বাংলা

চীনের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন বিশ্বে নতুন শক্তি প্রদান করেছে: সিএমজি সম্পাদকীয়

CMGPublished: 2024-10-03 18:50:34
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

অক্টোবর ৩: সাম্প্রতিক কালে চীনের কুইচৌ প্রদেশের পিংথাং জেলায় অবস্থিত থিয়েনওয়েন থানা অত্যন্ত প্রাণবন্ত একটি স্থানে পরিণত হয়েছে। যেহেতু চীনের জাতীয় দিবসের ছুটির সময়, তাই বিপুল সংখ্যক চীনা এবং বিদেশী পর্যটক এখানে ‘চায়না স্কাই আই’, অথবা বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচে সংবেদনশীল একক-অ্যাপারচার রেডিও টেলিস্কোপ ফাস্ত পরিদর্শন করতে আসেন। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এর নির্মাণ সম্পন্ন হবার পর থেকে ফাস্ত শুধুমাত্র বিশ্বের জন্য আরও দূর ও আরও স্পষ্টভাবে দেখার সুযোগ এনে দেয়নি, বরং মহাবিশ্বের রহস্য এবং আন্তর্জাতিক আদান-প্রদান ও সহযোগিতার মানব অন্বেষণে আরও বেশি চীনা জ্ঞানের অবদান রেখেছে।

‘চায়না স্কাই আই’ এর সাফল্য চীনের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের কৃতিত্বের একটি মাইক্রোকসম। চলতি বছর গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। গত ৭৫ বছরে, ‘পারমাণবিক বোমা ও ক্ষেপনাস্ত্র এবং স্যাটেলাইটে’র সফল উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে মহাকাশে ভ্রমণ করা, বেইতৌ নেভিগেশনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী নির্ভুল পরিষেবা প্রদান করা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং প্রোটোটাইপ ‘চিউ চাং’-এর আবির্ভাব এবং উচ্চ-গতির রেল প্রযুক্তি বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়া পর্যন্ত, কয়েক প্রজন্মের অবিরাম প্রচেষ্টার পর চীন বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ল্যান্ডস্কেপের একটি গুরুত্বপূর্ণ মেরুতে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব মেধাস্বত্ব সংস্থার উদ্যোগে প্রকাশিত ২০২৪ বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচক অনুসারে, চীনের উদ্ভাবন সূচক র‌্যাঙ্কিং গত বছরের থেকে এক ধাপ বেড়ে ১১তম স্থানে উঠে এসেছে, এটি শীর্ষ ৩০টির মধ্যে একমাত্র মধ্যম আয়ের অর্থনৈতিক সত্তা।

বিগত ৭৫ বছরে, বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন কেবল চীনের আধুনিকীকরণে একটি মূল চালিকা শক্তিকে গতি দেয়নি, বরং বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং শিল্পে বুদ্ধিমান উত্পাদনের উন্নয়নকেও উন্নীত করেছে এবং মানব অগ্রগতিতে প্রকৃত শক্তির অবদান রেখেছে।

৭৫ বছর আগে, গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল, এবং যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমের বৈরী নীতি আর প্রযুক্তিগত অবরোধের কারণে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রায় ফাঁকা ছিল। বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত প্রতিভার অভাব, বৈজ্ঞানিক গবেষণা সরঞ্জামের গুরুতর ঘাটতি এবং পশ্চাদপদ মৌলিক অবস্থার মতো অসংখ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়ে নয়াচীন বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য একটি কৌশলগত নীতিমালা প্রতিষ্ঠা করেছে।

বিশেষ করে গত এক দশকে শতাব্দীর পরিবর্তন ত্বরান্বিত হওয়া, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়া এবং চীনের বিরুদ্ধে কিছু দেশের প্রযুক্তিগত বাধা দেওয়ার পটভূমিতে চীন সর্বদা উচ্চ-স্তরের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতার প্রচারের উপর জোর দিয়ে আসছে। নতুন দফার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিপ্লব এবং শিল্পের সংস্কারের সৃষ্ট উন্নয়নের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবনী সাফল্য অর্জন অব্যাহত রাখে। সেগুলোর মধ্যে, নতুন জ্বালানি শিল্প চীনের একটি সুন্দর নতুন ব্যবসায়িক কার্ডে পরিণত হয়েছে, যা শুধুমাত্র বিশ্বব্যাপী শিল্প শৃঙ্খলের সরবরাহকে সমৃদ্ধ করে না, সবুজ এবং কম কার্বন-অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করে এবং বিশ্বের জন্য জলবায়ুর পরিবর্তন ও সবুজ শক্তির রূপান্তরের প্রতিক্রিয়ায় অসামান্য অবদান রেখেছে। চীনা গাড়ি কোম্পানি বিওয়াইডি সিএমজি সম্পাদকীয়কে জানায় যে, পরবর্তী ধাপে তারা উদ্ভাবনের সাথে বৈশ্বিক নতুন শক্তির যানবাহন বিপ্লবের নেতৃত্ব দিতে থাকবে এবং স্থানীয় নতুন শক্তির যানবাহন শিল্পের বিকাশকে উন্নীত করবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কোন রাষ্ট্রীয় সীমানা না। চীনের দৃষ্টিকোণ থেকে, বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন উন্মুক্ত সহযোগিতা থেকে অবিচ্ছেদ্য, যা চীনের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা। বর্তমানে, চীন ১৬০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের সাথে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করেছে এবং ১১৮টি আন্তঃসরকারি বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

এ ছাড়াও, চীন বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নিয়ম প্রণয়ন, এজেন্ডা নির্ধারণ, শাসন সংস্কার এবং জনস্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্ন শক্তিসহ বিশ্বব্যাপী উদ্ভাবন শাসন সংক্রান্ত বিষয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।

আশা করা যায় যে, ভবিষ্যতে চীন আরও উদ্ভাবনী সাফল্য অর্জন করবে, আরও বড় প্রকল্প তৈরি করবে, চীনা-শৈলীর আধুনিকীকরণের জন্য শক্তিশালী বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে এবং বিশ্ব বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে আরো বেশি চীনা শক্তি অবদান রাখবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn