বাংলা

গুণের শেষ নেই আমের-China Radio International

cri2021-05-28 20:27:26

ফলের রাজা আম। গ্রীষ্মের এই রসালো ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর। ভিটামিন এ, বি, সি, ডি ও ই-সহ ২০ ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান থাকে পাকা আমে। এসব উপাদান শরীরের ভিটামিনের অভাব দূর করার পাশাপাশি কর্মশক্তি যোগায়। চলুন জেনে নেই পাকা আমের উপকারিতা সম্পর্কে।

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে: পাকা আমে থাকে কুয়েরসেটিন (Quercetin), ফাইসেটিন (Fisetin), আইসোকুয়েরসেটিন (Isoquercitrin, অ্যাস্ট্রাগ্যালিন (Astragalin), গ্যালিক অ্যাসিড (Gallic acid) ও মিথাইল গ্যালেট (Methyl Gallate) অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো স্তন ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার ও লিউকেমিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এছাড়া আমে থাকা ভিটামিন এ, সি ও ই শরীরে ফ্রি র্যা ডিকেল বা ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদানকে প্রতিরোধ করে।

রোগ প্রতিরোধ করে: আমে থাকা ক্যারোটিনয়েড (Carotenoid) ও ভিটামিন সি মানবদেহের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে এবং বয়সজনিত পরিবর্তনকে ধীর করে দেয়। এছাড়া ক্যারোটিনয়েড ফ্রি র্যা ডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: স্মৃতিশক্তি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আম। এই ফলে থাকা গ্লুটামিক অ্যাসিড (Glutamic Acid) মস্তিষ্কের কোষগুলোকে উজ্জীবিত করে এবং মনোযোগ বাড়ায়। তাই মস্তিষ্কের চাপ যখন বেশি থাকে, তখন বেশি করে আম খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা।x

খনিজ উপাদানের ঘাটতি মেটায়: ব্যায়াম বা অন্য শারীরিক পরিশ্রম করলে দেহের পটাশিয়াম কমে। এ খনিজ উপাদানের ঘাটতি দূর করতে আম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ আমে থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। এছাড়া প্রতিদিনের পরিশ্রমে শরীর থেকে যে ইলেক্ট্রোলাইটস বের হয়ে যায়, তার ঘাটতিও পূরণ করে আম।

ঠাণ্ডা ও ফ্লু দূর করে: আমে থাকে প্রচুর ভিটামিন এ, সি ও ডি। এসব ভিটামিন ঠাণ্ডা বা ফ্লুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। তাই যতদিন বাজারে আম পাওয়া যায়, নিয়মিত খেতে থাকুন এই ফল।

হজমে সাহায্য করে: খাবারের প্রোটিন উপাদানগুলোকে সহজে ভেঙে ফেলতে পারে আমে থাকা এনজাইম। এতে খাবার দ্রুত হজম হয়। ফলে বাঁচা যায় পাকস্থলীর বিভিন্ন রোগ থেকে। এছাড়া আমে থাকে প্রচুর আঁশ, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, তাদের জন্য আম খুব উপকারী।

হৃদরোগ ও আলঝেইমারের বিরুদ্ধে লড়াই করে: আমে উচ্চমাত্রায় বিটা ক্যারোটিন থাকে, যা ভিটামিন এ’র উৎস। এ কারণে আম হৃদরোগ, ভুলে যাওয়া রোগ আলঝেইমার, পার্কিনসন্স ও বাতরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

চোখের সমস্যা দূর করে: আমে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। চোখের ভেতরে শুকিয়ে যাওয়া বা ড্রাই আই সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যা থেকেও চোখকে বাঁচাতে সাহায্য করে আম।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে: আমে থাকা উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি, ফাইবার ও প্যাকটিন রক্তে কোলেস্টেরলে মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা পালন করে।

হিট স্ট্রোক থেকে শরীরকে বাঁচায়: গ্রীষ্মে হিট স্ট্রোক অতি সাধারণ ঘটনা। তবে আম খেলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক কমে। কারণ আম শরীরের ভেতরটা শীতল রাখে এবং অতিরিক্ত গরম হওয়া থেকে শরীরের ভেতরের অঙ্গগুলোকে রক্ষা করে।

গর্ভবতীদের জন্য উপকারী: আমে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও ফলিক অ্যাসিড থাকে। এসব উপাদান গর্ভবতীদের জন্য এবং গর্ভে থাকা শিশুর জন্য খুব উপকারী।

ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: মানব ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে আম। বিশেষ করে ত্বকের ফুসকুড়ি দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এ ফল।

অ্যালকালাইনের ভারসাম্য বজায় রাখে: আমে থাকে টারটারিক অ্যাসিড (Tartaric acid), ম্যালিক অ্যাসিড (Malic acid) ও সাইট্রিক অ্যাসিড (Citric acid)। এসব উপাদান শরীরের অ্যালকালাইন বা ক্ষারীয় রাসায়নিকের ভারসাম্য বজায় রাখে।

সতর্কতা:

আমে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। সেকারণে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের পরিমিত পরিমাণে আম খাওয়া উচিৎ। ডায়াবেটিস রোগীদের সাধারণত দিনে একটি পাকা আমের অর্ধেকটা খাওয়ারই পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। - রহমান

‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।

Close
Messenger Pinterest LinkedIn