বিশ্বের ছাদে "তারাভরা সিনেমা হল"
অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরের প্রজেকশনিস্টরা, "পৃথিবীর ছাদ" নামে পরিচিত তিব্বতের পাহাড়-নদী অতিক্রম করে, কখনও গাড়িতে বা কখনও পায়ে হেঁটে, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার ধকল কাটিয়ে, তুষারাবৃত মালভূমিতে স্থানীয়দের সেবা দিয়ে আসছেন। তিব্বতে ৪৭৮টি জেলায় (টাউন) ভ্রাম্যমান ডিজিটাল মুভি প্রজেকশন টিম রয়েছে; চিয়াছা জেলার ফিল্ম প্রজেকশন টিম তাদের একটি।
চিয়াছা জেলার ফিল্ম প্রজেকশন টিমকে প্রতিবছর ৮৮৮টি শো দেখানোর দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু ২০২১ সালে তারা ১৯ হাজার দর্শককে ৯০০টিরও বেশি মুভি দেখিয়েছে। প্রজেকশন টিমের জন্য, সিনেমা প্রদর্শনের সংখ্যা শুধু একটি সংখ্যা নয়, একটি দায়িত্বও বটে।
তিব্বতের শাননান শহরে গ্রীষ্মের শুরুতে, পাহাড়ের চূড়া তুষারে ঢাকা থাকে; তবে তুষারাবৃত শৃঙ্গগুলো থাকে সবুজে ভরপুর। উত্তাল উপত্যকার উভয় পাশে ৫০০টিরও বেশি তাঁবু খাটানো হয়েছে এবং হাজার হাজার গ্রামবাসী এখানে অস্থায়ীভাবে "শিবির স্থাপন" করেছে।
সন্ধ্যা যখন ধীরে ধীরে উপত্যকায় প্রবেশ করে, ৪২ বছর বয়সী সেদান ডলমা এবং তার স্বামী পাশাপাশি একসাথে মুভি পর্দার দিকে অগ্রসর হন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৫০০ মিটার উচ্চতায় "তারাভরা সিনেমা হল" ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চালু আছে। চিয়াছা জেলার প্রজেকশন দল গ্রামবাসীদের জন্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করে।
পায়ে চালিত জেনারেটর ও ফিল্ম প্রজেক্টর থেকে পাওয়ার গ্রিড, ডিজিটাল মেমরি কার্ড ও স্টেরিও—সময় বদলেছে, প্রযুক্তিতেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন; কিন্তু যা অপরিবর্তিত রয়েছে তা হল প্রজেকশনিস্টদের চলচ্চিত্র এবং এই ভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা। এখানে, চলচ্চিত্র শুধুমাত্র বিনোদন নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক জীবনধারাও বটে। এটি একটি জানালার মতো, যার মাধ্যমে পৃথিবীর আলো এখানে প্রবেশ করে এবং পর্দার মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে প্রবেশ করে।