সহজ চীনা ভাষা: গরুর জন্য কুছিন বাজানো
চীনা ভাষায় নানা ধরনের ছেং ইয়ু রয়েছে। আজকের ছেং ইয়ু-টি গরুর সঙ্গে জড়িত। তা হল ‘对牛弹琴’, এর মূল অর্থ ‘গরুর জন্য কুছিন বাজানো’। শব্দটি হান রাজবংশের একটি বইয়ের উপকথা থেকে এসেছে।
সেই উপকথায় বলা হয়, অতীতে কং মিং ই নামে একজন সংগীতশিল্পী ছিল। তিনি সুর রচনা করতে জানতেন এবং অনেক বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। এর মধ্যে তার কুছিন সবচেয়ে ভালো। অনেক মানুষ তার কুছিন শুনতে পছন্দ করত। নিজের বাসায় কুছিন বাজানোর পাশাপাশি কং মিং ই বাইরে কুছিন বাজাতেন। একদিন তিনি উপকণ্ঠে যান। সেদিনের আবহাওয়া খুব ভালো ছিল, উপকণ্ঠের দৃশ্যও বেশ সুন্দর, দূরে পাখির শব্দও শোনা যায়। এই সুন্দর পরিবেশ তাকে কুছিন বাজানোর অনুপ্রেরণা দেয়। তখন তিনি আবিষ্কার করেন যে, পাশে একটি গরু ঘাস খাচ্ছে, তাই তিনি গরুর জন্য কুছিন বাজান। প্রথমে কং মিং ই একটি মার্জিত সুর বাজান। তার সুর শুনে সেই গরুর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। সেটি অব্যাহত ঘাস খেয়ে যায়। তিনি মনে করেন, হয়তো সুরটি গরু পছন্দ করে নি, তাই তিনি অন্য একটি প্রফুল্ল সুর বাজান। তখনও গরু কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় নি। কং মিং ই ভাবেন, এত সুন্দর সুর শুনে গরুর কেন কোনো প্রতিক্রিয়া নেই? সুরটি পছন্দ করে না? তাই তিনি বিভিন্ন ধরনের সুর বাজাতে থাকেন, তবে গরু ঘাস খাওয়া ছাড়া আর কোনো সাড়া দেয় না। অবশেষে কং মিং ই কুছিন দিয়ে মশা ও বাছুরের শব্দ অনুকরণ করেন। গরু হঠাৎ ঘাস খাওয়া থামায়, কান উঠায়, লেজ নাড়ায় এবং ছোট ধাপে সামনে পেছনে যেতে থাকে। বেশ মনোযোগ করে কুছিনের শব্দ শোনে। এই অভিজ্ঞতা থেকে মানুষরা কং মিং ইকে বলে, তোমার বাজানো সুর ভালো না- তেমন নয়, বরং গরুটি তা বুঝতে পারে না!
এই উপকথা মানুষদের বলে যে, সংলাপ ও যোগাযোগের সময়ে সেই ব্যক্তির অবস্থা ও বৈশিষ্ট্য এবং বাস্তব পরিস্থিতি অনুসারে টপিক বাছাই করা উচিত। তা নাহলে অনেক ভালো কিছু বললেও অন্য মানুষ বুঝতে পারবে না। এই উপকথা থেকে এসেছে ছেং ইয়ু ‘对牛弹琴’, এখন মানুষজন যা দিয়ে ব্যক্তির অবস্থা ও বৈশিষ্ট্য বিবেচনা না করে কথা বলা মানুষকে ব্যঙ্গ করে।