বাংলা

সিচাংয়ের সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ

CMG2024-11-10 17:21:00

নভেম্বর ১০, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বলতে আমরা সচরাচর পুরনো কিছুকেই বুঝি। কিন্তু ইতিহাস বলছে নতুনও একসময় পুরনো হয়। তাই ঐতিহ্যের মাঝেও নিয়ে আসতে হয় সৃজনশীলতা, চাই নতুন কিছু উদ্ভাবন। এমনটাই ঘটছে চীনের সিচাং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে। সেখানকার ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পগুলো শুধু ভালোভাবে সংরক্ষিতই নয়, বরং স্থানীয় শিল্পীদের আধুনিক মননশীলতার ছোঁয়ায় সেখানকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে দেখা দিয়েছে নবজাগরণের সূচনা।

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রদেশ সিচাং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। সুপ্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও কারুশিল্পের অনন্য এক চারণভূমি। প্রথাগত চিত্রকর্ম থেকে শুরু করে এখানে দেখা যায় প্রথাগত চিত্রকর্ম, কাঠে খোদাই করা কারুকাজ এবং চমরি গরুর হাড় দিয়ে তৈরি সিরামিকের পণ্য। এসব ঐতিহ্যবাহী শিল্পে এবার আধুনিকতার ছোঁয়া দিচ্ছেন স্থানীয় নতুন প্রজন্মের কারিগররা।

লাসা নদীর দক্ষিণ তীরে আছে সিচাং থাংকা আর্ট মিউজিয়াম। চীনা চিত্রকলার ঐতিহ্য সংরক্ষণে একটি জাতীয়-স্তরের প্রতিষ্ঠান এটি। বিশেষ করে মিয়ানসা শৈলী সংরক্ষণ করা হয় এখানে, যা চীনের একটি উল্লেখযোগ্য অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।

২০১৬ সালে জাদুঘরটি শিল্পীদের এক ছাদের তলায় এনেছিল ঐতিহ্যবাহী চীনা চিত্রকলা নিয়ে গবেষণার জন্য। ওই চিত্রকলার সঙ্গে শিল্পীরা থাংকা শিল্পকলার মিশ্রণ ঘটিয়ে তৈরি করেছিলেন নতুন এক সৃজনশীল ধারা।

সিচাং থাংকা আট মিউজিয়ামের ডেপুটি কিউরেটর খুন জরগাই জানালেন, ‘থাংকা শিল্পকলায় শুধু ধর্মীয় বিষয়গুলোই নেই, এর মধ্যে ভূ-দৃশ্য, ফুল ও পাখিও রয়েছে।’

অন্যদিকে লাসা সিটিতে চালু হয়েছে চীনামাটির তৈযসপত্র তৈরির একটি বিশেষ উৎপাদন লাইন। এখানে সিরামিকে দেখা যায় থাংকা পেইন্টিং। আবার ইয়াক-বোন বা চমরি গরুর হাড়ের কাঠকয়লা এবং কাদামাটিকে একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী সিরামিক। এতে করে সিরামিকের পণ্যগুলো আগের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি সাদা হচ্ছে। অর্থাৎ একটি ঐতিহ্যের সঙ্গে আরেকটি ঐতিহ্যের মিশ্রণে তৈরি হচ্ছে নতুন কিছু।

সিরামিক তৈরির প্রশিক্ষক ছোগায়াল জানালেন, ‘এ ধরনের হাড়ের তৈরি চীনামাটির বাসনগুলোতে আলাদা করে রং করা হয়। কারণ পোড়ানোর পর কিছু কিছু রং বদলে যায়।’

তথ্যে দেখা গেছে, ২০১২ ও ২০২৩ সালের মধ্যে, চীনের কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক সরকার এ ধরনের অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রকল্প এবং উত্তরাধিকার কার্যক্রমের সুরক্ষায় প্রায় ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছে। যার সুফল পেতে শুরু করেছে সিচাং।

গতবছর এ প্রদেশে ঘটেছে সাংস্কৃতিক বিপ্লব। ২০২৩ সালে সিচাং-এর সাংস্কৃতিক শিল্পের বাজার ছিল প্রায় ১৩০ কোটি ডলারে, যা কিনা ২০২২ সালের চেয়ে ৪২ শতাংশ বেশি।

ফয়সল/শান্তা

তথ্য ও ছবি: সিসিটিভি

Close
Messenger Pinterest LinkedIn