বাংলা

চিনুও পাহাড় উন্নয়নের গল্প

CMGPublished: 2024-11-11 14:46:36
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত চিনুও পাহাড়ের ক্রান্তীয় রেইনফরেস্ট হাইকিং অনেককেই আকর্ষণ করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চিনুও পাহাড়ে অবস্থিত চিনুও থানা রেইনফরেস্টে হেঁটে হেঁটে ভ্রমণ জনপ্রিয় হয়েছে। এখানে পর্যটন শিল্পের উন্নতির ফলে, স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই জন্মস্থানে ফিরে এসেছেন ও আসছেন।

চীনের ইউননান প্রদেশের চিশুয়াংবান্না তাই জাতির স্বায়ত্তশাসিত বান্নারের চিংহং শহরের চিনুও পাহাড় থানার প্রাকৃতিক পরিবেশ ভালো, দৃশ্য সুন্দর, সংস্কৃতি সমৃদ্ধ। এটি চিনুও জনগোষ্ঠী-অধ্যুষিত এলাকা এবং পুয়ার চা উত্পন্ন হয় এখানে। চীনের দারিদ্র্যবিমোচন পরিকল্পনা ও বর্তমান গ্রামীণ পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে, চিনুও পাহাড় থানার জীবনযাত্রার মানও অনেক উন্নত হয়েছে। এখন প্রতিটি পরিবারের নতুন বাড়িঘর আছে; গ্রামে সড়ক নির্মিত হয়েছে। পাড়ারটি অসংখ্য পর্যটককে আকর্ষণ করে। স্থানীয় বাসিন্দারা জন্মস্থানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন ও পাচ্ছেন।

৩১ বছর বয়সী চিনুও পাহাড় থানার পাফিয়াও গ্রামের চিনুও জাতির যুবক থাও চিয়ান সিয়োং, ২০১৩ সালে বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর বাইরে কাজ করতেন। ২০১৭ সালে তিনি নিজের জন্মস্থানে ফিরে আসেন এবং পর্যটনসংশ্লিষ্ট কাজ শুরু করেন। ২০২২ সালের শেষ দিকে তিনি নিজের ভ্রমণ কোম্পানি গড়ে তোলেন। এখন তাঁর কোম্পানিতে শতাধিক পেশাদার গাইড আছেন। গত বছর তাঁর কোম্পানি ৩৫ হাজার পর্যটককে সেবা দিয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

“অধিকাংশ স্থানীয় যুবক চিনুও পাহাড়ে ফিরে এসেছেন। তাঁরা স্থানীয় পর্যটন শিল্পে অংশগ্রহণ করছেন।”

চিনুও পাহাড় থানার চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র সম্পাদক তাও লুন বলেন, “যুবকদের ধারণা নতুন। তাঁদের প্রাণশক্তি বেশি। আমাদের থানা প্রতিদিন নতুন নতুন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।”

স্থানীয় যুবক মু লা ছিয়ে হাইস্কুল থেকে স্নাতক হওয়ার পর খুনমিংয়ে কাজ করতেন। ২০২১ সালে তিনি চিনুও পাহাড়ে ফিরে আসেন। যথাযথ প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর, তিনি স্থানীয় প্রথম দফা রেইনফরেস্ট ওয়াকিং ট্যুর গাইডের একজন হয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি নিজের জন্মস্থানে, পর্যটকদেরকে রেইনফরেস্টের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পেরে গর্ব করি।”

মু লা ছিয়ে’র বাড়ি চিনুও পাহাড় থানার পাতুও গ্রামে। এটি চিনুও নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম, যার চারপাশে ঘন বন ও প্রস্ফুটিত ফুলে ঘেরা। গ্রামটির বাড়িঘর ও সড়কসহ অবকাঠামোব্যবস্থা উন্নত। মু লা ছিয়ে আবিষ্কার করেন যে, পর্যটকরা চা ছাড়াও কফি খেতে পছন্দ করেন। সেজন্য তিনি যুব-উদ্যোক্তা ঋণের জন্য আবেদন করেন। পরে তিনি পরিবারের পুরাতন বাড়িকে একটি কফিশপে রূপান্তর করেন। তিনি প্রতিদিন গড়ে ৮০ কাপ কফি বিক্রয় করেন। মু লা ছিয়ে বলেন, “বর্তমানে আমার পিতা ট্যুর গাইডের কাজ করেন এবং আমার মাতা রেস্তোরাঁয় কাজ করেন। আমাদের আয় অনেক বেড়েছে।”

পাতুও গ্রামের সিপিসি’র কমিটির সম্পাদক ছিয়ে ইয়াও সাংবাদিককে জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের জন্মস্থান সুন্দর করে নির্মাণ করার জন্য অবদান রাখছেন। ২০২৩ সালে পাতুও গ্রামে আসা পর্যটকের সংখ্যা ৪০ হাজার ছিল। পর্যটন শিল্পের আয় গত বছর আগের চেয়ে ৩.৬ লাখ ইউয়ান বেশি ছিল। এ ছাড়া, রাবার, চা ও ফল শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামটির মাথাপিছু নিষ্পত্তিযোগ্য আয় ৩০ হাজার ইউয়ানে পৌঁছেছে।

সবুজ পাহাড় ও পানি হলো সোনা ও রূপার পাহাড়। রেইনফরেস্টের পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি, পর্যটন শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে, চিনুও জাতির মানুষের জীবন আরও সুন্দর হয়েছে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn