ছবির বইয়ের শিল্পী ছাই কাও
ছাই কাও মনে করেন, আমরা প্রায়ই অন্তর্দৃষ্টি সম্পর্কে কথা বলি, যার অর্থ হল আপনার জ্ঞানী হৃদয় এবং জ্ঞানী চোখ রয়েছে। বাচ্চাদের এটা রয়েছে, কারণ তারা এটা নিয়েই জন্মায়।
‘গোল্ডেন অ্যাপেল পুরস্কার’ প্রসঙ্গে ছাই কাও বলেন, এই পুরস্কার পেয়ে আমি খুব খুশি। তবে আমি নিজেই এই পুরস্কার নেই নি, দূতাবাস আমার পক্ষ থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করেছে। পুরস্কার পাওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়, আমার কাছে পুরস্কার একটি উত্সব এবং অনুপ্রেরণা মাত্র।
ছাই কাও ১৯৪৬ সালে চীনের ছাংশা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। উষ্ণ এবং সহনশীল পরিবারের পরিবেশ ছাই কাওয়ের জীবন উজ্জ্বল করে।
ছাই কাও মনে করেন, একটি শিশুকে সবচে ভালো পরিবেশ দেওয়া যেতে পারে তা হল প্রথমত পিতামাতাদের কম উপযোগীতাবাদী মনোভাব থাকা উচিত্। যা আমরা আমাদের শিশুদের প্রদান করি তা হল অপেক্ষাকৃত স্বস্তিদায়ক পরিবেশ।
ছাই কাও শিশুদের শিক্ষার বর্তমান সমস্যাগুলো সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করেছেন এবং তিনি আপাতদৃষ্টিতে অকেজো বিষয় শেখার জন্য শিশুদের যথেষ্ট জায়গা ও সময় দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
অনেক বাবা মা মনে করেন, শিশুদের জ্ঞান দেওয়া সবচে গুরুত্বপূর্ণ। তবে জ্ঞান মানে কি? পাঠ্যপুস্তকে যা শেখানো হয়, তা জ্ঞান নয়। জীবনের সবখানে জ্ঞান থাকে।
ছবি আঁকা সবসময়ই ছাই কাওয়ের স্বপ্ন। গত শতাব্দীর ৬০’র দশকে হুনান ফাস্ট নর্মাল ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকত্তোর হওয়ার পর তিনি প্রত্যন্ত এক ছোট গ্রামে চায়নিজ শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। সেই সময় গ্রামীণ শিক্ষক হিসেবে শিক্ষাদানের কাজ ছাড়া, সারা বছরের কৃষি কাজও করতে হতো। সেই গ্রামে ছাই কাও টানা ৭ বছর কাটিয়েছেন। সেখানকার জীবন ভবিষ্যতে ছাই কাওয়ের রচনার উৎসে পরিণত হয়।
১৯৮২ সালে ছাই কাওকে একজন সম্পাদক হিসাবে হুনান চিলড্রেনস আর্ট পাবলিশিং হাউসে স্থানান্তরিত করা হয়। তারপর তাঁর জীবনের সৃষ্টির শীর্ষকাল এসেছে। তাঁর আঁকা বেশ কয়েকটি শিল্পকর্ম ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে এবং অনেক শিশুর প্রিয় বই হয়ে উঠেছে। গত শতাব্দীর ৯০’র দশকে, ‘জাপানি ছবির বইয়ের জনক’ নামে পরিচিত মাতসুই নাও, চীনে চীনা ছবির বইগুলো সৃষ্টি করায় উত্সাহ দিতে ‘লিটল পাইন পুরস্কার’ প্রতিষ্ঠার জন্য তহবিল দান করেছিলেন এবং ছাই কাওয়ের সম্পাদিত চারটি ছবির বই ‘লিটল পাইন পুরস্কারের’ সব পুরস্কার জিতেছিল।
ছাই কাও মনে করেন, সৌন্দর্য একটি খুব বিস্তৃত জিনিস, এর মাধ্যমে মানুষ তার হৃদস্পন্দন অনুভব করতে পারে এবং জীবনে তাদের আস্থা ফিরে পায়। আমি ভাগ্যবান যে,ছবি আঁকায় আগ্রহী হয়েছি এবং আমার জীবনের অভিজ্ঞতাকে পেইন্টিংগুলোতে প্রকাশ করেছিলাম। আশা করি যে, যখন সবাই আমার শিল্পের দিকে তাকাবে, তখন সেখানে কিছু উষ্ণতা থাকবে যা লাফিয়ে বেরিয়ে আসবে এবং আপনাকে আলিঙ্গন করবে।