দেহঘড়ি পর্ব-৪১-China Radio International
‘দেহঘড়ি’র আজকের পর্বটি সাজানো হয়েছে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার নানা দিক নিয়ে; ‘আপনার ডাক্তার’ অংশে আজ থাকছে একজন হরমোন বিশেষজ্ঞের সাক্ষাৎকার, থাকছে হরমোন সম্পর্কিত ভুল ধারণা নিয়ে আলোচনা ‘ভুলের ভূবনে বাস’ এবং হরমোন ভারসাম্যহীনতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের খাদ্য সম্পর্কিত পরামর্শ ‘কী খাবো, কী খাবো না’। পাশাপাশি নিয়মিত আয়োজন হিসাবে থাকছে স্বাস্থ্যখাতের একটি প্রতিবেদন ও হেলথ বুলেটিন।
## প্রতিবেদন
বিশ্ব স্ট্রোক দিবস
‘স্ট্রোকের ঝুঁকি ৮০ ভাগ কমতে পারে লাইফস্টাইল পরিবর্তনে’
ঢাকা, হাবিবুর রহমান অভি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, জীবনযাত্রায় কিছুটা পরিবর্তন আনা গেলে অনেকাংশে কমে আসবে স্ট্রোকের ঝুঁকি। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখা ও নিয়মমত শারীরিক পরিশ্রম করা গেলে ব্রেইন স্ট্রোক এড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
বিষয়টি নিয়ে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে কথা বলেছেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোতাশিমুল হাসান শিপলু। তিনি বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোতে শারীরিক ব্যায়ামের উপর বিশেষ গুরত্ব দেওয়া হয়। সে কারণে সেসব দেশে স্ট্রোকের ঝুঁকিও কম। এর ঠিক বিপরীত চিত্র দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে।
ডা. মোতাশিমুল হাসান শিপলু, সহকারী অধ্যাপক, নিউরোসার্জারী বিভাগ, ডিএমসি
আরেক গবেষণা প্রতিবেদনে স্ট্রোক ইন আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, যেসব ব্যক্তি দৈনিক আট ঘণ্টা বা তার বেশি বসে থাকে তাদের স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় সাত গুণ বেশি। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ মিনিট হলেও হাঁটাহাটিঁর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুষম খাবারের উপরে ভরসা রাখতে বলছেন চিকিৎসকরা। দামি নয়, দেশি ও সহজে পাওয়া যায় এমন খাবার দিয়েই ডাইনিং টেবিল সাজানোর পরামর্শ তাদের। বিশেষ করে গুরত্ব দেওয়া দরকার সবজি ও দেশি ফলের উপর।
স্ট্রোক হলো মস্তিষ্কের এমন একটি রোগ যেখানে হঠাৎ করে সেই রক্তনালী বন্ধ হয়ে কিংবা ছিঁড়ে গিয়ে মস্তিষ্কের একটা নির্দিষ্ট অংশের কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে যায়।
মূলত মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনে বাঁধার সৃষ্টি হলে ব্রেইন স্ট্রোক হয়। এবং এজন্য উচ্চ রক্তচাপকে সবচেয়ে বেশি দায়ী করেন বিশেষজ্ঞরা। এরপরেই রয়েছে অনিয়মিত জীবনযাপন, জাঙ্ক ফুডে আসক্তি এবং প্রতিদিনের মানসিক চাপ।
এদিকে বিশ্বব্যাপী আজ (২৯ অক্টোবর) পালিত হয়েছে ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক ডে। এবার এ দিবসের প্রতিপাদ্য, ‘মিনিট ক্যান সেভস লাইফ’। বাংলাদেশও পালন করেছে দিবসটি। এ উপলক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য এক র্যালীর। এতে অংশ নেন দেশসেরা নিউরোসার্জনরা।
মানুষকে স্ট্রোকের ঝুঁকি সর্ম্পকে সচেতন করেন তারা। আলোচনায় উঠে আসে স্ট্রোকের নানা উপসর্গ, প্রতিকার ও চিকিৎসা নিয়ে গুরত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। রোগীদের সবোর্চ্চ সেবা নিশ্চিত করতে স্বতন্ত্র স্ট্রোক ইউনিট চালু করতে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান এই বিশেষজ্ঞরা।
ডা. শফিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক, নিউরোসার্জারী বিভাগ, ডিএমসি
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দেওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসার আওতায় আনা গেলে রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব।
অভি/রহমান
## হেলথ বুলেটিন
বাংলাদেশে স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু ১ নভেম্বর
নভেম্বরের প্রথম দিন থেকে বাংলাদেশজুড়ে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বৃহস্পতিবার সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের টিকা দেওয়ার কার্যক্রম ১ তারিখ থেকে শুরু করা যাবে। প্রথমে ঢাকায় ১২টি কেন্দ্রে দিয়ে শুরু করা হবে। একটু সময় নিয়ে সারা দেশেই শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে।"
শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতি দিন ৪০ হাজার শিশুকে টিকা দিতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
সিনোফার্মের আরও দেড় লাখ টিকা এসেছে বাংলাদেশে
চীন থেকে সিনোফার্মের আরও দেড় লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা এসেছে বাংলাদেশে। টিকার চালানটি মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ গণমাধ্যমকে জানান, আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারকে শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে সিনোফার্মের এ টিকা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বাংলাদেশে টিকাদান কার্যক্রম অনেকটাই নির্ভর করছে চীনে উৎপাদিত সিনোফার্ম টিকার উপর। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রয়োগ করা হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ২০ লাখ চীনা টিকা। এছাড়াও অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার এবং মর্ডানার টিকাও দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২৪ কোটি
বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি ৫৭ লাখে। এই মরণঘাতি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৯ লাখ ৮৭ হাজারেরও বেশি মানুষের। আর করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে ২২ কোটি ২৭ লাখ মানুষ।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্সে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটার্স জানায়, সর্বাধিক করোনা আক্রান্ত দেশের তালিকায় এক, দুই ও তিন নম্বরে রয়েছে যথাক্রমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও ব্রাজিল। এই তালিকায় আরও একধাপ পিছিয়ে বর্তমানে ৩০ নম্বরে এসেছে বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ১৫০ কোটিরও বেশি ভ্যাকসিন ডোজ সরবরাহ করেছে চীন
এ বছর ১০৬টি দেশ ও চারটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কাছে ১৫০ কোটিরও বেশি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহ করেছে চীন, বৈশ্বিকভাবে টিকা সরবরাহের দিক থেকে যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। চীন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থার (চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এজেন্সি) লুও চাওহুই মঙ্গলবার এক সম্মেলনে এ তথ্য জানান।- তানজিদ/রহমান
## আপনার ডাক্তার
দেহঘড়ির আজকের পর্বে আমরা কথা বলেছি হরমোনের ভারসাম্যহীনতা নিয়ে। মানবদেহে হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রার গড়বড়কে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বলা হয়। হরমোন একটি রাসায়নিক পদার্থ, যেটি শরীরের এন্ডোক্রাইন গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়। রক্তের সঙ্গে প্রবাহিত হয়ে এটি বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে বার্তা পৌঁছে দেয়। এভাবে এটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্রিয়ার সমন্বয় করে। হরমোন বাড়া-কমা অনেকসময় প্রাকৃতিকভাবে হয়, যেমন গর্ভাবস্থায় বা বয়সের সঙ্গে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা অনেক সময় জেন্ডার ও প্রকৃতির উপরও নির্ভর করে। হরমোনের ভারমাস্যহীনতা সময়মত চিকিৎসা না করালে নানা শারীরিক ও মানসিক অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ইত্যাদি নিয়ে কথা বলতে আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিএসএমএমইউ ডাক্তার মারুফা মোস্তারী। তিনি কর্মরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে।
## ভুলের ভুবনে বাস
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সাধারণ, স্বাভাবিক নয়
হরমোন মানবদেহকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই ছোট রাসায়নিক বার্তাবাহকগুলো কার্যত প্রতিটি শারীরিক ক্রিয়াকলাপ চালাতে সাহায্য করে। হরমোন স্বাস্থ্য-বিষয়ক প্লাটফর্ম হরমোন ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আনা গঞ্জালেজ হেরেরার মতে, হরমোন হৃদস্পন্দন, বিপাক ও ক্ষুধা, ঘুমের চক্র, যৌনজীবন, শারীরিক বিকাশ, দেহের তাপমাত্রা, মেজাজ ও মানসিক চাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে হরমোন নিয়ে মানুষের মধ্যে রয়েছে নানা ভুল ধারণা। আজ আমরা আলোচনা করবো এসব ভুল ধারণা নিয়ে।
কেবল ওষুধই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দূর করতে পারে?
অনেকে মনে করেন, হরমোনের ভারসাম্য দেখা দিলে হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি বা ওষুধগ্রহণ ছাড়া সেটি ঠিক হয় না। এ ধারণাটি সত্য নয়। থেরাপি বা ওষুধ গ্রহণ ছাড়া ডায়েট, ব্যায়াম ও লাইফস্টাইলও হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এমনকি ধ্যান করা বা বেশি পরিমাণে পানি গ্রহণও আপনার কর্টিসোল মাত্রায় ভারসাম্য আনতে সহায়তা করতে পারে।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা কি কেবল নারীর সমস্যা?
অনেকের ধারণা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা কেবল মহিলাদের হয়ে থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হলো অনেক পুরুষও প্রায়ই এ সমস্যায় আক্রান্ত হন। পুরুষের প্রধান যৌন হরমোন টেস্টোস্টেরোন যৌনজীবন, মুখের চুল, পেশী ও আরো অনেক কিছুকে প্রভাবিত করে। টেস্টোস্টেরোন নিঃসরণ কম হলে লিবিডো-স্বল্পতা ও বিষণ্ণতা দেখা দেয়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় এবং পেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে, টেস্টোস্টেরোন নিঃসরণ বেশি হলে উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি বারবার মেজাজ পরিবর্তন হতে পারে। শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধ তৈরি হলে তার ফলে যে মেটাবলিক সিন্ড্রোম দেখা দেয়, তা পেটের চর্বি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। ফ্যাট টিস্যুর মধ্যকার টেস্টোস্টেরোন এস্ট্রোজেনে রূপান্তরিত হয়ে দেহে এস্ট্রোজেন বাড়িয়ে দে, যার ফলে পুরুষের স্তন টিস্যু বৃদ্ধি পায় এবং শরীর চুল পড়ে যায়।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা কি স্বাভাবিক?
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সাধারণ, তবে স্বাভাবিক নয়। এই ভারসাম্যহীনতাগুলোকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা-সংকেত হিসাবে বিবেচনা করুন যা উপেক্ষা করা উচিত নয়। এগুলো কোনও না কোনও রোগ বা ব্যাধির লক্ষণ। যদি চিকিৎসা না করা হয়, তবে এগুলো বাড়বে এবং অন্যান্য উপসর্গ ও ভারসাম্যহীনতা ডেকে আনবে এবং শেষ পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী রোগ সৃষ্টি করবে। তবে ভালো খবর হলো, রজঃনিবৃত্তির লক্ষণ (সিনড্রোম), পিএডিডি বা গুরুতর রজঃনিবৃত্তির লক্ষণ এবং পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের মতো যেসব ব্যাধি হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে সৃষ্টি হয় সেগুলো জীবনধারা পরিবর্তন এবং ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসাযোগ্য। এছাড়া মেজাজের পরিবর্তন, ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি এবং নিষ্ক্রিয় যৌনজীবনের মতো হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থেকে সৃষ্ট লক্ষণগুলোও চিকিৎসা ও যত্নের মাধ্যমে ভাল করা যেতে পারে।
মানসিক চাপ কি হরমোনের ওপর প্রভাব ফেলে?
আপনি যদি ভেবে থাকেন উচ্চ-চাপের জীবনধারা আপনার হরমোনের ওপর কোনও প্রভাব ফেলছে না, তাহলে আপনার ভাবনা পরিবর্তন করুন। দীর্ঘস্থায়ী চাপ হরমোনের ভারসাম্যহীনতার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। কারণ এটি আপনার শরীরে রাসায়নিক 'সুনামি' সৃষ্টি করে। আপনার যদি প্রায়ই মন খারাপ হয়, বারবার মেজাজ পরিবর্তন হয় এবং আপনি যদি হতাশ বোধ করেন, তাহলে আপনার হরমোন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। আপনার এখন দরকার নিজের সুস্থতার দিকে মনযোগ দেওয়া। যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভালো ঘুম হয় সেটা নিশ্চিত করুন, মননশীলতার জন্য সময় ব্যয় করুন এবং প্রকৃতির মধ্যে যান। প্রকৃতি রোগ প্রতিরোধে এবং আপনার মন ভালো করতে সাহায্য করে। - রহমান
##কী খাবো, কী খাবো না
হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে এসব খান
শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়া ঠিক রাখতে হরমোন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে এ রাসায়নিক নিঃসরণ হয় এবং রক্তের মাধ্যমে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে বার্তা পৌঁছে দেয়। তার ফলে স্বাভাবিক নিয়মে চলে শরীর। তবে হরমোনের গোলমালে নানা ধরনের মানসিক ও শারীরিক অসুখ হতে পারে। তাই দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা খুবই দরকারী। আজ আমরা আলোচনা করবো কী খাবার খেলে এবং কী খাবার পরিহার করলে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে – সেটা নিয়ে।
মাছ ও মাংস: হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে আমিষজাতীয় খাবার। তাই প্রতিবেলার খাবারে যেন আমিষ থাকে সেটা নিশ্চিত করুন। মাংস, মাছ, ডিম ও দুধ সবচেয়ে ভালো আমিষের উৎস।
ডাল ও সয়াবিন: যে কোনও ডাল ও সয়াবিনে ভালো মাত্রায় আমিষ থাকে, যা হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডাল বা সয়াবিন রাখুন।
শাকসবজি: হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় যারা ভুগছেন তাদের মেনে চলা উচিৎ রেইনবো বা রংধনু ডায়েট চার্ট। এই চার্ট তৈরির নিয়ম হলো রংধনুর ৭টি রঙের মধ্যে ৬টি অর্থাৎবেগুনি, নীল, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লালের প্রত্যেকটি রঙের অন্তত একটি করে শাকসবজি খেতে হবে প্রতিদিন।
ফলমূল: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই আপেল, স্ট্রবেরি, অ্যাভোকাডো ও কলার মতো বেশি আঁশযুক্ত ফল রাখুন। কারণ এসব ফল হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে।
গ্রিন টি: হরমোনের ভারসাম্যের জন্য গ্রিন টি খুব উপকারী। গ্রিন টি খেলে মেটাবলিজম বাড়ে এবং ডিটক্স সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করে, যা হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় জরুরী। দিনে ১ থেকে ৩ কাপ গ্রিন টি পান করতে পারেন নিয়মিত।
বাদাম: যে কোনও বাদামে লিনোলেইক অ্যাসিড ও স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে, যা শরীরের হরমোন নিঃসরণ বাড়িয়ে এর ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। কাঠবাদাম, আমন্ড ও আখরোট খুবই উপকারি হরমোনের ভারসাম্য রাখতে।
নারকেল তেল: নারকেল তেলে থাকে লাউরিক অ্যাসিড ও এমসিটি, যা হরমোন তৈরিতে কার্যকরী। তাই যাদের হরমোনের ভারসাম্যহীনতা আছে, তারা রান্নায় নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।
ঘি ও মাখন: ঘি ও মাখনে থাকে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে-২, যা হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে। তবে এক্ষেত্রে বাজারের ঘি ও মাখনের ওপর ভরসা না রেখে নিজেরা ঘরে তৈরি করে নিতে পারলে ভালো হয়।
প্রোবায়োটিক খাবার: পাচনতন্ত্রের সমস্যার কারণে অনেক সময় হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তবে পাচনতন্ত্র ঠিক রাখে প্রোবায়োটিক খাবার যেমন দই, বাটারমিল্ক। তাই নিয়মিত এসব খাবার খেতে পারেন হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে। - রহমান
‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।