বাংলা

২০২৩ সালের দুই অধিবেশনে তিব্বতি প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গ

CMGPublished: 2023-03-17 15:51:10
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

গত সপ্তাহে আমরা চীনের ২০২৩ সালের দুই অধিবেশনে সিনচিয়াংয়ের অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের গল্প বলেছিলাম। এবারের অনুষ্ঠানে আমরা তিব্বতের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো।

সিপিপিসিসি’র সদস্য পিয়ান পা লা মু

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে ইতোমধ্যেই তিন বছরের বেশি সময় কাটিয়েছেন তিব্বতি প্রতিনিধি পিয়ান পা লা মু। তিনি তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সমাজ ও বিজ্ঞান একাডেমি থেকে চীনের সমাজ ও বিজ্ঞান একাডেমিতে কাজ করতে আসেন।

চলতি বছর তিনি বেইজিংয়ে চতুর্দশ গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন (সিপিপিসিসি)-র সদস্য নির্বাচিত হন। গতবার তিনি তিব্বতে নির্বাচিত হন। সিপিসি’র একজন সদস্য হিসেবে বড় হওয়া একজন জাতিগত ক্যাডার তিনি। তিনি সবসময় কৃতজ্ঞচিত্তে নিজের প্রচেষ্টার মাধ্যমে জাতিগত ঐক্য বজায় রাখার কাজ করে যেতে চান।

তিনি বলেন ‘তিব্বতের শিক্ষানীতি হচ্ছে গোটা চীনের মধ্যে সবচেয়ে ভালো। তিব্বত সবার আগে ১৫ বছরের বিনামূল্যের শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছে।’ সেই সঙ্গে দেশের সুবিধাজনক ব্যবস্থাও উপভোগ করছে তিব্বত। তিব্বতি ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসে বসে বিভিন্ন জ্ঞান শিখতে পারে। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক বার আমি তৃণমূল পর্যায়ে পরিদর্শনকালে আমি দেখেছি যে, স্থানীয় সবচেয়ে ভালো স্থাপত্য হচ্ছে স্কুল।’

তিনি বলেন, ‘আমি লেখাপড়া কখনও থামাইনি। মানবজাতির সভ্যতা শিখছি এবং শিখছি দেশের সাধারণ নীতি।’ সেই সঙ্গে যেটা শিখেছেন, তা সবই কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন তিনি। তিনি বলেন, তাঁর নিজের ও তাঁর মতো অনেকের প্রচেষ্টায় জাতিগত অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন-প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। চীনা জাতির মহান পুনরুত্থাপনে নিজের অবদান রাখছেন তিনি।

এনপিসি’র প্রতিনিধি পাইমাছুও

চীনের জাতীয় গণকংগ্রেস (এনপিসি)-র প্রতিনিধি পাইমাছুও লম্বা সময় ধরে পশুপালক অঞ্চলের বৃদ্ধবৃদ্ধা এবং পেনশন ইস্যুর ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাজীবনে তাঁর মূল বিষয় ছিল ছিল নৃবিদ্যা। এই বিষয়ের মৌলিক নিয়ম হচ্ছে মাটির কাছে থেকে লম্বা সময় ধরে গবেষণা করা।’ তিনি বলেন, “কয়েক বছর আগে, আমি নাছু শহরের চিয়া লি জেলার প্রবীণকেন্দ্রে এক জরিপ চালিয়েছিলাম। সেখানে কয়েক মাস ধরে আমি প্রবীণদের সাথে বসবাস করেছি। তাঁদেরকে দেখেছি বিভিন্ন কারণে একাকী জীবন কাটাতে। তবে, তাঁদের সাথে জীবনযাপনের ওই কয়েক মাসে তাঁদের মুখ থেকে উচ্চারিত একটি কমন টার্ম ছিল ‘এটাই আমার বাড়ি’।”

সাক্ষাত্কার দেওয়ার সময় তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রবীণ ইস্যুর ওপর বেশ গুরুত্বারোপ করে আসছে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন বিভাগ। ধারাবাহিক জরিপের মাধ্যমে আমি উপলদ্ধি করেছি যে, তৃণমূল পর্যায়ের মৌলিক কর্মকাণ্ডকে সুসংহত করার জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে তিব্বতের কর্তৃপক্ষ। প্রবীণ পশুপালকদের কাছে সিপিসি ও কেন্দ্রীয় সরকারের উষ্ণতা পৌঁছে দিয়েছে তারা।” তিনি বলেন, তিনি নিজের প্রচেষ্টায় সবার কাছে চীনা আওয়াজ, চীনা তত্ত্ব এবং চীনা চিন্তাধারা প্রচার করবেন। বিশ্ব আরও ভালোভাবে চীন ও চীনের তিব্বতকে উপলদ্ধি করতে পারবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

সিপিপিসিসি’র সদস্য হুয়াতেমি

হুয়াতেমি হচ্ছেন তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের তৃতীয় গণহাসপাতালের উপ-প্রধান এবং প্রধান চিকিত্সক। চিকিত্সা খাতে কাজ করছেন বিগত ২৭ বছর ধরে। তিনি সমবসময় ‘জনগণকে সেবা দেওয়ার’ মৌলিক লক্ষ্যকে মনে রাখেন। সেই সাথে ‘প্রাণ বাঁচাতে হবে’—এই চেতনাও কাজ করে তাঁর মধ্যে। তিনি তুষারাবৃত মালভূমির একজন চিকিত্সক। তাঁর গল্প মনোমুগ্ধকর।

তিনি পর্যায়ক্রমে অস্ট্রেলিয়ার জেমস কুক বিশ্ববিদ্যালয় এবং হারপিন চিকিত্সা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ও ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী ঠেকাতে বিভিন্ন কাজ তাঁর মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। ২০২০ সালের শুরুর দিকে, তিব্বতে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী চিহ্নিত হয়। ২০২২ সালের অগাস্টে তিব্বতে এই ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। হুয়াতেমি’র নেতৃত্বে তাঁর চিকিত্সাদল মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে। ‘জনগণকে শীর্ষস্থানে রাখা এবং জনগণের জীবন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’—এই ধারণা সবসময় মনে রাখেন তিনি। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তিনি আরও বেশি শিখবেন, শেখার মনোভাব নিয়ে প্রতিবছরের দুই অধিবেশনে অংশ নিতে চান তিনি।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn