চীনের প্রেসিডেন্টের এপেক ও জি২০ সম্মেলনে অংশগ্রহণ: একটি বিশ্লেষণ
এসব বক্তব্যের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরা হলো।
বহুপক্ষবাদ: সি চিন পিং বহুপক্ষবাদকে বিশ্বব্যাপী সমস্যা সমাধানের মূল চাবিকাঠি হিসেবে দেখেছেন। তিনি একতরফা নীতি এবং বাণিজ্য যুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন।মুক্ত বাণিজ্য: তিনি মুক্ত বাণিজ্যকে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে দেখেছেন এবং বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য বাধা দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন।জলবায়ু পরিবর্তন: সি চিন পিং জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি সম্পর্কে সচেতন করেছেন এবং এই সমস্যা মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা: তিনি দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতাকে জোর দিয়েছেন এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্ব রাজনীতিতে চীনের ভূমিকা:
চীনা নেতার এসব সম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং বক্তব্য চীনের বিশ্ব রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে স্পষ্ট করেছে। চীন এখন বিশ্ব অর্থনীতির একটি প্রধান চালিকাশক্তি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হয়ে উঠেছে। সি চিন পিং এপেক ও জি২০ সম্মেলনে গ্লোবাল সাউথ বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি তার বক্তব্যে বারবার এই দেশগুলোর উন্নয়ন, সহযোগিতা এবং সমস্যা সমাধানের উপর জোর দিয়েছেন।
জনাব সি দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতাকে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো উচিত। চীন নিজেই এই ধরনের সহযোগিতার একজন প্রধান অংশীদার হিসেবে কাজ করতে চায়। এক্ষেত্রে তিনি বহুপক্ষবাদকে সমর্থন করেছেন এবং বলেছেন যে এটি উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। তিনি একতরফা নীতি এবং বাণিজ্য যুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন। তিনি গরিব দেশগুলোর উন্নয়নের জন্য আরও বেশি করে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। উন্নত দেশগুলোকে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। জনাব সি বলেছেন যে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়বে এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধি জোরদার হবে।
সি চিন পিং-এর এই বক্তব্যগুলোর মাধ্যমে চীন গ্লোবাল সাউথে তার প্রভাব বাড়াতে চাইছে। তিনি চীনকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর একটি নেতা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছেন। তবে, কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে চীনের এই উদ্যোগের পেছনে নিজস্ব স্বার্থও লুকিয়ে থাকতে পারে।
মোহাম্মদ তৌহিদ, সিএমজি বাংলা।