বাংলা

চীনের মহাকাশ অনুসন্ধান কার্যক্রম প্রসঙ্গ

CMGPublished: 2024-10-24 16:55:52
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

অক্টোবর ২৪: সম্প্রতি চায়নিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেস, চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, চায়না ম্যানড স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস যৌথভাবে, ‘চীনের মহাকাশ বিজ্ঞান: মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা (২০২৪-২০৫০)’ প্রকাশ করেছে। পরিকল্পনায় চীনের পাঁচটি বৈজ্ঞানিক বিষয় এবং ১৭টি অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়ন দিকনির্দেশনা উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে চীন সাফল্য অর্জন করবে বলে আশা করা যায়। এর মধ্যে, ‘বাসযোগ্য গ্রহ’ ও পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব অন্বেষণ বিষয়টি অনেকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

গভীর মহাকাশ অনুসন্ধান হচ্ছে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতার কমান্ডিং হাইট। চাঁদ থেকে গ্রহ ও গ্রহাণু শনাক্তকরণ পর্যন্ত, চীনের গভীর মহাকাশ অনুসন্ধান কার্যক্রমের আওতা ক্রমশ বাড়ছে; মহাকাশের অনেক গভীরে তাকাচ্ছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। ফলে, সৌরজগত ও মহাবিশ্বকে বুঝতে মানুষের সামনে আরও বেশি সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

সম্প্রতি ইতালির মিলানে অনুষ্ঠিত ৭৫তম আন্তর্জাতিক মহাকাশচারী কংগ্রেসে, চীনের চন্দ্র অন্বেষণ প্রকল্প ছাংএ্য-৬ কর্তৃক চাঁদের দূরবর্তী অঞ্চল থেকে সংগৃহীত নমুনা প্রথমবারের মতো চীনের বাইরে প্রদর্শিত হয়। এটি বিভিন্ন দেশের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

চলতি বছরের ২৫ জুন চাঁদের অন্ধকার দিক তথা দূরবর্তী অঞ্চল থেকে ১৯৩৫.৩ গ্রাম নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফেরে ছাংএ্য-৬। এটিই হচ্ছে প্রথমবারের মতো মানবজাতির চাঁদের দূরবর্তী অঞ্চল থেকে নমুনা সংগ্রহ। চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর ইয়াং চিয়াওউ বলেন, বিজ্ঞানিরা এখন চন্দ্রের নমুনা যাচাই-বাছাই করছেন। ইতোমধ্যে নমুনার ভৌত, রাসায়নিক উপাদান, ও কাঠামোর প্রাথমিক শনাক্তকরণ সম্পন্ন হয়েছে। এ থেকে চাঁদের প্রাথমিক বিবর্তন ও চাঁদের দূরবর্তী আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের তথ্য, নমুনা সংগ্রহের স্থানটিতে আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপের ইতিহাস রেকর্ড করা বেসাল্ট, এবং কিছু অন্যান্য এলাকা থেকে নন-ব্যাসল্ট উপকরণ আবিষ্কৃত হয়েছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৬ সালে ছাংএ্য-৭ এবং ২০২৮ সালের দিকে ছাংএ্য-৮ উৎক্ষেপণ করবে চীন। ছাংএ্য-৭ চন্দ্রের দক্ষিণ মেরুর পরিবেশ এবং সম্পদ অন্বেষণ করবে। ছাংএ্য-৮ চন্দ্রের সম্পদ চন্দ্রে ব্যবহারের প্রযুক্তিগত সম্ভাব্যতা যাচাই করবে। চন্দ্রে প্রস্তাবিত বৈজ্ঞানিক গবেষণাকেন্দ্রের ভিত্তিও স্থাপন করবে ছাংএ্য-৭ এবং ছাংএ্য-৮।

ইতোমধ্যেই চাঁদে গবেষণাকেন্দ্র স্থাপন নিয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। চীনের সাথে ১৭টি দেশ ও অঞ্চলের আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতা-চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সামগ্রিক মিশনের যৌথ প্রদর্শন, আন্তর্জাতিক চন্দ্র বৈজ্ঞানিক গবেষণা স্টেশনগুলোর যৌথ নকশা, প্রকল্প প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, সামগ্রিক মিশন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ও বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত ভাগাভাগি করতে চীন ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে ব্যাপক সহযোগিতা করবে।

চাঁদ মানুষের গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানের সূচনাবিন্দু। চায়নিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেসের শিক্ষাবিদ ও চীনের চন্দ্র অনুসন্ধান প্রকল্পের প্রথম প্রধান বিজ্ঞানী ওউইয়াং চিইউয়ান একবার বলেছিলেন, চন্দ্র অন্বেষণ কেবল একটি সূচনাবিন্দু। আমরা আরও বিস্তৃত সৌরজগতের দিকে তাকিয়ে আছি। ভবিষ্যতে, মঙ্গল ও গ্রহাণুর মতো বহির্জাগতিক বস্তু অন্বেষণ, সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার মতো লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা হবে। তখন, তারার সমুদ্র অন্বেষণেও আত্মবিশ্বাস পাবে চীন।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn