বাংলা

সিপিসি’র ২০তম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের ওপর বিশ্বের দৃষ্টি

CMGPublished: 2024-07-15 17:15:00
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

জুলাই ১৫: আজকের চীন বিশ্বের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত ও গভীরভাবে একীভূত। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র ২০তম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন আজ (সোমবার) বেইজিংয়ে শুরু হয়েছে, যা নতুন যুগে চীনের উচ্চমানের উন্নয়ন ও উন্মুক্তকরণ পর্যবেক্ষণ করার গুরুত্বপূর্ণ জানালা হিসেবে, বিশ্বব্যাপী সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাধারণভাবে বিশ্বাস করে যে, সিপিসি’র ২০তম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চীনের সংস্কার আরও গভীর করা ও চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তারা আরও বিশ্বাস করে যে, চীনের সংস্কার ও আধুনিকায়ন অস্থির ও বিশৃঙ্খল বিশ্বে মূল্যবান নিশ্চয়তা এনে দেবে, আরও বেশি উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করবে, এবং মানবজাতির অভিন্ন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য আরও বেশি চীনা চালিকাশক্তি যোগাবে।

এই অধিবেশনকে, যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক ইস্যু গবেষণাকেন্দ্রে জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের সবচেয়ে প্রত্যাশিত সম্মেলনগুলোর মধ্যে একটি’ বলে অভিহিত করা হয়।

সম্প্রতি ব্লুমবার্গ ‘যে কারণে চীনের তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে বলেছে: চীনের নিয়মিত সম্মেলনগুলোর মধ্যে আসন্ন তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন দেশটির অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে। আর এ কারণেই সবার দৃষ্টি এদিকে আকৃষ্ট হয়েছে।

বিবিসি ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে, তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ প্রক্রিয়া শুরুর পর, সম্ভবত সিপিসি’র এই তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চীনা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলবে। অধিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্কারনীতি প্রণয়ন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কিংস্কট ফান্ড কোম্পানির সিনিয়র ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট ইয়ান হংবো বলেন, চীনে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কাঠামোগত রূপান্তর ও আপগ্রেডিং হচ্ছে; ডিজিটালাইজেশন, উদ্ভাবন, ও মধ্যম আয়ের মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি গত দশকে চীনের উন্নয়নকে চালিত করেছে। এবারের তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চীনের সার্বিক ও গভীরতর সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেবে।

কম্বোডিয়ার র‍য়্যাল একাডেমির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইনস্টিটিউটের পরিচালক জিন পিং দীর্ঘকাল ধরে চীনের উন্নয়ন মডেল নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, সিপিসি’র ২০তম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন সার্বিক ও গভীরতর সংস্কার ও চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে। এতে ‘চীনা জনগণকে নেতৃত্ব দিয়ে আধুনিকায়ন বাস্তবায়নে’ সিপিসি’র দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত হবে।

সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ শুধু চীনের সংস্কার ও উন্নয়ন তা নয়, বরং চীনের উন্নয়ন বিশ্বের উন্নয়নকেও প্রভাবিত করেছে ও করছে। বিশ্ব চীনকে এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো বোঝে।

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা আশা করেন, এবারের অধিবেশন উদ্ভাবনকে উত্সাহিত করবে, বাজারের প্রাণশক্তি উদ্দীপিত ও বাণিজ্যিক পরিবেশ উন্নত করার পদক্ষেপ প্রকাশ করবে। তাঁরা আরও আশা করেন, চীন উচ্চমানের উন্নয়ন ও উন্মুক্তকরণের মাধ্যমে বিশ্বের সাথে উন্নয়নের সুযোগ ভাগাভাগির ধারা অব্যাহত রাখবে।

শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক ইস্যু বিশেষজ্ঞ ইয়াশিলু রানারাজা বলেন, সিপিসি’র ২০তম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন শুধু চীনের ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িত নয়, বিশ্বের ভবিষ্যত উন্নয়নকেও এ অধিবেশন প্রভাবিত করবে। এর জন্য অধিবেশনটি বিশ্বের মনোযোগের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। অধিবেশনে উদ্ভাবন, বাণিজ্যিক পরিবেশ, সহনশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন মডেল, ইত্যাদি বিষয়ের ওপর বেশি মনোযোগ দেওয়া হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সিরিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষক উসামা দানুরা বলেন, চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন প্রমাণ করেছে যে, বিশ্বে আধুনিকায়নের পশ্চিমা মডেলই একমাত্র মডেল নয়, বরং প্রতিটি দেশ নিজের ইতিহাস, সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক উন্নয়নের বাস্তব অবস্থা অনুসারে নিজের উন্নয়নপথ খুঁজে নিতে পারে। চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নে আত্মনির্ভরশীলতা ও স্বাধীন উদ্ভাবনের ওপর বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়, যা আধুনিকায়নের অর্থ ও পথকে সমৃদ্ধ করেছে; দক্ষিণের দেশগুলো এ থেকে অনেক শিখতে পারে। তিনি আশা করেন, এবারের অধিবেশন বৈশ্বিক সমস্যা সমাধান ও মানবজাতির অভিন্ন উন্নয়নের জন্য আরও বেশি চীনা প্রজ্ঞা সরবরাহ করবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn