বাংলা

হ্য চোংইয়াও এবং তাঁর চলচ্চিত্র জাদুঘর

CMGPublished: 2024-05-16 11:16:42
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চলচ্চিত্র এমন একটি পেশা, যাতে ৭৪ বছর বয়সী হ্য চোং ইয়াও তার জীবনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেছেন। প্রথমে সিনেমা দেখানো থেকে শুরু করে, সিনেমা-সম্পর্কিত পুরানো বস্তু সংগ্রহ করা এবং তারপর একটি চলচ্চিত্র জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা পর্যন্ত, হ্য চোং ইয়াও মোট ৫০ বছর ধরে চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত আছে। আজকের অনুষ্ঠানে চলুন দেখে নেওয়া যাক এই গ্রামীণ চলচ্চিত্র প্রজেকশনিস্টের ‘আলো ও ছায়া’-র জীবন।

১৬ বছর বয়সে হ্য চোং ইয়াও তাঁর জীবনের প্রথম চলচ্চিত্র ‘দা হোয়াইট হেয়ার্ড গার্ল’ দেখেন। চলচ্চিত্রটি তাঁর মনে দারুণ প্রভাব ফেলে। ১৯৭৩ সালে স্থানীয় কমিউন চলচ্চিত্র দল প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভালো লিখতে ও আঁকতে পারার কারণে, তাকে চলচ্চিত্র দলের একজন চলচ্চিত্র প্রজেকশনিস্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হন। তখন থেকে তার জীবনের দীর্ঘ ৫০ বছর কেটেছে ‘আলো ও ছায়া’র মধ্যে।

হুপেই প্রদেশের তাং ইয়াং শহরের ইউ সি থানার চলচ্চিত্র জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা হ্য চোং ইয়াও,একটি যন্ত্রের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘১৯৭৩ সালে যখন আমি প্রথম চলচ্চিত্র দলে যোগ দেই, তখন এই যন্ত্রটি ব্যবহার করেছিলাম। চলচ্চিত্র দলে যোগ দেওয়ার পর, সংশ্লিষ্ট নেতারা আমাদেরকে প্রজেক্টর ও জেনারেটরসহ একটি সম্পূর্ণ সেট সরবরাহ করেন এবং আমাদেরকে এই মর্মে নির্দেশনা দেন যে, এসব যন্ত্রের খুব ভালো করে যত্ন নিতে হবে, যেমন আমরা আমাদের নিজেদের জীবনের যত্ন নেই। সেই সময় আমরা সত্যিই উত্তেজিত ছিলাম। এটা বলা যেতে পারে যে, আমরা দিনরাত এসব যন্ত্র নিয়ে পড়ে থাকতাম।”

সেই যুগে, সিনেমা দেখানো একটি সুন্দর অথচ কঠিন কাজ ছিল। বেশিরভাগ স্ক্রিনিং সাইটগুলো পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত ছিলো। হ্য চোং ইয়াও তার দলের সঙ্গীকে নিয়ে, ২০০ কিলোগ্রামের বেশি ওজনের যন্ত্রপাতি সরঞ্জাম বহন করতে, একটি কাঁধের খুঁটি ও দুটি ঝুড়ি ব্যবহার করতেন। বৃষ্টি না-থাকলে তাঁরা প্রায় প্রতিদিনই সিনেমা দেখাতেন।

হ্য চোং ইয়াও বলেন, ‘একবার পাহাড়ে সিনেমা দেখানোর দায়িত্ব পাওয়ার পর, আমি মূলত বাইরের জগতের সাথে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছিলাম। যখন আমার দুটি সন্তানের জন্ম হয়, তখনও আমি সেখানে ছিলাম। বড় ছেলের জন্মের সপ্তাহ খানেক পর আমি জানতে পারি যে, আমি বাবা হয়েছি।’

যদিও কাজটি সহজ ছিল না, একজন প্রজেকশনিস্ট হিসাবে, তিনি যেখানেই যান, সেখানকার বাসিন্দারা তাকে স্বাগত জানান। কমিউন মোট ৭টি চলচ্চিত্র দল প্রতিষ্ঠা করেছিল। যারা বছরে ১৫০০টিরও বেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করতো। হ্য চোং ইয়াও একসময় প্রজেকশন দলের দলনেতা হন। যখনই সূর্য অস্ত যায়, গ্রামবাসীরা চারপাশে জড়ো হয়ে সিনেমা শুরুর অপেক্ষায় থাকেন, তখনই হ্য চোং ইয়াওয়ের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত।

হ্য চোং ইয়াও বলেন, “আমাদের চলচ্চিত্র দলের সদসরা আজকালকার তারকার মতো। যেখানে আমরা যাই, সেখানে শিশুরা চিত্কার করে বলে, ‘আপনারা এখানে সিনেমা দেখাতে এসেছেন!’ সেই সময় তুলনামূলকভাবে কম সিনেমাহল ছিল। এটা বলা যেতে পারে যে, সিনেমা দেখা ছিল বসন্ত উত্সব উদযাপনের মতো। কৃষকরা এর জন্য গভীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকতেন।”

তবে, গত শতাব্দীর ৮০ ও ৯০-এর দশকে টেলিভিশন সহজলভ্য ও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। চলচ্চিত্র দেখানোর কাজটা ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা হারাতে থাকে। প্রজেকশনিস্টরা একের পর এক পেশা পরিবর্তন করা শুরু করেন। অনেক চলচ্চিত্র দল ভেঙেও দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েও, হ্য চোং ইয়াও তাঁর প্রিয় চলচ্চিত্র পেশা ছেড়ে দেননি, বরং নতুন পথ খুঁজতে শুরু করেন।

123全文 3 下一页

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn