বাংলা

চীনের দীর্ঘতম টিভি নাটক

CMGPublished: 2022-01-27 14:38:38
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

‘বাইরে থেকে আসা কনে এবং স্থানীয় বর’ নামের এ টিভি নাটকটি টানা ২১ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন-ভাবে চলছে এবং সবমিলিয়ে মোট চার হাজার পর্ব প্রচারিত হয়েছে। একে সবচেয়ে দীর্ঘ ডোমেস্টিক টিভি নাটক বলা যায়। চীনের টিভি নাটকের ইতিহাসে এটি দীর্ঘতম সময় ও সবচে বেশি পর্ব তৈরি করেছে।

এ টিভি নাটক কুয়াং তোং বেতার ও টিভি কেন্দ্রের উদ্যোগে ক্যান্টোনিজ ভাষায় নির্মিত। আধুনিক পারিবারিক জীবনকে থিম হিসেবে তৈরি করা হয়েছে এই সিরিজ। এই নাটকের গল্পটি এমন। কুয়াংচৌ শহরের পুরানো অঞ্চলে অবস্থিত একটি পরিবারের মোট চারটি ছেলে আছে। তারা যথাক্রমে চীনের বিভিন্ন জায়গার চারটি মেয়েকে বিয়ে করে। জীবনযাত্রার অভ্যাস এবং সাংস্কৃতিক পটভূমির পার্থক্যের কারণে তাদের মধ্যে ধারাবাহিক নানা ঘটনা ঘটে।

জাতীয় বেতার ও টেলিভিশন সাধারণ ব্যুরোর টিভি নাটক বিভাগের প্রধান চৌ চি হোং বলেন, এই টিভি নাটকটি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এবং সামাজিক পরিবর্তন এবং সময়ের জোয়ারকে ছোট আকারে উপস্থাপন করেছে।

টিভি নাটকের মাধ্যমে সময়ের উন্নয়ন ও পরিবর্তন এবং মানুষের সুখ-দুঃখ ব্যাখ্যা করা একটি শিল্প হয়ে উঠেছে। কুয়াংতোং বেতার ও টিভি কেন্দ্রের পার্টি কমিটির সম্পাদক এবং স্টেশনের পরিচালক ছাই ফু ছিং বলেন যে, এই টিভি নাটকের থিম ও বিষয়বস্তু সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ক্রমাগত প্রসারিত হয়েছে, গল্প বলার পদ্ধতি জাতীয় উন্নয়ন ‌এবং সামাজিক জীবনকে একীভূত করেছে। এতে সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রতিফলিত হয়েছে। যা এই টিভি নাটকের দীর্ঘস্থায়ীভাবে জনপ্রিয়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা ও অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।

২১ বছর ধরে এই টিভি নাটক বরাবরই জনগণের গল্প বলেছে। ভাষা থেকে সংগীত পর্যন্ত, পোশাক থেকে মেক-আপ পর্যন্ত, নাটকটি প্রামাণিক লিংনান সাংস্কৃতিক শৈলীকে প্রকাশ করেছে; যা ‘অনুরাগীদের দৃষ্টি আকর্ষণের’ একটি মূল কারণ হয়ে উঠেছে।

চায়না ফেডারেশন অফ লিটারারি অ্যান্ড আর্ট সার্কেলের টিভি ও শিল্প কেন্দ্রের উপ-প্রধান চাও থোং মনে করেন, চার হাজার পর্বের নাটকটি জীবনের উত্থান-পতন এবং প্রতিবেশীর ভালবাসায় পূর্ণ অনুভূতি, চীনা জনগণের শক্তিশালী নস্টালজিয়া জটিলতা এবং একে অপরকে সমর্থন করার জাতীয় মেজাজ পরিপূর্ণ ও প্রাণবন্তভাবে প্রকাশ পেয়েছে। নাটকটি স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক ও আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যসহ সামাজিক রেকর্ডের একটি নতুন শৈলী হয়ে উঠেছে এবং লিংনান সংস্কৃতি প্রচার ও কুয়াংতোংয়ের গল্প বলার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করেছে।

চীন টিভি নাটকের সবচে বড় প্রযোজক ও সম্প্রচারকারী রাষ্ট্র। টিভি নাটক জনগণের মধ্যে খুব জনপ্রিয় হওয়া ছাড়াও, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রাণবন্ত শক্তিশালী শিল্প। নতুন যুগে টিভি নাটকের উচ্চ মানের উন্নয়ন কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়? বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, এই নাটকটি প্রয়োজনীয় অনুপ্রেরণা দিয়েছে।

চৌ চি হোং বলেন, ২১ বছরের অনুশীলন প্রমাণ করে যে, সাহিত্য ও শৈল্পিক কাজের জন্য জীবনীশক্তির উৎস হল মানুষ ও তার জীবনে ফোকাস করা। সর্বদা মানুষ-কেন্দ্রিক সৃজনশীল ব্যবস্থা মেনে চলা টিভি সাহিত্য ও শিল্পের জন্য মৌলিক দিকনির্দেশনা।

ভাল বিষয়বস্তু বেঁচে থাকা ও জীবনের ভিত্তি। যতক্ষণ আপনি আপনার হৃদয় ও আন্তরিকতা লালন করবেন, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলবেন, সামাজিক হটস্পটগুলোতে মনোযোগ দেবেন এবং সাধারণ মানুষের জীবনের প্রতি গুরুত্ব দেবেন, ততক্ষণ বলার মতো অফুরন্ত ভালো গল্প থাকবে। চায়না ফেডারেশন অফ রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন সোশ্যাল অর্গানাইজেশনের ডেপুটি মহাসচিব চৌ রান ই বলেন, এই নাটকটি মানুষের দৃষ্টিকোণ এবং মানুষের অনুভূতি থেকে তৈরি করার উপর জোর দেয়। গত ২১ বছরে এই টিভি নাটকের আসল উদ্দেশ্য পরিবর্তিত হয়নি। এটি সামাজিক সুবিধাকে প্রথম স্থানে রেখেছে। এভাবেই দর্শকদের মন জয় করেছে, বাজার জিতেছে এবং সময়ও জিতেছে।

চীনের জাতীয় বেতার ও টেলিভিশন সাধারণ ব্যুরোর উন্নয়ন ও গবেষণা কেন্দ্রের পার্টি কমিটির সম্পাদক চু ইয়েন নান বলেন, বাস্তব জীবন হল সাহিত্য ও শিল্পের সবচে সমৃদ্ধ সৃজনশীল উত্স। টিভি নাটক রচনাকে সময়ের সাথে ভাগ করে নেওয়া উচিত; যাতে নতুন যুগে চীনা গল্পগুলো ভালভাবে বলা যায়।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn