বাংলা

চীনা অভিনেত্রী চৌ তোং ইউ

CMGPublished: 2023-05-04 14:11:47
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চৌ তোং ইউ ১৯৯২ সালে হ্যবেই প্রদেশের একটি সাধারণ কর্মজীবী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মা’র খুব প্রথাগত ও কঠোর শৃঙ্খলার অধীনে ছোটবেলা থেকেই তিনি সংবেদনশীল ও লাজুক হয়ে বেড়ে ওঠেন।

২০১০ সালের শুরুর দিকে যখন চৌ তোং ইউ উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীতে লেখাপড়া করছিলেন, তখন তিনি ‘কাঁটাগাছের নীচে’ মুভির প্রধান নারী চরিত্র নির্বাচন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। মুভির পরিচালক হচ্ছেন চীনের খুব বিখ্যাত পরিচালক চাং ই মৌ। অবশেষে তাকে বেছে নিয়েছেন পরিচালক এবং মুভি’র প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন। চৌ তোং ইউ এ মুভি’র মাধ্যমে ১৪তম হুয়াবিও ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডসের শ্রেষ্ঠ নতুন অভিনেত্রীর পুরস্কার এবং ৫৬তম স্পেনের ভাল্লাদোলিদ ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার জিতে নিয়েছেন।

চলচ্চিত্রাঙ্গনে প্রবেশের শুরুতে তিনি মঞ্চে আসতে খুব ভয় পেতেন। মঞ্চে দাঁড়ালে তিনি কাঁপতে থাকতেন। একরাশ ভয় নিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা আমাকে উপহাস করবেন না, আমি তরুণ।

এখন পর্যন্ত কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে চৌ তোং ইউ ধীরস্বরে স্নিগ্ধভাবে কথা বলে আসছেন। বাইরে থেকে তিনি খুব দক্ষতার সাথে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারেন, যোগাযোগও করতে পারেন, তবে চৌ তোং ইউ গোপনে মনের কথা প্রকাশ করেন যে ‘শুধু নার্ভাস না হওয়ার ভান করেছি, আসলেই কথা বলতে তেমন সুদক্ষ নই আমি। আমার চাপ বেশি এবং ঠিক উত্তর দিতে পারি না বলে উদ্বিগ্ন থাকি।’

অন্যদিকে, জীবনে তিনি খুব প্রাণবন্ত এবং ইন্টারনেটে নিজের অনুরাগীদের সঙ্গে স্বাধীনভাবে বিনিময় করে থাকেন। তিনি বলেন, ‘আগে নিজের ওপর অন্যদের উপহাস বা বাজে কথা আমি শুনতে বা দেখতে ভয় পেতাম, আস্তে আস্তে প্রশংসা বা সমালোচনা- যাই হোক- আমি সবকিছু’র সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেছি।’ চৌ তোং ইউ এই সহজ কথা দিয়ে বড় হওয়া বা পরিপক্ব হওয়ার প্রক্রিয়া বর্ণনা করেন।

আগের চেয়ে বর্তমানে চৌ তোং ইউ আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেছেন। তিনি বলেন, অব্যাহতভাবে পড়াশোনা করলেই ক্রমাগত উন্নতি করা যায়। ক্রমাগত উন্নতি অর্জন করলেই আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, ‘অভিনয় আসলেই কেবল একটি কাজ বা চাকরি। সঠিকভাবে এ কাজকে দেখা উচিৎ।’ আগে তিনি অন্যদের মনোযোগের দৃষ্টিতে ভয় পেতেন। এখন তিনি সরাসরি এবং শান্তভাবে নিজের পেশার সঙ্গে মুখোমুখি হতে পারেন। তিনি মনে করেন, একজন অভিনেত্রী হলেও নিজের জীবন উপভোগ করার অধিকার আছে। তাই তিনি সাধারণ তরুণীর মতো শপিং মলে ঘুরে বেড়ান এবং রেস্তোরাঁয় খেতে যান।

তিনি স্বীকার করেন, আগে আমার চাপ বেশি ছিল। কারণ আমি পরিবার তথা জন্মস্থানের জন্য গৌরব অর্জন করতে চেয়েছিলাম। এখন তিনি নিজেকে একটু অলস বলে মনে করেন। তিনি মনে করেন, কারণ অনেক অভিজ্ঞতা কল্পনার বাইরে, সবকিছু তার ইচ্ছা মতো চলতে পারে না এবং তিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। তিনি ‘স্বাধীন’ এই শব্দ দিয়ে নিজের বর্তমান জীবনকে বর্ণনা করেন। যে কোনো সুযোগের অপেক্ষায় প্রস্তুত তিনি।

চীনের বিখ্যাত পরিচালক চাং ই মৌ’র মুভিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে প্রবেশ থেকে গোল্ডেন হোর্স অ্যাওয়ার্ডসের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর খেতাব পর্যন্ত, এখন চৌ তোং ইউ’র নামের পাশে বেইজিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি শব্দটিও যুক্ত হয়েছে। তবে, তার ধারণা তিনি কখনোই পরিবর্তন করেননি।

সম্প্রতি চৌ তোং ইউ অভিনীত ‘বরফ গলা’ মুভিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রিক্স ইউএন সার্টান রিগার্ড ইউনিটে অন্তর্ভুক্ত হয়। নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি আস্তে আস্তে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র মঞ্চে চলে যাচ্ছেন। ‘কাঁটাগাছের নীচে’ নামের চাং ই মৌ’র পরিচালিত মুভিতে অভিনয়ের পর বিদেশি গণমাধ্যমের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চৌ তোং ইউ সাংবাদিকদের প্রশ্ন বুঝতে পারেননি এবং ইংরেজিতে উত্তর দিতে পারেননি।

তবে, তিনি ব্রিকস ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে চীনা ভাষায় বক্তৃতা দিয়েছিলেন। তখন থেকে তিনি ইংরেজি শিখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন। অন্যরা যখন ছুটিতে থাকেন, তখন তিনি হোটেলে পাগলের মতো ইংরেজি শব্দগুলো আবৃত্তি করেন এবং প্রতিদিন অনুশীলন পুনরাবৃত্তি করেন। দিনের পর দিন এবং বছরের পর বছর এমন কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে চৌ তোং ইউ আজ আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিতরণের মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন এবং অবশেষে সম্পূর্ণ ইংরেজিতে বিদেশী সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। চমৎকার ইংরেজি অভিব্যক্তির কারণে তিনি আরও বেশি পারফর্মেন্সের সুযোগও পেয়েছেন।

লিলি/এনাম/রুবি

首页上一页123 3

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn