বাংলা

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে চীনের বিনিয়োগ ভবিষ্যতের পথ দেখায়

CMGPublished: 2024-10-26 18:32:55
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

গত এক দশকে চীন তার বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এই অর্জন চীনের উচ্চ মানের মহাকাশ অনুসন্ধান প্রকল্প, পরিবেশ পর্যবেক্ষণ ও সুরক্ষায় বিনিয়োগ এবং একটি স্থায়ী মহাকাশ স্টেশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্পষ্টভাবে প্রদর্শিত হয়েছে। গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে চীনের স্থিতিশীল বিনিয়োগ বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও প্রযুক্তি খাতে দেশের দৃঢ়তা প্রতিফলিত করে। ২০২৩ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের গবেষণা ও উন্নয়নে (আর এন্ড ডি) চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২.৭৯ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। যা তার আগের বছরের তুলনায় ১৪.৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। সে বছর মৌলিক গবেষণার জন্য জাতীয় তহবিল ছিল ১৮১.৭ বিলিয়ন ইউয়ান, যা ২০২২ সালের তুলনায় ২৩.০% বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলিত গবেষণা এবং পরীক্ষামূলক উন্নয়ন তহবিল ছিল ৩১৪.৫৪ বিলিয়ন ইউয়ান, এবং সে বছর পরীক্ষামূলক উন্নয়ন তহবিল ছিল ২২৯৯.৫৯ বিলিয়ন ইউয়ান। একই সময় গবেষণা ও উন্নয়ন খাতের কর্মীদের মাথাপিছু ব্যয় ছিল ৪,৮৯,০০০ ইউয়ান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-সংক্রান্ত কিছু খাতের সংক্ষিপ্ত উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরা হলো।

মহাকাশ অনুসন্ধান খাত: চীন সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ পর্যবেক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক সেন্সর এবং ইমেজিং প্রযুক্তি সজ্জিত কিছু উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছে। এই উদ্যোগটি পরিবেশগত গবেষণা এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় চীনের উচ্চ মানের প্রচেষ্টার প্রমাণ। সংগৃহীত তথ্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বোঝা এবং তা প্রশমিত করার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া প্রক্রিয়াগুলির দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

স্যাটেলাইট ছাড়িয়ে চীন একটি স্থায়ী মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করেছে। এই প্রকল্পটি মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য চীনের দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি, সদিচ্ছা এবং মহাকাশ বিজ্ঞানের অগ্রভাগে থাকার প্রচেষ্টার একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত। মহাকাশ স্টেশনটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে উৎসাহিত করছে এবং মহাকাশ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

চন্দ্র ও মঙ্গল মিশন বেশ উল্লেখযোগ্য। দেখা যাচ্ছে যে, চীনের বিনিয়োগ শুধু পৃথিবীতে সীমাবদ্ধ নয়। চীন আগামী বছরগুলিতে আরও চন্দ্র ও মঙ্গল মিশনের পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এই মিশনগুলির লক্ষ্য হল নতুন দিগন্ত অন্বেষণ করা, মহাকাশীয় উপাদানগুলো বোঝা এবং সম্ভাব্য সম্পদ সনাক্ত করা যা মানবতার উপকার করতে পারে।

এসব পদক্ষেপ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপর ব্যাপক প্রভাব চীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং বায়োটেকনোলজির মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতেও মনোনিবেশ করছে। এই ক্ষেত্রগুলি স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে যোগাযোগ পর্যন্ত বিভিন্ন সেক্টরে বিপ্লব ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দেয় এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনে চীনকে বিশ্বব্যাপী নেতা হিসেবে স্থান করে দেয়।

প্রযুক্তিগত নবত্যাপ্রবর্তন দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিকাশের একমাত্র উপায়। বিশ্ব বুদ্ধিজীবী সম্পত্তি সংস্থার প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, ২০১২ সালে চীনে পেটেন্ট আবেদনের সংখ্যা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বেশি। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল উল্লেখ করেছে যে, ২০ বছর আগে আমেরিকান গবেষকরা বিজ্ঞান ও প্রকৌশল ক্ষেত্রে চীনাদের তুলনায় চারগুণ বেশি পেশাদার নিবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন। তবে ২০১৮ সালের মধ্যে চীন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে লক্ষাধিক পেটেন্ট বেশি পেয়েছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে চীনের কৌশলগত বিনিয়োগ দেশটিকে এমন একটি ভবিষ্যতের দিকে চালিত করছে যেখানে তা কেবল বৈশ্বিক অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলছে না বরং প্রায়শই একটি আদর্শ মান নির্ধারণ করে দিচ্ছে। ক্রমাগত উদ্ভাবন ও অন্বেষণের মাধ্যমে, চীন বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অঙ্গনের প্রধান খেলোয়াড় হিসাবে তার ভূমিকা দৃঢ় করছে।

চায়ানা ডেইলি অবলম্বনে,

মোহাম্মদ তৌহিদ, সিএমজি বাংলা, বেইজিং।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn