দেহঘড়ি পর্ব-৪৩-China Radio International
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে স্বাস্থ্যখাতের একটি প্রতিবেদন, স্বাস্থ্য বুলেটিন, সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’, স্বাস্থ্য বিষয়ক ভুল ধারণা নিয়ে আলোচনা ‘ভুলের ভুবনে বাস’ এবং ‘কি খাবো কি খাবো না’ পর্বে রয়েছে পুষ্টিকর ফলের বিস্তারিত আলাপ।
## প্রতিবেদন
বাংলাদেশেই প্রতিষ্ঠিত হবে ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট
হাবিবুর রহমান অভি
ছবি: বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ
করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন রকমের জটিল সব ভাইরাস প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মানের ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে বিষয়টি জনসম্মুখে এনেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ছবি: শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
এ সপ্তাহের সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর টিকা আবিষ্কার ও উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশও চাচ্ছে সে পথে হাঁটতে।“
তিনি আরও বলেন, করোনার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুরো বিশ্বে। সময় এসেছে করোনার মতো মহামারি ভাইরাস মোকাবিলায় এখন থেকেই উদ্যোগ নেয়ার।
টিকা উৎপাদন থেকে শুরু করে জনমানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সব রকম কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন দরকার। এজন্য মানসম্মত গবেষণা ও উৎপাদন বাড়ানোর উপর তাগিদ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
সে লক্ষ্যেই নীতিমালা তৈরি ও ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ সরকার।
অভি/রহমান
## হেলথ বুলেটিন
করোনা ক্যাপসুল ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
করোনা রোগীদের চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার ক্যাপসুল ‘মলনুপিরাভির’ ব্যবহারের জন্য দেশের সব হাসপাতালকে অনুমোদন দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ওষুধ তৈরির অনুমোদন আসার পরই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এই ক্যাপসুল ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "কোডিড পজিটিভ রোগীদের যদি কোভিডের লক্ষণ থাকে, সেক্ষেত্রে এই ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে সেবন করা যাবে।"
চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে গর্ভবতী মা ও গুরুতর করোনা রোগী ছাড়া ১৮ বছরের বেশি বয়সীরা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের করোনা সংক্রমণে মলনুপিরাভির ব্যবহার করতে পারবেন বলেও জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বাংলাদেশে বস্তিবাসীর জন্য বিশেষ টিকাদান শুরু
বাংলাদেশের বস্তিতে বাসকরা নাগরিকদের জন্য বিশেষ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। এ কার্যক্রমের প্রথম দিন মঙ্গলবার রাজধানীর কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের মধ্যে টিকাদান শুরু হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিকাদান কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে জানান, 'রাজধানীর কড়াইলে বস্তিতে বসবাসকারীদের মধ্যে টিকাদান কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। টিকা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দুই দিন টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে।
‘সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেই করোনার টিকা কেনা হয়েছে’
সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেই করোনাভাইরাসের টিকা কেনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, এখন পর্যন্ত ২১ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার ডোজ টিকা কেনা হয়েছে। এর মধ্যে চীন থেকে সবচেয়ে বেশি টিকা কেনা হয়েছে বলে জানান তিনি। মন্ত্রী জানান, চীন থেকে সিনোফার্মের ৭ কোটি ৭০ লাখ ও সিনোভ্যাকের ৭ কোটি ৫১ লাখ ডোজ, ভারত থেকে ৩ কোটি কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সের আওতায় ২ কোটি ৯৭ লাখ ২০ হাজার ডোজ সিনোফার্মার টিকা সংগ্রহ হয়েছে।
চীনের মেইনল্যান্ডে ২.৪ বিলিয়নের বেশি ভ্যাকসিন প্রদান
চীনের মূল ভূখন্ডে ২.৪ বিলিয়নের বেশি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বুধবার প্রকাশিত তথ্যে জানিয়েছে যে মঙ্গলবার পর্যন্ত চীনের মেইনল্যান্ডে ২৪০ কোটিরও বেশি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ বাড়ায় জার্মানিতে ক্রিসমাস মার্কেট বন্ধ ঘোষণা
চলতি মৌসুমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার বাড়ায় ক্রিসমাস মার্কেটের কেনাবেচা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জার্মানির মিউনিখে। মিউনিখের সিটি মেয়র ডিয়েটার রাইটার পাবলিক মার্কেটটি বন্ধের ঘোষণা দিয়ে বলেন, কোভিড মহামারি মাথায় রেখে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সংক্রমণের হার প্রতিনিয়ত বাড়ছে উল্লেখ করে এই অবস্থায় এই বাজারটি চালু রাখা নির্বুদ্ধিতার কাজ হবে বলেও জানান তিনি।
## আপনার ডাক্তার
এবারের আলোচনার বিষয়: থাইরয়েড সমস্যা আদ্যপান্ত
## ভুলের ভুবনে বাস
থাইরয়েড কেবল বয়স্ক মহিলাদের রোগ নয়
থাইরয়েড আমাদের মানবদেহের একটি গ্রন্হির নাম। এটি থাকে গলার স্বরযন্ত্রের দুই পাশে; দেখতে প্রজাপতির ডানার মতো। এ গ্রন্হির কাজ হলো শরীরের কিছু অত্যাবশ্যকীয় হরমোন উৎপাদন করা। যদি কোন কারনে এই গ্রন্হির হরমোন নিঃসরণে কোনও প্রকার ব্যতিক্রম হয় তখন এটি বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে। আজ আমরা আলোচনা করবো থাইরয়েড রোগ নিয়ে প্রচলিত নানা ভুল ধারণা সম্পর্কে।
থাইরয়েডের সমস্যা হলে কি লক্ষণ দেখা দেবেই?
থাইরয়েড রোগরে সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে চরম ক্লান্তি (পুরো রাতের বিশ্রামের পরেও), মস্তিষ্কের কুয়াশা, উদ্বেগ, হৃদস্পন্দন, শুষ্ক ত্বক ও উচ্চ রক্তচাপ। তবে থাইরয়েড রোগ অন্যসব সাধারণ রোগের মতো নয়। আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর লক্ষণগুলো দেখা দেয় না; এগুলো খুব ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। যার ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগী জানতেই পারেন না, যে তিনি এই রোগটি বহন করছেন। আমেরিকার মতো উন্নত দেশেরও অর্ধেকের রোগীর অজানা যে, তার এই রোগ আছে। আবার মহিলাদের থাইরয়েড নির্ণয়ে প্রায়ই ভুল হয়। কারণ নারীদের বিভিন্ন হরমোন-সম্পর্কিত সমস্যার ক্ষেত্রেও একই রকম উপসর্গ থাকতে পারে, যেমন প্রাক-রজঃনিবৃত্তি সমস্যা, পেরিমেনোপজ বা মেনোপজ।
থাইরয়েড সমস্যা কি কেবল বয়স্ক মহিলাদের হয়?
থাইরয়েড রোগ যে কোনও বয়সী পুরুষ ও মহিলাদের হতে পারে। তবে মহিলাদের থাইরয়েড সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ তাদের ইস্ট্রোজেনের মাত্রা পুরুষের তুলনায় বেশি। এখন তরুণীরাও এ রোগে বেশ আক্রান্ত হচ্ছেন। নিউ ইয়র্কের এনওয়াই ল্যাঙ্গন মেডিকেল সেন্টারের এন্ডেক্রাইন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ডরোথি ফিঙ্ক তার অভিজ্ঞতা থেকে বলছিলেন, থাইরয়েডে আক্রান্ত অনেক কিশোরী রোগী আছেন তার।
অতিরিক্ত আয়োডিন গ্রহণ কি থাইরয়েড সমস্যা সমাধানে সহায়ক?
থাইরয়েড সঠিকভাবে কাজ করার জন্য আয়োডিন প্রয়োজন। তবে বাংলাদেশে মানুষের যথেষ্ট পরিমাণ আয়োডিন পেতে কোনও সমস্যা হয় না। ডাক্তার ফিঙ্ক মনে করেন, সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা কিংবা সামুদ্রিক শৈবাল খাওয়া আসলে থাইরয়েডের ক্ষেত্রে উপকারের ক্ষতি করতে পারে চেয়ে বেশি। অতিরিক্ত আয়োডিন গ্রহণ থাইরয়েডের কার্যকারিতা নষ্ট করতে পারে।
গ্লুটেন সংবেদনশীলতা কি থাইরয়েড রোগ সৃষ্টি করতে পারে?
অনেকে মনে করেন, গ্লুটেন বা গমে থাকা আঠালো উপাদান থাইরয়েড সমস্যা তৈরি করে এবং এটা পরিহার করলে অটোইমিউন বা গ্রেভস ডিজিজ ও থাইরয়েড ক্যান্সার থেকে দূরে থাকা যাবে। এ ধারণা আসলে সঠিক নয়। কারো যদি হাশিমোতো বা হাইপোথাইরয়েডিজমের পারিবারিক ইতিহাস থাকে, হাহলে সম্ভবত গ্লুটেন পরিহারে কোনও লাভ হবে না। তবে কারও যদি থাইরয়েড রোগ এবং গ্লটেন-সংবেদনশীলতা দুটিই থাকে, তাহলে আপনার খাদ্য থেকে গ্লুটেন বাদ দেওয়া দরকার।
হেডস্ট্যান্ড কি থাইরয়েড রোগ সারাতে সাহায্য করে?
এমন একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে, হেডস্ট্যান্ড বা মাথা নিচে ও পা ওপরে তোলা ব্যায়াম এবং অন্যান্য উল্টো যোগব্যায়াম গ্রন্থিতে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে থাইরয়েড রোগের লক্ষণগুলোকে উপশম করে। এটা নিশ্চিত যে, যোগব্যায়াম শরীরকে শক্তিশালী করে এবং মনকে প্রশান্ত করে। কিন্তু হেডস্ট্যান্ড বা অন্যান্য উল্টো যোগব্যায়াম থাইরয়েড রোগ প্রতিরোধ বা নিরাময়ে সাহায্য করে না বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
ঘাড়ে লাম্প থাকা মানেই কি থাইরয়েডের সমস্যা?
ঘাড়ে লাম্প বা পিণ্ড হওয়া গলগণ্ড বা বর্ধিত থাইরয়েড নয়। যদিও থাইরয়েড হলো সবচেয়ে সাধারণ জিনিস, যা ঘাড়ে বড় হতে পারে, কিন্তু থাইরয়েড ছাড়াও ঘাড়ে আরও অনেক কিছু আছে৷ ঘাড়ের লাম্পের অন্যান্য কারণ হতে পারে ফোলা লিম্ফ নোড বা সিস্ট। যে কারেণে হোক, ঘাড়ে কোনও পিণ্ড দেখা দিলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিৎ, যিনি পরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যাটি মূল্যায়ন করবেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেবেন।
দ্রুত ক্লান্ত হওয়া বা ওজন বাড়া মানেই কি থাইরয়েড সমস্যা?
অল্প সক্রিয় থাইরয়েডের লক্ষণগুলো সুনির্দিষ্ট নয়। অর্থাৎ একেক অবস্থায় থাইরয়েড সমস্যা একেকভাবে দেখা দিতে পারে। সেকারণে সার্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে শরীরে এর প্রভাব দেখা উচিৎ। মাসিক ঋতুচক্রের পরিবর্তনের কারণে ক্লান্তি ও ওজন বৃদ্ধিসহ শরীরে যেসব লক্ষণ দেখা দেয়, থাইরয়েড রোগের কারণেও একই লক্ষণ দেখা দিতে পারে৷
থাইরয়েড রোগের চিকিৎসা কি খুব সহজ?
থাইরয়েডের রোগের চিকিৎসা খুব সহজ নয়, আবার তেমন জটিলও নয়। থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ লোককে টি-ফোর প্রতিস্থাপনের জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। এর ফলে ত্রুটিপূর্ণ থাইরয়েড নিজে থেকে উৎপাদিত হতে পারে না। এবং তারপর থাইরয়েড গ্রন্থি টি-ফোরকে টি-থ্রিতে রূপান্তর করতে সক্ষম হয়। ডাক্তার ফিঙ্কের মতে, রোগীরা যখন টি-থ্রি ওষুধ গ্রহণ করে, তখন তারা সমস্যার সম্মুখীন হন। এটি শরীরে যায় এবং প্রায় সোজা বেরিয়ে আসে। এতে অনেকে আসক্তও হতে পারেন।
প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার করলে কি থাইরয়েড সমস্যা কমে?
প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা সব সময় স্মার্ট পদক্ষেপ। তবে এমন কোনও বিশ্বাসযোগ্য গবেষণা নেই যেটা বলছে, যে ধাতুগুলো আপনি খাচ্ছেন সেগুলো সম্পর্কে আপনার খুব উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন। তাই এখনই আপনার তামা ও ইস্পাতের পাত্র ও প্যানগুলোকে ত্যাগ করার দরকার নেই। আপনার ডেন্টিস্ট আপনার মুখের মধ্যে যে সিলভার ফিলিংস দিয়েছিলেন তার ক্ষেত্রেও একই কথা – চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই।
সয়া-পণ্য কি থাইরয়েডের কার্যকারিতার জন্য প্রতিবন্ধক?
সয়া থাইরয়েডের উপর প্রভাব ফেলে। তবে যারা হাইপোথাইরয়েডে আক্রান্ত তাদের টফুসহ সয়া-পণ্য একেবারে পরিহার করার প্রয়োজন নেই। নির্দিষ্ট পরিমাণে এটা খেতে পারেন তারা। তবে মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণ সমস্যা তৈরি করতে পারে। - রহমান
## কি খাবো, কি খাবো না
কাঁচা পেঁপে: বহু রোগের মহৌষধ
ভীষণ পুষ্টিকর ফল, পেঁপে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, কাঁচা পেঁপের মধ্যে এমন কিছু প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা সারিয়ে তুলতে পারে বহু জটিল রোগ।
ফল গবেষকদের মতে, “১০০ গ্রাম কাঁচা পেঁপেতে রয়েছে ৩২ গ্রাম ক্যালোরি আর ৭ গ্রাম শর্করা। আরও রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি সহ নানা রকম পুষ্টি উপাদান। প্রাচীন সময় থেকেই বহু রোগের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই কাঁচা পেঁপে।
চলুন জেনে আসি কাঁচা পেঁপের ৯টি উপকারিতার কথা:
১. ওজন নিয়ন্ত্রণে কাঁচা পেঁপে খুবই কার্যকর । এতে রয়েছে যথেষ্ট আঁশ বা ফাইবার। আবার ক্যালরীও কম। মেদ কমানোর জন্য বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে কাঁচা পেপেতে।
২. যাদের পেটে গোলমাল দেখা দেয়, তারা সালাদ হিসেবে কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন।
৩. পেঁপেতে থাকা আঁশ জটিল কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি, ডায়রিয়া এমনকি পাইলসের সমস্যাও দূর করতে পারে।
৪. দেহে সঠিকভাবে রক্ত সরবরাহের কাজ করে কাঁচা পেঁপে। মূলত হৃৎপিণ্ডের রোগের জন্য দায়ী সোডিয়াম। দেহে জমা থাকা এসব সোডিয়াম দূর করতে ভীষণ কার্যকর পেপে। নিয়মিত পেঁপে খেলে হৃদপিন্ডের রোগসহ মুক্তি মিললে উচ্চ রক্ত চাপ থেকেও।
৫. নানা রকম প্রাকৃতিক এনজাইম থাকে কাঁচা পেঁপেতে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি এনজাইম হচ্ছে প্যাপিন ও সাইমোপ্যাপিন । এই দুই এনজাইম প্রোটিন চর্বি ও কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে সাহায্য করে।
৬. নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেলে ত্বকের সমস্যাও দূর হয়। বিশেষ করে ব্রণ এবং ত্বকের ওপর নানা দাগ দূর করতে পারে কাঁচা পেঁপে।
৭. যারা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন কাঁচা পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস শুরু করুন। কারণ কাঁচা পেপের জুস রক্তে চিনির পরিমাণ কমায়। আর এটি ইনসুলিনের পরিমাণও বাড়ায় শরীরে।
৮. মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বেশি দরকারি এই ফল। কারণ নারীদের যে কোনো ধরনের ব্যথা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে কাঁচা। পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন, এই ফলের পাতা, তেঁতুল ও লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে পানির সঙ্গে খেলে একেবারে ভালো হয়ে যায় সব ধরনের ব্যাথা।
৯. পেঁপেতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ই ও এ। এছাড়া এতে বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অতিরিক্ত ক্যালরি ও চর্বির পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
এই ফলটি সাধারণত কাঁচা-পাকা দুই ভাবেই খাওয়া যায়। আবার বারোমাসি ফল হওয়ায় বছরের প্রায় সব সময়ই তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায় এটি।
কাঁচা পেপের উপকারিতা নিয়ে বেশ লম্বা আলোচনা হলো। তাহলে চলুন না আজ থেকে শুরু করি কাঁচা পেপে খাওয়া। একটি সুন্দর অভ্যেসের কথা বলতে পারি আমরা।
প্রতিদিন দুপুর ও রাতে খাওয়ার পর এক টুকরো কাঁচা পেঁপে ভালো করে চিবিয়ে খান। এরপর পান করুন এক গ্লাস পানি। এতে ভালো থাকবে পেট আর চিরতরে দূর হবে গ্যাস্ট্রিক ও বদহজমের নানামুখী সমস্যা।
দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।