সহজ চীনা ভাষা: সমৃদ্ধ, নিরাপত্তা ও শান্তি সমাজ
বন্ধুরা, আজকের যে ছেংইয়ু আমরা শিখাবো তা হল ‘道不拾遗’। যা চীনের একজন বিখ্যাত ঐতিহাসিক ব্যক্তির সঙ্গে জড়িত, তিনি ছিলেন শাং ইয়াং। শাং ইয়াং চীনের যুধ্যমান রাজ্যের যুগের রাজনীতিবিদ, সংস্কারক, চিন্তাবিদ ও সামরিক কৌশলবিদ। তিনি যুদ্ধের কারণে ছিন রাজ্যে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি ছিন সম্রাটের প্রশংসা পান এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। পরে তিনি বিখ্যাত ‘শাং ইয়াং সংস্কার’ করেন। তিনি ছিন রাজ্যে একাধিক নতুন আইন প্রয়োগ করেছেন, পুরানো আইন ও আভিজাত্যের বিশেষাধিকার বাতিল করেছেন। তিনি মনে করেন, আইনের সামনে সবাই সমান। তিনি কৃষিকাজ উত্সাহিত করেন, যারা বেশি উত্পাদন করে, তাদের শুল্ক কমাতে পারে। তার মতে অভিজাতদের বংশানুক্রমিক ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা উচিত এবং সামরিক যোগ্যতার আকার অনুসারে বিভিন্ন পর্যায়ের উপাধি দেওয়া উচিত। এসব সংস্কার পদক্ষেপ ছিন সম্রাটের জোরালো সমর্থন পেয়েছে এবং দ্রুত তা ছিন রাজ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে।
এক সময় চেষ্টার পর ছিন রাজ্যের সামাজিক পরিবেশ ব্যাপক উন্নতি হয়। জনগণের উত্পাদনের উত্সাহ বৃদ্ধি পায়, সেনাবাহিনীতে কঠোর শৃঙ্খলা তৈরি হয়, সমাজ বেশ সুশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীল হয়ে ওঠে, চুরি ডাকাতি ও অপরাধ অনেক কমে যায়। রাস্তায় কেউ কোনো জিনিস হারিয়ে ফেললেও, অন্য কেউ তা তুলে নিত না। রাতে দরজা বন্ধ করার দরকারও হতো না। এভাবে ছিন রাজ্য দিন দিন সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। পরে যুধ্যমান রাজ্যের যুগে সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হয়ে ওঠে এবং অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোকে একীভূত করে। শাং ইয়াংয়ের চিন্তাধারা চীনের রাজনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে এবং পরবর্তী সম্রাটের দেশ পরিচালনার ভিত্তি হয়ে ওঠে।
শাং ইয়াংয়ের এই সংস্কার থেকে এসেছে ছেংইয়ু ‘道不拾遗’। এর আক্ষরিক অর্থ ‘রাস্তায় জিনিস হারিয়ে গেলেও কেউ তা তুলে নেবে না’। লোকজন এই শব্দটি দিয়ে একটি সমাজের সমৃদ্ধই, নিরাপত্তা ও শান্তির পরিস্থিতি বর্ণনা করে।