বাংলা

জাপানি সাবেক সেনার অনুতাপের বিষয়ে জাপানের রাজনৈতিক মহলের একমত হওয়া উচিত

CMGPublished: 2024-08-16 23:58:35
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

অগাস্ট ১৬: ৭৯ বছর আগে ১৫ অগাষ্ট জাপান নিঃশর্ত আত্নসমর্পণ ঘোষণা করেছিল। চীনা জনগণ ১৪ বছর যুদ্ধের মাধ্যমে, বিপুল প্রাণ ও রক্ত হারিয়েছিল। অবশেষে ‘জাপানি আগ্রাসন প্রতিরোধের যুদ্ধে’ মহান জয় অর্জন করে।

তবে, গত ১৫ অগাস্ট জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ একাধিক রাজনীতিক ইয়াসুকুনি সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান। পাশাপাশি, ৯৪ বছর বয়সী জাপানি শসস্ত্রবাহিনীর ‘ইউনিট ৭৩১’-এর সাবেক সেনা হিদেও শিমিচু চীনের হারবিনে গিয়ে অনুতাপ ও দুঃখ প্রকাশ করেন।

জাপানের রাজনীতিকদের আচরণ জাপানের সাবেক সেনা হিদেও শিমিচু’র অনুতাপের আচরণের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। জাপানের সামরিকবাদ পুনরুদ্ধার করার বিপজ্জনক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিশ্ববাসী অনেক চিন্তিত ও সতর্ক রয়েছে।

এবারের চীন সফরে, হিদেও শিমিচু ‘ ক্ষমা ও শান্তির স্মৃতিস্তম্ভে’ গিয়ে অনুতাপ প্রকাশ করেন ও দুঃখ প্রকাশ করেন। এখানে তিনি জানান, ‘আমি আন্তরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চীনা মানুষ এবং ‘ইউনিট ৭৩১’-এর কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে আমার অনুতাপ প্রকাশ করেছি।’ ২য় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের ‘ইউনিট ৭৩১’ চীনে জৈব অস্ত্রের যুদ্ধ চালু করেছিল। হিদেও শিমিচু আগে একটি প্রবন্ধে লিখেছেন, ইতিহাস ও বাস্তবতা গোপন করা যাবে না। তিনি ‘ইউনিট ৭৩১’-এর চীনে মোতায়েনের স্থানে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যাতে করে ক্ষতিগ্রস্ত চীনা মানুষের কাছে তার সবচেয়ে গভীর অনুভূতি ও দুঃখ প্রকাশ করতে পারেন। আশা করি, আরও বেশি লোক আত্ম-পর্যালোচনা করবে, অমূল্য শান্তিকে গুরুত্ব দেবে এবং যুদ্ধের হৃদয়বিদারক ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করবে। হিদেও শিমিচু এবারের চীন সফরে, নিজের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাক্ষী দিয়েছেন এবং ‘ইউনিট ৭৩১’র গোপন অপরাধ প্রকাশ করেছেন।

শুধুমাত্র ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়। তবে, আমরা দেখেছি, ১৫ অগাস্ট বা অন্য সময় জাপানের কিছু ‘ডানপন্থি’ রাজনীতিক প্রকাশ্যে ইয়াসুকুনি সমাধিতে গিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। ‘ডানপন্থিদের’ প্রচেষ্টায়, জাপানের ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে চীনে আগ্রাসনের যুদ্ধ বিষয়ক বিষয়গুলো মুছে দেওয়া হয়েছে। জাপানের পাঠ্যবইয়ে ‘চীনকে আগ্রাসন করা যুদ্ধ’ ও ‘নানচিং গণহত্যাকে’ পরিবর্তন করে ‘জাপান-চীন যুদ্ধ’ ও ‘নানচিং ঘটনা’ লেখা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে হেদেও শিমিচু সমালোচনা করেছেন। তিনি জানান, যুদ্ধ অনেক করুণ, তবে জাপান কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ড মানুষকে ক্ষুব্ধ করে।

এ ছাড়া, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, জাপান সরকার ভুয়া ‘চীনা হুমকি তত্ত্ব’ বারবার প্রচার করে আসছে। এই ভিত্তিহীন অজুহাতে তারা জাপানের ‘শান্তিপূর্ণ সংবিধান’ অব্যাহতভাবে লঙ্ঘন করেছে। তারা পরিকল্পনা করেছে জাপানের প্রতিরক্ষা বরাদ্দ বাড়িয়ে ২০২৭ সাল নাগাদ দেশের জিডিপি’র ২ শতাংশ পরিমাণ করা হবে। একাধিক কর্মকাণ্ডে দেখা যায়, জাপান আবারও সামরিক বড় দেশের পুরানো পথে ফিরে যেতে চায়, যা এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য নতুন হুমকি সৃষ্টি করেছে।

হিদেও শিমিচু বলেছেন, ‘যদি শিশুরা প্রকৃত ইতিহাস না জানে, যুদ্ধ কি ধরনের বিভৎস ও দুঃখজনক পরিস্থিতি তৈরি করে, তাও জানতে পারবে না; এ অবস্থায় জাপানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’ এ ধরনের অনুশোচনার বিষয়ে জাপানের রাজনীতিক মহলের একমত হাওয়া উচিত। জাপানের কিছু মানুষ আবারও সামরিকবাদ ফিরিয়ে আনলে ইতিহাসের শাস্তি ফিরে আসবে। এমন আচরণ জাপানের জন্য দুর্যোগে বয়ে আনবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn