বাংলা

নতুন যুগে চীনের সংস্কারনীতি ও প্রসঙ্গকথা

CMGPublished: 2024-07-16 15:19:42
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

জুলাই ১৬: সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির দেশ পরিচালনার একটি মৌলিক নীতি। ১৯৭৮ সালে তত্কালীন শীর্ষনেতা তেং সিয়াও পিংয়ের সভাপতিত্বে, সিপিসি’র ১১তম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে, এ নীতি গ্রহণ করা হয়। আর, ২০১৩ সালে সি চিন পিংয়ের সভাপতিত্বে ১৮তম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এ নীতি সার্বিকভাবে গভীরতর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এমনি এক প্রেক্ষাপটে, সম্প্রতি শুরু হয়েছে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির ২০তম তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন। এ উপলক্ষ্যে আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় থাকছে নতুন যুগে চীনের সংস্কারনীতি নিয়ে কিছু আলোচনা।

২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে হাইনান প্রদেশ ও প্রাদেশিক অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকীর উদযাপনী অনুষ্ঠানে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ঘোষণা করেন, হাইনান দ্বীপজুড়ে অবাধ বাণিজ্য এলাকা, চীনা বৈশিষ্ট্যময় বাণিজ্য বন্দর, এবং অবাধ বাণিজ্য নীতি ও ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে। এর পর, হাইনান চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের নতুন উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

উন্মুক্তকরণ ও সংস্কার সবসময় হাতে হাত রেখে চলে এবং পরস্পরকে শক্তি যোগায়। সি চিন পিং বলেন, উন্মুক্তকরণের মাধ্যমে সংস্কার ও উন্নয়নের প্রচেষ্টার কারণেই, চীন অব্যাহতভাবে সাফল্য ও অগ্রগতি অর্জন করে চলেছে। উন্মুক্ততা অগ্রগতি নিয়ে আসে, প্রতিবন্ধকতা অনিবার্যভাবে পশ্চাত্পদতার দিকে নিয়ে যায়।

চীনা সভ্যতার অব্যাহত উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল, এই সভ্যতা বিশ্বের বিভিন্ন সভ্যতার সাথে আদান-প্রদান করে ও সেসব সভ্যতার ভালো দিকগুলো গ্রহণ করে। বৌদ্ধ ও ইসলাম ধর্মের প্রচলন, মার্কসবাদ ও সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার প্রবর্তন, এবং সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি গ্রহণ, চীনা মানুষের উন্মুক্ত মনোভাবের প্রতিফলন।

সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি মৌলিক জাতীয় নীতি হিসেবে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বাস্তবায়নের মাধ্যমে অসাধারণ ফলাফল অর্জিত হয়েছে। ২০১২ সালের পর সি চিন পিং ‘উন্মুক্ত উন্নয়ন’ ধারণা উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, চীনের উন্মুক্তকরণ হবে সার্বিক ও সব দিক দিয়ে উন্মুক্তকরণ।

উন্মুক্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা সি চিন পিংয়ের ‘উন্মুক্ত উন্নয়ন’ ধারণার একটি মৌলিক বিষয়। তিনি ব্যবস্থাগত ও কাঠামোগত বাধা ভেঙ্গে দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন; অবাধ বাণিজ্য পরীক্ষামূলক এলাকা ও অবাধ বন্দর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণের প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেন। একই সঙ্গে, চীন অব্যাহতভাবে বৈদেশিক বাণিজ্য ও বিদেশী বিনিয়োগসংক্রান্ত আইন সুসম্পন্ন করেছে; আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও রক্ষাব্যবস্থা জোরদার করেছে।

সি চিন পিং বলেছেন, চীনের উন্নয়নকে বিশ্ব থেকে আলাদা করা যাবে না; বিশ্বের সমৃদ্ধিও চীনের প্রয়োজন। চীন কল্যাণমূলক উন্মুক্তকরণ নীতিতে অবিচল থাকবে। বিশ্বের কাছ থেকে উন্নয়নের চালিকাশক্তি গ্রহণ করার পাশাপাশি, চীনের উন্নয়ন থেকে বিশ্বও উপকৃত হবে ও হচ্ছে।

নতুন যুগে চীন দৃঢ়ভাবে বহুপক্ষবাদ ব্যবস্থা রক্ষা করা ও সংরক্ষণবাদের বিরোধিতা করা; জাতিসংঘ, জি-২০, ব্রিক্স ইত্যাদি আন্তর্জাতিক ও বহুপাক্ষিক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করা; এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা গভীরতর করার মতো কার্যক্রমের মাধ্যমে, সক্রিয়ভাবে বৈশ্বিক পরিচালনাব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করছে ও বিশ্বের উন্মুক্তকরণের পক্ষে কথা বলে যাচ্ছে।

সি চিন পিং উত্থাপিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিন্ন স্বার্থে কাজ করছে। বর্তমানে ১৫০টিরও বেশি দেশ ও ৩০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এই উদ্যোগে যোগ দিয়েছে; এ উদ্যোগের আওতায় ৩ সহস্রাধিক সহযোগিতা-প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে; প্রায় ৪ কোটি মানুষ এর মাধ্যমে দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে।

সি চিন পিং বলেন, উন্মুক্তকরণ হল মানবজাতির অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি এবং বিশ্বের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের একমাত্র পথ। চীনের উন্মুক্তকরণ বিশ্বের উন্নয়নে শক্তিশালী প্রাণশক্তি যুগিয়ে যাচ্ছে ও যাবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn