ক্যান্টনিজ অপেরাকে আরও জনপ্রিয় করে তোলার নতুন প্রচেষ্টা
মঞ্চে থ্রি-ডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি রোবট ‘লুও চিয়া ইং’ নিখুঁতভাবে পারফর্ম করেছে। মঞ্চের নীচে রয়েছেন একজন বিখ্যাত ক্যান্টনিজ অপেরা অভিনেতা লুও চিয়াং ইং। তিনি একজন শিল্প পরিকল্পনাবিদ এবং পরিচালক। দর্শকদের মধ্যে বসে ‘নিজের’ দিকে তাকালে একটি দুর্দান্ত অনুভূতি হয়।
সম্প্রতি সৃজনশীল ক্যান্টনিজ অপেরা হংকং ওয়েস্ট কাউলুন কালচারাল ডিসট্রিক্টের অপেরা কেন্দ্রে মঞ্চস্থ হয়। এতে একজন দারুণ সঙ্গীতজ্ঞের বাসায় কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় অতীতে ফিরে যাওয়ার কাহিনী ফুটে ওঠে। তরুণ সংগীতশিল্পী প্রাচীন পৈতৃক বাড়ির চিলে কোঠায় থাকেন, যেখানে তাঁর প্রপিতামহ ক্যান্টনিজ অপেরার সাথে সম্পর্কিত অনেক কিছু রেখেছিলেন। পর্দা ওঠার পর এ সঙ্গীতজ্ঞ অতীতের সময়ে ফিরে যান এবং অনেক ক্লাসিক্যাল ক্যান্টনিজ অপেরা উপভোগ করেন। এই অপেরায় প্রপিতামহের চরিত্রে অভিনয় করেছে একটি রোবট।
পরিচালক লুও চিয়া ইং বলেন, প্রযুক্তিবিদরা আমাকে চিত্রনাট্য অনুযায়ী একবার অভিনয় করতে বলেছেন, কীভাবে আমার হাত সরাতে হবে, কীভাবে আমার মুখের অভিব্যক্তি দেখাতে হবে এবং তারপরে এটি রেকর্ড করে ভিডিও টেপ করতে হবে।
লুও চিয়া ইং বলেছেন, তাঁর মুখের অভিব্যক্তি, ভয়েস এবং শরীরের নড়াচড়া অনুসরণ করে রোবট কোম্পানি থ্রি-ডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার মতো একই সাইজের একটি রোবট তৈরি করেছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে তাকে দিয়ে অভিনয় করিয়েছে।
এই প্রথম কোনো রোবট হংকংয়ে প্রদর্শিত ক্যান্টনিজ অপেরায় অভিনয়ে অংশগ্রহণ করেছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রাচীন শিল্পের সমন্বয়ে ঐতিহ্যবাহী অপেরার উদ্ভাবনী অভিব্যক্তি অনেক হংকংবাসীকে আকৃষ্ট করেছে। লুও চিয়াং ইংয়ের ভাল অংশীদার এবং হংকং ওয়েস্ট কাউলুন কালচারাল ডিসট্রিক্ট পারফরমেন্স আর্ট ডিরেক্টর চোং চেন চেন এই আইডিয়ার মূল নায়ক। তিনি নাটকটির পরিচালকও বটে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন যে, নাটকটির শুরু থেকেই প্রতিবার পরিবেশনার সময় প্রতিটি ভেন্যু পূর্ণ ছিল, এবং তাদের অনেকেই তরুণ-তরুণী।
যদিও উচ্চ প্রযুক্তির উপাদান আকর্ষণীয়, তবুও লুও চিয়াইং-এর হৃদয়ে ক্যান্টনিজ অপেরা সংস্কৃতির উত্তরাধিকার সর্বদাই প্রথম স্থানে রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ঐতিহ্যগত এবং উদ্ভাবনী উপাদানকে কীভাবে একত্রিত করা যায়, তা খুব বিশেষ এবং চিন্তাযোগ্য বিষয়। উত্তরাধিকার হল কর্তা, প্রযুক্তি হল সহায়ক, উত্তরাধিকারের পরিবর্তে প্রযুক্তিকে প্রধান ভূমিকা পালন করতে দেয়া যাবে না। দর্শকরা যখন থিয়েটারে প্রবেশ করে, তারা যা দেখতে চায়, তা হল পুরো নাটকের স্তর এবং মঞ্চে অভিনেতাদের আসল অভিনয়ের মান।’