বাংলা

৩০তম বেইজিং আন্তর্জাতিক বইমেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন

CMGPublished: 2024-06-24 13:54:46
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

জুন ২৪: পাঁচ দিনব্যাপী ৩০তম বেইজিং আন্তর্জাতিক বই মেলা শেষ হয়েছে। বই মেলায় ৭১টি দেশ ও অঞ্চলের ১৬০০ প্রদর্শক অংশগ্রহণ করে এবং ২ লাখ ২০ হাজার দেশি-বিদেশি বই প্রদর্শন করা হয়েছে। এক হাজারেরও বেশি সাংস্কৃতিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ২১০০টিরও বেশি চীনা ও বিদেশি কপিরাইট বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ মানুষ মেলাটি পরিদর্শন করেছেন।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বইমেলা হিসেবে, বইমেলা চীনের দৃষ্টিতে বিশ্বমুখী। বিশ্বের কাছে চীনা সংস্কৃতির চলে যাওয়া পথ প্রশস্ত করে এবং দেশি-বিদেশি সভ্যতার বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষার সেতু তৈরি করে।

চলতি বছর গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। পিপলস পাবলিশিং হাউসের মহাপরিচালক চিয়াআং মাও নিং বলেন, এবারের বইমেলায় পিপলস পাবলিশিং হাউস ১৩০০টিরও বেশি বই নিয়ে অংশগ্রহণ করেছে এবং প্রধানত ‘সি চিন পিংয়ের রচনার থেকে নির্বাচিত পাঠ’সহ বিভিন্ন বইয়ের বিভিন্ন ভাষার সংস্করণ প্রদর্শন করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হুনান সাহিত্য ও শিল্প পাবলিশিং হাউস এক একটি ভালো বই নিয়ে বিশ্ব মঞ্চে আবির্ভূত হয়। চীনের উন্নয়নের পথ, চীনের মূল্যবোধ এবং চীনের শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতি ফুটে ওঠা এক দল প্রকাশনা বিদেশে প্রকাশিত হয়েছে, ফলে চীনা গল্প আরো প্রাণবন্ত এবং চীনের ভাবমূর্তি আরো জীবন্ত হয়ে উঠেছে বলে হুনান সাহিত্য ও শিল্প পাবলিশিং ও মিডিয়া গ্রুপের মহাপরিচালক পোং বো মনে করেন।

বেইজিং ভিত্তিক বুথে ‘চীনা সভ্যতার উত্স ট্রেসিং’ এবং ‘বেইজিংয়ের তিন হাজার’সহ নানা বই বিদেশি প্রকাশকদের সমাদর পেয়েছে। ঐতিহ্যিক সাংস্কৃতিক ভিত্তিক বই ভালো বিক্রি হচ্ছে এবং অধিক থেকে অধিকতর আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

মিশরের হিকমাত কালচারাল ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ সাইদ মনে করেন, চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি বিশাল ও গভীর। বইয়ের মাধ্যমে চীনের মেধা প্রকাশ করা এবং সারা বিশ্বকে প্রত্যাশায় পূর্ণ করে তোলা সম্ভব হয়।

সূক্ষ্ম আরবি পোশাক, মিষ্টি খেজুর, ঐতিহ্যবাহী মধ্যপ্রাচ্যের বাদ্যযন্ত্র উদ...সৌদি আরব রাজ্যের বুথে হাঁটলে বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং বিশেষ শিল্পকর্ম অনেক দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

এবারের বইমেলার থিম হলো ‘সভ্যতার মধ্যে পারস্পরিক শিক্ষাকে গভীর করা এবং সহযোগিতার মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে ভবিষ্যত জয় করা।’ বেইমেলায় ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ২০টিরও বিদেশি জাতীয় বুথ স্থাপন করা হয়। দেশি-বিদেশি প্রকাশক, লেখক ও অনুবাদক এতে মতবিনিময়ও করেছেন।

আন্তর্জাতিক বইমেলা চলাকালীন অনুষ্ঠিত বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল আর্ট পাবলিশিং ফোরাম ‘পেপার রোড’ এর থিমের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। বিভিন্ন দেশের পণ্ডিতরা বিভিন্ন সভ্যতার আদান-প্রদান এবং সংলাপ এগিয়ে নেওয়ার জন্য গভীর আলোচনা করেছেন।

ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশিং এন্টারপ্রাইজ হাই-লেভেল ফোরাম-২০২৪তে দেশি-বিদেশি প্রকাশকরা সহযোগিতার নতুন উপায় অন্বেষণ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট কারিন পাঞ্জা মনে করেন, ডিজিটাল যুগ বিশ্বজুড়ে প্রকাশকদের জন্য আরো বিস্তৃত প্ল্যাটফর্ম প্রদান করেছে। প্রকাশনা শিল্পকে সক্রিয়ভাবে পরিবর্তন গ্রহণ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।

চীন ও ফ্রান্সের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিকী উদযাপন করতে, ফরাসি-ভাষী এলাকার বিখ্যাত হোস্ট অলিভিয়ের গ্র্যান্ডজিন চীনে যা দেখেছেন এবং অনুভব করেছেন তা শেয়ার করতে বইমেলায় তার নতুন বই ‘লিভিং ইন চায়না’ নিয়ে এসেছেন। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বিশ্বকে চীনকে বুঝতে সাহায্য করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বেইজিং আন্তর্জাতিক বইমেলার চলাকালে ‘রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বেইমেলা ঘুরে দেখা’ এবং ‘ওয়ার্ল্ড রিডিং সিজিন’সহ ধারাবাহিক কার্যক্রমের আয়োজনও করা হয় এবং বিশ্বজুড়ে পাঠকদের কাছে সভ্যতার সমন্বয়ের আকর্ষণীয় শক্তি প্রদর্শিত হয়।

লিলি/তৌহিদ/স্বর্ণা

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn