বাংলা

সি চিন পিংয়ের মধ্য-এশিয়া সফর: আঞ্চলিক সহযোগিতা ও উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ

CMGPublished: 2024-07-07 19:32:22
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সদ্য-সমাপ্ত মধ্য-এশিয়া সফর সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) উন্নয়নের দিকনির্দেশনা এবং আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে চীনের সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ককে গভীরতর করার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন ভবিষ্যতের সম্প্রদায় গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট সি’র এ সফরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আস্তানায় এসসিওর রাষ্ট্রপ্রধানদের কাউন্সিলের ২৪তম বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতি সম্পর্কে শনিবার বেইজিংয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। এসসিও সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট সি কাজাখস্তান এবং তাজিকিস্তান সফর করেন।

প্রেসিডেন্ট সি এসসিও’র রাষ্ট্রপ্রধানদের কাউন্সিলের বৈঠকে এবং এসসিও প্লাস বৈঠকে যোগ দেন। তাঁকে উদ্ধৃত করে ওয়াং বলেন, এসসিও ইতিহাস, ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে এবং বিশ্বের কাছে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

চীনা প্রেসিডেন্ট, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, উন্নয়নের অধিকার রক্ষা করতে, ঐক্যের শক্তিকে সুসংহত করতে এবং সংহতি ও পারস্পরিক আস্থা, শান্তি ও সমৃদ্ধি সমন্বিত একটি অভিন্ন অবস্থান গড়ে তোলার জন্য নতুন পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এসসিওকে আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার আস্তানায় প্রেসিডেন্ট ভবনে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট সি।

চীন-কাজাখস্তান বন্ধুত্ব হাজার হাজার বছর ধরে প্রাচীন রেশমপথের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে উল্লেখ করে সি বলেন, ৩২ বছরের সহযোগিতার পরে, তা স্থায়ী সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের একটি উচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। প্রজন্মের বন্ধুত্ব, উচ্চ পারস্পরিক আস্থা ও সংহতি চীন-কাজাখস্তান সম্পর্কের প্রধান সুর হয়ে উঠেছে।

কাজাখস্তানে প্রেসিডেন্ট সি’র সফরের বিষয়ে ব্রিফিংকালে ওয়াং বলেন, চীন ও কাজাখস্তানের রাষ্ট্রপ্রধানরা তাদের দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন, যাতে তাঁরা একটি যৌথ ভবিষ্যৎ নিয়ে চীন-কাজাখস্তান সম্প্রদায় বিনির্মাণ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। একটি নতুন ‘সোনালী ৩০ বছরে’র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সূচনা করার পরিকল্পনাও প্রণয়ন করেছেন তাঁরা।

শুক্রবার বিকেলে দুশানবেতে প্রেসিডেন্ট ভবনে তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট সি। দুই রাষ্ট্রপ্রধান নতুন যুগে চীন-তাজিকিস্তান সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের উন্নয়নের ঘোষণা দেন।、

সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেছেন যে, চীন-মধ্য এশিয়া ব্যবস্থা ছয়টি দেশের যৌথ উদ্যোগ। চীন, তাজিকিস্তান এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সাথে এ ব্যবস্থাকে ক্রমাগত উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং চীন-মধ্য এশিয়া সহযোগিতায় আরও বাস্তব ফলাফল অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে ইচ্ছুক।

প্রেসিডেন্ট সি’র তাজিকিস্তান সফরের বিষয়ে ব্রিফিং করার সময়, ওয়াং উল্লেখ করেন যে, প্রেসিডেন্ট সি নতুন যুগের শুরু থেকে তাজিক রাষ্ট্রপতি ইমোমালি রাহমনের সাথে ১৫ বার সাক্ষাৎ করেছেন। এবার সি’র রাষ্ট্রীয় সফরের সময়, দুই রাষ্ট্রপ্রধান একটি ব্যাপক মতৈক্য প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন। চীন এবং তাজিকিস্তানের মধ্যে নতুন যুগে কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব, এবং একটি উচ্চতর সূচনা বিন্দু থেকে একটি অভিন্ন ভবিষ্যতের সম্প্রদায় গড়ে তুলতে যৌথভাবে কাজ করার কথা বলেছেন দুই প্রেসিডেন্ট।

তাজিকিস্তানে সি’র রাষ্ট্রীয় সফরের সময়, তিনি প্রেসিডেন্ট রাহমনের সাথে চীনের সহায়তায় নির্মিত সেদেশের পার্লামেন্ট ভবন এবং আরো একটি সরকারী ভবনের উদ্বোধন করেন এবং রাহমনকে বিদেশীদের জন্য চীনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘মৈত্রী পদকে’ ভূষিত করেন।

আস্তানায় এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি, সি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য বিদেশী নেতাদের সাথেও নিবিড় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

ওয়াং বলেন, বিভিন্ন দেশের নেতারা চীনের শাসনের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার এবং তাদের দেশের আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার আশা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা দৃঢ়ভাবে এক-চীন নীতি মেনে চলার কথা এবং ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’র যে কোনো ধরনের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। ওয়াং বলেন, নেতারা মানবজাতির জন্য একটি অভিন্ন ভবিষ্যতের সম্প্রদায় গড়ে তোলার জন্য প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বিভিন্ন বৈশ্বিক প্রস্তাবেরও প্রশংসা করেন।

মাহমুদ হাশিম

সিএমজি বাংলা, বেইজিং।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn