মৃত স্বামীর ইচ্ছা পূরণে অশীতিপর বৃদ্ধার তিব্বত ভ্রমণ!
মা বাবাকে খুব মিস করছে দেখে ছেলে সোং চিয়েন হুই মায়ের জন্য কিছু করতে চান। তিনি মাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কোথাও ঘুরতে যেতে চান কি?’ মা উত্তরে বলেন, ‘তিব্বত’। সোং চিয়েন হুই বুঝতে পারেন, মা বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে চান।
তবে তিব্বত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে অবস্থিত। সোং চিয়েন হুই মনে করেন, ওখানে গিয়ে মা উচ্চতা-জনিত অসুস্থতায় ভুগতে পারেন। কিন্তু মা তার নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
এমতাবস্থায় চেং চিং ফেই গোপনে তিব্বত যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে ছেলে তার সঙ্গে তিব্বত গেলে অনেক নিরাপদ বোধ করবেন তিনি।
সোং চিয়েন হুই একজন মোটরসাইকেল রাইডার। মাঝেমাঝে তিনি বন্ধুদের সঙ্গে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। এবার তিনি মাকে নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে তিব্বতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি নিজ উদ্যোগে মোটরসাইকেলের পিছনের সিটে একটি সিট-বেল্ট স্থাপন করেন, যাতে মোটরসাইকেল চালানোর সময় মায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
পুরোটা পথ জুড়ে সোং চিয়েন হুই তার মায়ের দিকে খেয়াল রাখেন। মাকে বার বার জিজ্ঞেস করেন, শরীরে কোনো সমস্যা দেখা দিয়েছে কিনা, মাথা ব্যথা আছে কিনা। তার মনে তখন মায়ের নিরাপত্তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই ছিলো না।
একবার নদী পার হওয়ার সময় মাকে রক্ষা করতে গিয়ে সোং চিয়েন হুই আঘাত পান। চেং চিং ফেই তা দেখে খুব কষ্ট পান। তিনি মনে করেন, তিনি ছেলের জন্য বিশাল ঝামেলা সৃষ্টি করেছেন। আরও সামনে এগিয়ে যাবেন কিনা – তা নিয়ে তিনি দ্বিধায় পড়ে যান।
সোং চিয়েন হুই মায়ের মানসিক পরিবর্তন বুঝতে পেরেছেন। তাই তিনি আগের চেয়ে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তিনি ক্যামেরা দিয়ে মায়ের সঙ্গে তিব্বত যাত্রার অনেক অভিজ্ঞতা রেকর্ড করেছেন।
সতেরো দিন পর মোটরসাইকেল চালিয়ে দু’হাজারেরও বেশি কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে তারা তাদের জন্মস্থান ছেং তু থেকে তিব্বতে পৌঁছান।