বাংলা

হংকং ও চীনের মুলভূখণ্ডের তরুণ-তরুণীদের সংযোগকারী সেতু হতে চাই: চৌ বাই খাং-China Radio International

criPublished: 2021-03-04 13:54:40
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

২০ বছর আগে কাজ করতে জনাব চৌ বাই খাং প্রথম চীনের মুলভূভাগে আসেন। সেই সময় তিনি ভাবতেন হংকং তার নিজের বাসা; তাই কাজ শেষ করে তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হংকংয়ে ফিরে যাওয়ার চিন্তা করতেন। বর্তমানে তিনি কাজের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে কুয়াংতং-হংকং-ম্যাকাও বৃহত্তর উপসাগরীয় এলাকার মুলভূভাগের শহরে স্থানান্তর করেছেন। তিনি বলেন, ২০ বছর আগে আমার মন-মেজাজ একটু ভিন্ন রকম ছিলো। সেই সময় আমি নিজেকে হংকংয়ের অধিবাসী মনে করতাম। যেখানে যাই না কেন, আমি হংকংয়ে ফিরে যেতে চাইতাম। এখন আমি চীনের মুলভূভাগে নিজের কাজ উন্নত করতে চাই।

বর্তামানে, চৌ বাই খাংয়ের বয়স ৪০ বছর। ছোটবেলা থেকে একটি চলচ্চিত্রের স্বপ্ন লালন করেন তিনি। প্রথমে হংকংয়ে মাইক্রো চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপন শুটিংয়ের কাজ শুরু হয়। তাঁর উদ্দেশ্য হলো চলচ্চিত্র পরিচালক হওয়া। তারপর তিনি কুয়াংচৌয়ে অবস্থিত চুচিয়াং চলচ্চিত্র মুভি স্টুডিওতে কাজ করার পাশাপাশি তিনি লেখাপড়াও চালিয়ে নেন। ২০১৩ সালে তিনি হংকংয়ে নিজের কোম্পানি গঠন করেন।

মুলভূভাগ ও হংকংয়ে চৌ বাই খাং খুব পরিচিত। চলচ্চিত্র ও টিভি নাটকের ক্ষেত্রে তিনি পার্থক্য তুলে ধরে বলেন, হংকংয়ের চলচ্চিত্র ও টিভি নাটক শিল্প তুলনামূলকভাবে পরিপক্ব; এর সুস্পষ্ট নিময় ও প্যাটার্ন আছে। মুলভূভাগের চলচ্চিত্র ও টিভি নাটকের বাজার অনেক বড়। সম্প্রতি ইন্টারনেটের জনপ্রিয়তা চলচ্চিত্র বাজারের জন্য অনেক সুবিধাজনক হয়েছে। তাই চৌ বাই খাং মুলভূখণ্ডে নিজের কাজ উন্নয়নের সংকল্পে অটুট থাকেন।

পরিবহন বা যোগাযোগ সুবিধা হলো যে কোনো অঞ্চলের উন্নয়নের প্রতীক। ক্যামেরায় সহজে দৃশ্য ধারণ করা হলো পরিচালকদের দৈনন্দিন কাজ। কুয়াংতং-হংকং-ম্যাকাও বৃহত্তম উপসাগরীয় এলাকার সুবিধাজনক পরিবহন প্রসঙ্গে চৌ বাই খাংয়ের উপলব্ধি গভীর। তিনি বলেন, আমি এখন ফোশানে বাস করি। শহরের কেন্দ্রে থাকার বাস্তবতা অনুভব করি। এখান থেকে সব জায়গায় যাওয়া সহজ ও সুবিধাজনক।

২০ বছর আগের তুলনায় মুলভূভাগের শহরাঞ্চলে দুর্দান্ত পরিবর্তিত হয়েছে। এসব পরিবর্তন শুধু অবকাঠামোগতই নয়, বরং মানুষের চিন্তা, কর্ম ও ব্যবসার পরিবেশেও প্রতিফলিত হয়। একজন শিল্পী হিসেবে জনাব চৌ বাই খাং মনে করেন, বর্তমানে তরুণ-তরুণীদের সামগ্রিক মান অনেক বেড়েছে। তারা প্রাণবন্ত ও পেশাদার মানসিকতার। মানুষের প্রতি মানুষের আস্থাও বৃদ্ধি পেয়েছে। মুলভূখণ্ডে আমি অনেক ভালো বন্ধু পেয়েছি।

চলচ্চিত্র ও টিভি নাটক খাতে ২০২০ সালের আকস্মিক মহামারী বিরাট আঘাত হানে। চৌ বাই খাংয়ের নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণকাজও শুরু করা সম্ভব হয় নি। তবে, তিনি টেলিফোনে অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছেন। তিনি মনে করেন, মুলভূভাগে মহামারীর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অনেক যৌক্তিক। খুব দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে এসেছে মহামারী। বসন্ত উত্সবের পর তিনি নিজের নতুন চলচ্চিত্র তৈরির প্রস্তুতি নিয়েছেন।

চৌ বাই খাংয়ের চোখে মুলভূভাগে চলচ্চিত্র ও টিভি নাটক শিল্পের উন্নয়নের প্রবণতা স্পষ্ট। হংকংয়ের তরুণ-তরুণীদের এ সুযোগ কাজে লাগানো উচিত ও এতে অংশগ্রহণ করা উচিত্ বলে মনে করেন তিনি।

তিনি মনে করেন, সবেমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি পাওয়া তরুণ-তরুণীদের জন্য সবচে কঠিন ব্যাপার হলো- শুরুতে নানা সম্পদের অভাব থাকে। হংকং থেকে অপরিচিত মুলভূভাগে এসে তাদের চাকরি করা একটু কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রবীণ ব্যক্তি চৌ বাই খাং দীর্ঘকাল ধরে হংকংয়ের তরুণ-তরুণীদের সাহায্য করে আসছেন। তিনি নিজের কোম্পানির মাধ্যমে যারা মুলভূভাগে কাজ করতে চান- তাদেরকে কাজের সুযোগ করে দেন। তিনি বলেন, সাধারণ একটি চলচ্চিত্রের প্রায় ৪০ বা ৫০টি কাজের সুযোগ আছে, আমি হংকংয়ের তরুণ-তরুণীদের জন্য প্রায় ১০টি সুযোগ সংরক্ষণ করি।

তিনি আবিষ্কার করেন যে, অধিকাংশ মেয়েরা মেকআপ আর্টিস্টের দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে এবং ছেলেরা পরিচালক গ্রুপ অথবা সম্পাদনা দলে যোগ দিতে চায়। যারা অনুশীলন করার জন্য তার কোম্পানিতে আসেন তাদের আগ্রহ অনুযায়ী বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে লেখাপড়া ও চর্চার সুযোগ দেন তিনি।

পেশাগত প্রযুক্তি ছাড়াও, হংকংয়ের তরুণ-তরুণীদের জন্য আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- মুলভূভাগের বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া। কাজ শেষ করে সমবসয়ী তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো বা একসাথে খাওয়া-দাওয়ার ফলে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এ বিষয়ে চৌ বাই খাং বলেন, মুলভূভাগের সঙ্গে হংকংয়ের তরুণ-তরুণীদের জানা-শোনার সেতুর ভূমিকা পালন করতে চাই আমি।

চৌ বাই খাং বলেন, মুলভূভাগের বাজার অনেক বড়। বিভিন্ন শহরে বিভিন্ন বাজার আছে। জনগণের আগ্রহ ও নান্দনিকতা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যতের পথ অনুসন্ধানের সুযোগও বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn