মতে, শালগমের মধ্যে রয়েছে অসুখ-বিসুখ তাড়ানোর নানামুখী পুষ্টিকর উপাদান। চলুন জেনে নেওয়া যাক শালগম খাওয়ার উপকারিতা।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়
চোখের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। ছোট ছোট ছেলেমেয়ের চোখে দেখা যায় ভারী পাওয়ারের চশমা। সবজিসহ পুষ্টিকর খাবার না খাওয়ার ফল এটি। তাই নিয়মিত সবজি খেতে হবে। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে কাজ করবে শালগম। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন থাকে প্রচুর। যে কারণে শালগম খেলে ছানি পড়া, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এইসব চোখের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
ওজন ঠিক রাখে
যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাদের জন্য কার্যকরী একটি উপায় হলো শালগম খাওয়া। কারণ এতে থাকে পর্যাপ্ত লিপিড, যা মেটাবোলিজম ঘাটতি দূর করে। এর ফলে শরীরে ফ্যাটের মাত্রা কমে, নিয়ন্ত্রণে থাকে ব্লাড সুগার। তাই খেতে পছন্দ করুন আর না করুন, পাতে শালগম রাখা কিন্তু জরুরি!
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে
শীতকালীন সবজি শালগম ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। কারণ এতে থাকে পর্যাপ্ত গ্লুকোসিনোলেটস। এটি হলো এক ধরনের প্রাকৃতিক কেমিক্যাল, যেটি সব রকমের ক্যান্সার রোধ করতে কাজ করে থাকে। তাই ক্যান্সার থেকে দূরে থাকতে চাইলে শীতের এই সবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
উচ্চ রক্তচাপ কমায়
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে শালগম। যাদের এ ধরনের সমস্যা আছে তারা খাবারের তালিকায় শালগম রাখবেন। এতে থাকে ডায়েটারি নাইট্রেট, যা রক্ত কোষগুলোকে ভালো পরিমাণে সবকিছুই সরবরাহ করতে পারে। আর এ কারণেই দূরে থাকে উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যা।
পেটের সমস্যা দূর করে
শালগম খেলে তা পাচনতন্ত্রের নানান সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এতে থাকে পর্যাপ্ত ফাইবার যা হজম ভালো রাখতে কাজ করে। এটি কোলন পরিষ্কার করে ও শরীরে পানির মাত্রা ঠিক রাখতে কাজ করে। ফলে পেটের সমস্যা দূর হয়। - অভি/রহমান
#মৌসুমী_হেলথ_টিপস
শীতের অবসানে ত্বকের যত্ন
শীতকালে মানুষের ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। সে সময় ত্বকের স্বাভাবিকতা ধরে রাখতে নানা উপায় অবলম্বন করতে হয়। শীত যখন চলে যায়, তখন সে আবহাওয়াকে শরীরের জন্য খুব আরামদায়ক মনে হয়। কিন্তু এমন আবহাওয়া ত্বকের জন্য আসলে সুখকর নয়। কারণ মিশ্র আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ত্বকের যথেষ্ট অসুবিধা হয়। তাই শীতের বিদায়বেলায় ত্বকের সতেজতা রক্ষায় কিছু উপায় অবলম্বন করা দরকার। জানিয়ে দিচ্ছি ত্বকের যত্নে শীতের বিদায়বেলায় কী কী করবেন?
অয়েল ম্যাসাজ করুন: গোসলের আগে সারা শরীরে তেল মালিশ করুন। তিলের তেল ত্বকের জন্য খুবই ভাল। তবে পাশাপাশি আমন্ড অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। যে তেল দিয়েই মালিশ করুন না কেন সেটি ঈষৎ উষ্ণ হলে ভাল হয়।
ক্ষারযুক্ত সাবান এড়িয়ে চলুন: যাদের হাতের ত্বক অত্যাধিক রুক্ষ, তাঁরা ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না। চেষ্টা করুন ময়েশ্চারাইজার-যুক্ত সাবান ব্যবহার করতে।
ঘরে বানানো কিছু উপকরণ ব্যবহার করুন: সপ্তাহে অন্তত একদিন মধু, গ্লিসারিন ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে লাগাতে পারেন। এই মাস্ক ত্বকে ক্লিনজারের কাজ করে এবং ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় রাখে। মুখ, হাত ও পাসহ শরীরের যেসব অংশ উন্মুক্ত থাকে সেখানে লাগান এ মাস্ক। আধা ঘন্টার মতো রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। এই সময় মুলতানি মাটি, কাঁচা হলুদ ও জলপাইয়ের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। তিলের তেল, গ্লিসারিন ও গোলাপজল সমপরিমাণে মিশিয়ে তুলোয় লাগিয়েও ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়।
পায়ের বিশেষ যত্ন নিন: এই সময় পায়ের গোড়ালির ত্বক রুক্ষ হয় ও ফেটে যায় এবং মৃত কোষ জমতে শুরু করে। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সামান্য গরম জলে শ্যাম্পু মিশিয়ে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। এরপর স্ক্রাবারের সাহায্যে গোড়ালি ঘষে মৃত কোষ ঝরিয়ে ফেলুন।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খান: পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে। এতে ত্বক শুষ্কতা এড়াতে এবং প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারে। - রহমান
‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।