বাংলা

তিব্বত: রান্নার পাত্রের পরিবর্তনে জনগণের জীবন পরিবর্তনের প্রতিফলন

CMGPublished: 2022-12-01 18:31:34
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

ডিসেম্বর ১: ২০ বছর বয়সী রিনচেন ঝুওগা প্রেসার কুকারে নুডুলস রান্না করেন এবং দশ মিনিটেরও কম সময়ে তার পরিবারের কাছে সুগন্ধি নুডলস নিয়ে আসেন।

রিনচেন ঝুওগার বাবা, ৫৬ বছর বয়সী তাশি, তিব্বতের লাসা শহরের মোঝুগংকা জেলার বাসিন্দা। তিনি জানান, ছোটবেলায় বাড়িতে ব্যবহৃত বেশিরভাগ রান্নার পাত্র ছিল মৃত্পাত্র। যার মধ্যে ছিল মৃত্পাত্রের হাঁড়ি, স্টিমার, চায়ের পাত্র, সেইসাথে কাঠ ও পাথরের তৈরি রান্নার পাত্র, যেমন মাখন চা ব্যারেল এবং পাথরের পাত্র। অন্যান্য উপকরণ দিয়ে তৈরি পাত্র খুব বিরল ছিল।

ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি "পৃথিবীর তৃতীয় মেরু" হিসাবে পরিচিত। যার গড় উচ্চতা ৪০০০ মিটারের বেশি। তিব্বতে বেশি উচ্চতা, নিম্ন বায়ুচাপ এবং কম স্ফুটনাঙ্কের কারণে, আগুন যথেষ্ট হলেও জলের তাপমাত্রা বাড়ে না, তাই রান্না প্রায়শই কাঁচা বা কম রান্না হয়েছে মনে হয়। প্রেসার কুকারের উত্থান এই সমস্যার সমাধান করেছে। এমনকি, ৫০০০ মিটার উচ্চতায়ও আপনি "ভালভাবে রান্না করা সুগন্ধি" খাবার খেতে পারেন।

আপনি যদি একটি তিব্বতি রান্নাঘরে যান, দেখবেন মাটির চুলার স্থান দখল করে নিয়েছে গ্যাসের চুলা। কাঠের ঘি ব্যারেলটিও একটি বৈদ্যুতিক ঘি ব্যারেল হয়ে গেছে, যা আপনার আঙুলের একটি ঝাঁকুনি দিয়ে চালু করা যেতে পারে। ঘরে রান্নার পাত্র অনেক বৈচিত্রযময় হয়ে উঠেছে এবং সুখাবার রান্নাও অনেক সহজ হয়েছে।

যদিও মৃত্পাত্রের ব্যবহার মানুষের জীবনে ক্রমশ কমে যাচ্ছে, কিন্তু পর্যটনের বিকাশের সাথে সাথে, কিছু তিব্বতি রেস্তোরাঁ ঐতিহ্যবাহী মৃত্পাত্র রান্নার পাত্র হিসাবে ব্যবহার করে বিশেষ খাবার তৈরি করতে শুরু করে, যা পর্যটকদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়।

২১ বছর বয়সী লুওসাং ইয়েশি ২০১৮ সালে লাসা দ্বিতীয় ভোকেশনাল অ্যান্ড টেকনিক্যাল স্কুল থেকে স্নাতক হন। সেই বছরের মার্চ মাসে, তিনি মাঝুগংকা জেলায় একটি তিব্বতি রেস্তোরাঁ খুলতে তার সমস্ত সঞ্চয় ব্যবহার করেন। তার তিব্বতি রেস্তোরাঁয় কাঠের ক্যাবিনেটের উপর বিভিন্ন মৃত্পাত্রের রান্নার বাসন রাখা আছে। "মাটির পাত্রের স্যুপের স্বাদ আরো ভাল হয় এবং সহজে ঠান্ডা হয় না।" লুওসাং ইয়েশি বলেছেন যে, তার দোকানের সমস্ত মৃত্পাত্র তাবা গ্রাম থেকে কেনা হয়েছে। তাবা লাসা শহরের মোঝুগংকা জেলার গোংকা থানার একটি ছোট গ্রাম। গ্রামবাসীরা বংশ পরম্পরায় মৃত্পাত্র তৈরি করে আসছেন। জানা গেছে, মোঝুগংকা জেলা ২০০৯ সালে তাবা সিরামিক কারখানা নির্মাণে বিনিয়োগ করে এবং ২০১১ সালে তাবা সিরামিক পেশাদার সমবায় প্রতিষ্ঠা করে। অনেক মৃৎশিল্প বিশেষজ্ঞ এখানে কাজ করেন এবং প্রশিক্ষণ দেন।

তিব্বত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক বিশেষজ্ঞ ইয়েশে তেনজিন বলেন, রান্নার পাত্রগুলি কেবল খাদ্য সংস্কৃতির বাহক নয়, জীবনযাত্রারও সাক্ষী। মালভূমিতে রান্নার পাত্রের পরিবর্তন তিব্বতি জনগণের জীবনের পরিবর্তনকে প্রতিফলিত করে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn