বাংলা

কাজানে আসন্ন ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন: সংহতি ও সহযোগিতা বৃদ্ধিতে জোর দেবে চীন

CMGPublished: 2024-10-20 17:17:55
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

গ্লোবাল সাউথ দেশগুলোর মধ্যে উন্মুক্ততা এবং সংহতি গড়ে তোলার জন্য ব্রিকসকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে চীন। প্রথম থেকেই চীন এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ কারণে ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনকেও চীন অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এ নীতিরই ধারাবাহিকতায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি বেইজিংয়ে ঘোষণা করেছে যে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আগামী মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠেয় ১৬তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।

আন্তর্জাতিক বিষয়ের বিশ্লেষকরা এই বছরের শীর্ষ সম্মেলনটি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন, কারণ তারা বলেছেন যে, এটি ব্রিকসের সাম্প্রতিক ঐতিহাসিক সম্প্রসারণের পরে প্রথম শীর্ষ সম্মেলন এবং এটি সদস্য দেশগুলোর ‘বৃহত্তর ব্রিকস সহযোগিতা’ বলে অভিহিত করার প্রথম বছরও বটে।

সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ছোট-গোষ্ঠী এবং বৃহৎ-গোষ্ঠী আলোচনার পাশাপাশি ব্রিকস প্লাস নেতাদের সংলাপে অংশ নেবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেবেন।

তিনি বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, ব্রিকস ব্যবহারিক সহযোগিতা, ব্রিকস প্রক্রিয়ার বিকাশ এবং অভিন্ন উদ্বেগের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে নেতৃবৃন্দের সাথে গভীরভাবে মতবিনিময় করবেন।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং গত শুক্রবার বেইজিংয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “বৃহত্তর ব্রিকস সহযোগিতার স্থির ও টেকসই উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালাতে, গ্লোবাল সাউথ বা বিশ্ব-দক্ষিণের জন্য সংহতির মাধ্যমে শক্তি খুঁজতে এবং যৌথভাবে বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করতে চীন অন্যান্য পক্ষের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত।” .

তিনি বলেন, ব্রিকস প্রতিষ্ঠার পর থেকে সদস্য দেশগুলো সবসময় উন্মুক্ততা, অন্তর্ভুক্তি এবং জয়-জয় সহযোগিতার চেতনাকে সমুন্নত রেখেছে।

তিনি বলেন, এই সদস্যরা “সংহতির মাধ্যমে শক্তি খোঁজার প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্দেশ্যের প্রতি সৎরয়েছে, বহুপাক্ষিকতাকে সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে ভালোর জন্য একটি ইতিবাচক ও স্থিতিশীল শক্তিতে পরিণত হয়েছে।”,

বিশেষজ্ঞ এবং কর্মকর্তারা বলেছেন যে, ব্রিকস সহযোগিতা প্রক্রিয়া উদীয়মান বাজার দেশ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সংহতি ও সহযোগিতা জোরদার করতে এবং সাধারণ স্বার্থ রক্ষার জন্য একটি অপরিহার্য প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।

সাম্প্রতিক সম্প্রসারণের পর, বিশ্ব বাণিজ্যে ব্রিকস দেশগুলোর অংশীদারিত্ব ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে, যা তাদের আন্তর্জাতিক প্রভাবকে আরও প্রসারিত করেছে।

চীনের সাধারণ শুল্ক প্রশাসনের তথ্য অনুসারে চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে, অন্যান্য ব্রিকস সদস্য দেশগুলোর সাথে চীনের আমদানি ও রপ্তানি মোট ৪.৬২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (৬৫০.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) হয়েছে, যা বছরে ৫.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

শুল্ক প্রশাসনের উপ-পরিচালক ওয়াং লিংচুন সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলন বলেছেন, “উন্মুক্ততা, অন্তর্ভুক্তি, সহযোগিতা এবং জয়-জয়ের ব্রিকস চেতনার নির্দেশনায়, বড় ব্রিকস পরিবার বাণিজ্য ও বিনিময়ে নতুন ফলাফল অর্জন অব্যাহত রেখেছে।”

তিনি জানান, শিল্পখাতে, চীন এবং অন্যান্য ব্রিকস দেশগুলো ‘লোহা ও ইস্পাত, রাসায়নিক এবং বস্ত্রের মতো মৌলিক খাতে একে অপরের পরিপূরক হয়ে আসছে।”

লিংচুন কিছু তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, “প্রথম ত্রৈমাসিকে, ব্রিকস দেশগুলোতে চীনের প্রযুক্তিপণ্য ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, ফ্ল্যাট-প্যানেল ডিসপ্লে মডিউল এবং বিমানের যন্ত্রাংশ রপ্তানি সবই দ্বিগুণ-অঙ্কে বৃদ্ধি পেয়েছে।”

সর্বশেষ সম্প্রসারণ শুরু করার জন্য প্রস্তুত হওয়ার পর প্রথম শীর্ষ সম্মেলনের সাথে সাথে, অন্যান্য ব্রিকস দেশগুলোর সাথে চীনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরো গভীরতর হতে থাকবে এবং আরও দৃঢ় হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন লিংচুন।

আসন্ন কাজান শীর্ষ সম্মেলন প্রসঙ্গে রাশিয়ায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ছাং হানহুই বলেন, “রাশিয়া চীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিকস অংশীদার। ব্রিক্সের সভাপতি হিসেবে রাশিয়ার অগ্রগতিতে খুবই সন্তুষ্ট চীন, এবং শীর্ষ সম্মেলন সফল করতে একটি ভাল আয়োজক হিসেবে রাশিয়াকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে বেইজিং।”

মাহমুদ হাশিম

সিএমজি বাংলা, বেইজিং।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn