বাংলা

চীন-ভিয়েতনাম বন্ধুত্ব সতেজ ছিল ও থাকবে

CMGPublished: 2024-08-21 17:23:55
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

আগস্ট ২১: দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ককে যখন ‘কমরেড ও ভাই’ বলে ডাকা হয়, তখন চীন ও ভিয়েতনামের কথা মনে আসা স্বাভাবিক। প্রতিবেশি হিসেবে চীন ও ভিয়েতনাম একে অপরের উন্নয়নে কাজে লেগেছে ও লাগছে এবং একে অপরের কাছ থেকে শিখেছে ও শিখছে। গত বছরের শেষ দিকে দুই দেশ অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার যৌথ ঘোষণা দেয়। আর এর মাধ্যমে, উভয় দেশ ও পার্টির সম্পর্ক, বিকাশের নতুন একটি পর্যায়ে প্রবেশ করে। বর্তমানে দু’দেশ, উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সময়কালে, নিজেদের বন্ধুত্বকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়াস পেয়েছে। এমনি এক প্রেক্ষাপটে, গত ১৮ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত, চীন সফর করেন ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও দেশটির প্রেসিডেন্ট তো লাম।

ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদকের পদ গ্রহণের পর এটি ছিল তো লামের প্রথম বিদেশ সফর। এতে বোঝা যায়, চীন-ভিয়েতনাম দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মান উচ্চ এবং এ সম্পর্ক দু’দেশের কাছে কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ। তো লামের সাথে গত ১৯ আগস্ট চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আলোচনা করেন। এ সময় চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়: চীনের কূটনীতিতে ভিয়েতনাম অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে; উভয় পক্ষের কৌশলগত চীন-ভিয়েতনাম অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ার কাজ এগিয়ে নেওয়া উচিত; এবং ছয়টি উন্নয়ন-প্যাটার্নের ওপর জোর দেওয়া উচিত। ভিয়েতনাম পক্ষ জানায়: দেশটির পররাষ্ট্রনীতিতে চীনের অবস্থান কৌশলগত কারণে শীর্ষে আছে; দু’দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গভীরতর করা হবে; এবং চীন-ভিয়েতনাম অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ার কাজ এগিয়ে নিতে হবে।

বর্তমানে চীনা শৈলীর আধুনিকায়নের জন্য কাজ করছে চীন। পাশাপাশি, ব্যাপকভাবে নিজেকে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে চীন। এদিকে, ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে, আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার চেষ্টা করছে ভিয়েতনাম। বস্তুত, এখন চীন-ভিয়েতনাম অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার ঠিক সময়। দু’দেশের জনগণের প্রত্যাশাও তাই।

পারস্পরিক রাজনৈতিক বিশ্বাস, চীন-ভিয়েতনাম অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার ভিত্তি। চীন ও ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন দুটি সমাজতান্ত্রিক দেশ। দু’দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা, আদর্শ, বিশ্বাস, ও উন্নয়নের পথ একই রকম। জটিল ও পরিবর্তিত বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতির মোকাবিলায়, চীন ও ভিয়েতনাম সমাজতন্ত্রের পথে হাত মিলিয়েছে। এটি কেবল উভয় দেশের নিজ নিজ উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনের জন্য কল্যাণকর নয়, বরং বিশ্বের সমাজতান্ত্রিক বিকাশেও সহায়ক।

দেশের সাথে দেশের সম্পর্ক আসলে মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কের মধ্যে নিহিত। চীনা সমসাময়িক চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রোগ্রাম ভিয়েতনামের লোকেরা অনেক পছন্দ করে। অন্যদিকে, ভিয়েতনামি পপ গান চীনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচলিত। সম্প্রতি সরাসরি বিমান রুট, পারস্পরিক ভিসা সুবিধাসহ বিভিন্ন সহায়ক নীতি গ্রহণ করায়, প্রচুর ভিয়েতনামি পর্যটক চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের ইউননান প্রদেশ ভ্রমণে আসেন। ওদিকে, ভিয়েতনাম জাতীয় পর্যটন প্রশাসনের পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছরের মে মাসে ৩ লাখ ৫৭ হাজার চীনা পর্যটক ভিয়েতনাম ভ্রমণ করেন। চীন আবারও ভিয়েতনামের বৃহত্তম পর্যটক-উত্সে পরিণত হয়েছে।

ভবিষ্যতে, চীন ও ভিয়েতনাম জাতিসংঘ, আসিয়ান ও ল্যাঙ্কাং-মেকং সহযোগিতার মতো বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার অধীনে, সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করবে; চীনের প্রস্তাবিত তিনটি প্রধান বৈশ্বিক উদ্যোগের কাঠামোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা উন্নত করবে; এবং সমান ও সুশৃঙ্খল বহুমেরুর বিশ্বের জন্য কাজ করে যাবে। চীন-ভিয়েতনাম অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার মাধ্যমে দু’দেশ, বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নে আরও বেশি আবদান রাখবে বলে আশা করা যায়।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn