বাংলা

চীনের কুই চৌ প্রদেশের কান্ট্রি ফুটবল সুপার লীগ

CMGPublished: 2023-07-06 11:23:04
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

‘শাওলিন সকার’ নামের মুভিতে বাস্তব জীবনে নানা ক্যারিয়ারের সঙ্গে জড়িত এক দল মানুষ তাদের ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করেছেন। একইভাবে চীনের কুইচৌ প্রদেশের রোংচিয়াং জেলার কান্ট্রি ফুটবল সুপার লীগের মাঠে সমাজের নানা পেশা থেকে আসা গ্রামীণ খেলোয়াড়েরা তাদের ফুটবল স্বপ্ন পূরণ এবং গ্রামের মর্যাদার জন্য ফুটবল মাঠে লড়াই করছেন। তাদের মধ্যে কেউ মাছ বিক্রি করেন, কেউ শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন, এবং কেউ আবার নির্মাণ সাইটে কাজ করেন।

বত্রিশ বছর বয়সী শি সিয়েনশি প্রস্তুত খাবার বিক্রি করে থাকেন। প্রতি সকালে বিছানা থেকে উঠার পর তিনি খাবার তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন। তবে যেদিন খেলা থাকে সেদিন তিনি জার্সি পরে কাজ করেন এবং অধিনায়কের ডাকের অপেক্ষায় থাকেন।

শি সিয়েনশি বলেন, ‘আমরা কখনও কখনও অধিনায়কের নেতৃত্বে প্রতিযোগিতার পরিকল্পনা এবং খেলার কৌশল নিয়ে আলোচনা করি, তাই আমাকে সব সময় প্রস্তুত থাকতে হয়।’

কান্ট্রি ফুটবল সুপার লীগের প্রতিযোগিতা শুরুর পর তার দল প্রতিটি খেলার আগে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেয় এবং খেলার পরেও সময় মতো তাদের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে।

কান্ট্রি ফুটবল সুপার লীগ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় মোট ২০টি টিম। এসব দলকে রাউন্ড-রবিন ম্যাচ এবং নকআউট ম্যাচের জন্য গ্রুপ এ এবং বি-তে বিভক্ত করা হয়েছে। তবে আগামী ২৯ জুলাই সুপার লীগের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে। শি সিয়েনশি’র টিম ইতোমধ্যে গ্রুপ এ-তে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে।

তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে শীর্ষ চারটি টিমের শক্তিই কাছাকাছি। যারা প্রতিটি খেলায় ভালো করতে পারবে, তাদেরই বিজয়ের সর্বোচ্চ সুযোগ থাকবে।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে ফুটবল খেলে আসা শি সিয়েনশি জোর দিয়ে বলেন, ফুটবলের প্রতি তার ভালবাসাকে স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা যাবে না। তিনি শৈশবকাল থেকেই গ্রামবাসীদের প্রভাবে ফুটবল খেলতে শুরু করেন। কান্ট্রি ফুটবলের জনপ্রিয়তা তার মনে অভূতপূর্ব শক্তিশালী আবেগ জাগিয়েছে।

শি সিয়েনশি’র জন্য প্রস্তুত খাবার তৈরি যেমন একটি জীবন, তেমনি ফুটবল খেলাও তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তার মতে ফুটবল খেলাকে জীবনকে ব্যাহত করতে দেয়া উচিৎ নয় এবং জীবনের কারণে ফুটবল খেলাও বন্ধ করা উচিৎ নয়।

তিনি বলেন, ‘আমার কয়েকজন ভাই ফুটবল খেলেন এবং আমার দুই ছেলেও ফুটবল খেলে।’

ফুটবলকে বলা যেতে পারে রোংচিয়াং জেলার ‘এক নম্বর খেলা’। তিন লাখ ৮৫ হাজার জনসংখ্যার এই ছোট্ট জেলাটি শুধুমাত্র কুইচৌ প্রদেশের শিশুদের জিমন্যাস্টিকসের জন্মস্থান নয়, বরং এটি দেশের প্রথম সারির ফুটবলের দৃষ্টান্তমূলক স্থানও বটে।

শি শিবি নির্মাণ সাইটে কাজ করে থাকেন। তিনি ফুটবল খেলতে খুব পছন্দ করেন এবং খেলার কৌশল নিয়ে গবেষণা করতেও ভালোবাসেন। তিনি জানান, ছোটবেলায় তার ফুটবল খেলার জুতো ছিল না। গ্রামের কাছাকাছি একটি নর্মাল কলেজ আছে। মাঝেমাঝে তিনি বন্ধুদের সঙ্গে ওই কলেজের ছাত্রদের ফেলে দেওয়া স্নিকারগুলো তুলে আনতেন। মেরামত করার পর সেগুলো দিয়ে তিনি ফুটবল খেলতেন।

আস্তে আস্তে টেলিভিশন জনপ্রিয় হওয়ার পর শি শিবি টিভিতে ফুটবল খেলা উপভোগ করা শুরু করেন এবং বিখ্যাত খেলোয়াড়দের থেকে খেলার কৌশল শিখে ফেলেন।

শি শিবি বলেন, ‘পরে অনেক স্কুলে ফুটবল মাঠ নির্মিত হয়েছে এবং আমাদের খেলার পরিবেশ ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছে। আমরা ভালো কৌশলও রপ্ত করছি।’

ব্যস্ততা থাকলেও ত্রিশ বছর বয়সী শি শিবি প্রত্যেক সপ্তাহে টিমের সদস্যদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তিনি বিশ্বাস করেন, অনুশীলন মানুষকে নিখুঁত করে তুলে।

লিলি/এনাম

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn