মহাকাশ স্টেশনে জেব্রাফিশের পরীক্ষায় রেকর্ড চীনের
নভেম্বর ১৫, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: চীনের মহাকাশ স্টেশনে স্থাপিত একটি জলজ ইকোসিস্টেমে ব্যাপক সফলতা পাওয়া গেছে। ওই সিস্টেমে রাখা চারটি জেব্রাফিশ তাদের জীবনের বিকাশ ও প্রজনন পর্যন্ত ৪৩ দিন সম্পন্ন করেছে। এটি মহাকাশে পরিবেশগত পরীক্ষায় একটি নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে। সম্প্রতি দ্য ইনোভেশন জার্নালে প্রকাশ হয়েছে এর বিস্তারিত।
এ গবেষণাকে মাইলফলক বলা হয়েছে ওই নিবন্ধে। আরও বলা হয়েছে, পরীক্ষাটি কেবল চীনের স্পেস ইকোসিস্টেম প্রযুক্তির অগ্রগতি নয় বরং মহাকাশ মিশনে ক্লোজড-লুপ ইকোসিস্টেমের জন্য মূল্যবান প্রাযুক্তিক তথ্যও দেবে।
গত ২৫ এপ্রিল চারটি জেব্রাফিশ এবং চার গ্রাম জলজ উদ্ভিদসহ শেনচৌ-১৮ এর তিন নভোচারী চীনের মহাকাশ স্টেশন থিয়ানকংয়ে গিয়েছিলেন। ৪ নভেম্বর তারা পৃথিবীতে ফিরে আসেন এবং মহাকাশ বাস্তুতন্ত্র থেকে পানির নমুনাও নিয়ে আসেন।
চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস (সিএএস)-এর ইনস্টিটিউট অব হাইড্রোবায়োলজি (আইএইচবি) এবং সিএএসের শাংহাই ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল ফিজিক্সের গবেষকরা যৌথভাবে পরীক্ষাটির নকশা করেন। তারা একটি বদ্ধ জলজ ইকোসিস্টেম তৈরি করেন যেখানে জলজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে মাছের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন তৈরি করে। জেব্রাফিশগুলোর বিষ্ঠা থেকে জলজ উদ্ভিদ পেয়েছে পুষ্টি।
আইএইচবি জানিয়েছে, মাছের জন্য দরকারি খাবার একটি সিরিঞ্জের মাধ্যমে ট্যাঙ্কে দেওয়া হয়েছিল।
জেব্রাফিশগুলোর দৈর্ঘ্য তিন থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। তাদের সঙ্গে মানুষের জিনগত মিল আছে ৭০ শতাংশের বেশি। এতে করে মহাকাশে তাদের নিয়ে গবেষণা মানুষের নানা রোগের প্যাথোজেনেসিস বোঝা এবং নতুন ওষুধ তৈরিতে তাৎপর্যপূর্ণ বলে জানিয়েছেন আইএইচবি-এর গবেষক ওয়াং কাওহং।
চীনা নভোচারীরা দেখেছেন, মহাকাশ স্টেশনে জেব্রাফিশ অস্বাভাবিক আচরণ দেখিয়েছে—যেমন উল্টোদিকে সাঁতার কাটা, চক্রাকারে ঘোরা এবং মাইক্রোগ্রাভিটি পরিবেশে আরও কিছু অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া।
মহাকাশ স্টেশনে মেরুদণ্ডী প্রাণীর দীর্ঘমেয়াদি টিকে থাকার বিষয়টি নিয়ে দরকারি তথ্য চীনের হাতে আছে বলে জানিয়েছেন আইএইচবি-এর গবেষক সুন ইয়ংহুয়া। তিনি বলেন, এই অর্জন মহাকাশে আরও জলজ জীববিজ্ঞান এবং ওষুধ গবেষণা চালানোর শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও স্থাপন করেছে। ভবিষ্যতে আরও কিছু মেরুদণ্ডী প্রাণী মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে চীনের।
আপাতত মহাকাশ স্টেশন থিয়ানকং থেকে নিয়ে আসা নমুনাগুলো অতি-নিম্ন তাপমাত্রার স্টোরেজ কেসে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
চীনে জেব্রাফিশ নিয়ে গবেষণা চালাতে পাঁচ শতাধিক পরীক্ষাগার রয়েছে বলেও জানা গেছে।
ফয়সল/শান্তা
তথ্য ও ছবি: সিনহুয়া