সংকটে ন্যাটো: যুক্তরাষ্ট্রের অপব্যবহারের সমালোচনায় ইউরোপীয় সদস্য দেশগুলোর রাজনীতিক ও বিশেষজ্ঞরা
তিনি বলেন যে, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে ন্যাটোর ক্রমবর্ধমান সক্রিয় ভূমিকায় এই পরিবর্তন প্রদর্শিত হয়েছে। “আমরা বিশ্বাস করি এটি বিপজ্জনক, এমনকি দায়িত্বজ্ঞানহীন, কারণ এটি কোথায় নিয়ে যাবে বা কোথায় গিয়ে এর শেষ হবে আমরা কেউ তা বলতে পারি না।”
স্লোভেনীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী উরোস লিপুসেক বলেছেন, ন্যাটো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করছে। সদস্য এলাকার বাইরে সার্বভৌম দেশগুলোর উপর আক্রমণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ হস্তক্ষেপে অটল সমর্থন, চুক্তির বিপরীতে গিয়ে রাশিয়ার জন্য হুমকি হয়ে ওঠা ন্যাটোর সম্প্রসারণ- এই সমস্ত কিছুর সাথে এর মূল লক্ষ্যগুলোর কোনও সম্পর্ক নেই। ন্যাটো ক্রমবর্ধমানভাবে একটি আগ্রাসী জোট হিসেবে আবির্ভূত হতে চাইছে বলে প্রতিয়মান হচ্ছে।
ক্রোয়েশিয়ান রাজনৈতিক বিশ্লেষক ম্লাডেন প্লিস কোনো রাখঢাখ না করেই বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার নীতিগলো বাস্তবায়নের জন্য ন্যাটোকে ব্যবহার করেছে এবং ন্যাটোর উপর খবরদারি করে। এটি ইউরোপীয় অংশীদারদের জন্য ভাল নয়। ন্যাটো অবশ্যই ওয়াশিংটনের একটি বর্ধিত হাত হবে না এবং আরও বেশি সংখ্যক ইউরোপীয় দেশ এ বিষয়টি নিয়ে সতর্ক বার্তা দিয়েছে।
বড় বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে ম্লাডেন বলেন, “আমেরিকার স্বার্থ হাসিলের জন্য এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ন্যাটোকে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা ইউরোপের স্বার্থের সাথে একেবারেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়।”
কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের অধ্যাপক ও পরিচালক জেফ্রি শ্যাস বলেছেন, ন্যাটো হল মার্কিন সামরিক-নিরাপত্তা যন্ত্রের একটি ‘প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো’ যা মার্কিন গ্র্যান্ড কৌশল বাস্তবায়নে নিয়োজিত।
শ্যাস আরও স্পষ্ট করে বলেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি বিপথগামী ও বিপজ্জনক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য আধিপত্যবাদ এবং চীন ও রাশিয়াসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে সংঘাত জিইয়ে রাখা। ন্যাটো এই বিভ্রান্তিকর এবং বিপজ্জনক পররাষ্ট্রনীতির একটি অংশ মাত্র।”
মাহমুদ হাশিম
সিএমজি বাংলা, বেইজিং।