বাংলা

অগ্রগতি অর্জন করেছে চীন-যুক্তরাষ্ট্র মাদক নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ

CMGPublished: 2024-06-20 15:46:32
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

মাদক নিয়ন্ত্রণে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা এগিয়ে যাচ্ছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের রাষ্ট্রপ্রধানদের গত নভেম্বরে সান ফ্রান্সিসকো বৈঠকের ঐকমত্য আন্তরিকভাবে বাস্তবায়ন করেছে এবং উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগ মাদক নিয়ন্ত্রণের সহযোগিতামূলক কাজ পুরোপুরিভাবে পুনরায় শুরু করেছে। চীনের জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কার্যালয়ের নির্বাহী উপ-পরিচালক ও জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর পরিচালক ওয়েই সিয়াও চুন গতকাল (বুধবার) বেইজিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। বর্তমানে উভয় পক্ষ বাস্তব নিয়ন্ত্রণ, তথ্য বিনিময়, কেস সহযোগিতাসহ নানা ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনটি ফেন্টানাইল প্রেকুরসুর যার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়, সেগুলো তালিকায় রাখতে চীন প্রচার করছে এবং সংশ্লিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া কয়েক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করবে। নিচে এ বিষয়ে একটি বিশদ বিবরণ দেয়া হলো:

২৬ জুন আন্তর্জাতিক মাদক নিয়ন্ত্রণ দিবস। এই উপলক্ষে চীনের জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কার্যালয় বেইজিংয়ে ২০২৩ সালের চীনের মাদক পরিস্থিতির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

চীনের জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কার্যালয়ের নির্বাহী উপ-পরিচালক ও জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর পরিচালক ওয়েই সিয়াও চুন বলেন, বর্তমানে চীনের মাদক সমস্যা সাধারণতভাবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত মাদকাসক্তের সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৯৬ হাজার , যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে।

অন্যদিকে একই সময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মাদক মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। চীনের মাদকবিরোধী কাজে অনেক ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তাই চীন বিশ্বব্যাপী সহ-শাসন মেনে চলে এবং মাদক নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে এগিয়ে নিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছর ৩০ জানুয়ারি চীন-যুক্তরাষ্ট্র মাদক নিয়ন্ত্রণ সহযোগিতা গ্রুপ চালু করা হয়েছিল। উভয় পক্ষ বাস্তব নিয়ন্ত্রণ, তথ্য বিনিময়, কেস সহযোগিতা এবং মাদক সম্পর্কিত লন্ডারিংসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা এগিয়ে নিচ্ছে এবং দৃশ্যমান ফলাফল পেয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের তিনটি ফেন্টানাইল প্রেকুরসুর বিষয়ে বলা হয়েছে, চীন এগুলোকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কয়েক মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আইনি প্রক্রিয়াগুলো সম্পূর্ণ করবে।

জানা গেছে, দু’দেশের মাদক সনাক্তকরণ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা স্বাভাবিক প্রযুক্তিগত বিনিময় পুনরায় শুরু করেছেন। দু’দেশের বিশেষজ্ঞরা এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে অনলাইন ও অফলাইনে দু’বারের মত যোগাযোগ করেছেন। এ মাসের শেষ দিকে তাঁরা আরেকবার অনলাইনে যোগাযোগ করবেন। এটি কার্যকরভাবে মাদক দমনের ক্ষেত্রে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। ওয়েই সিয়াও চুন বলেন, পরবর্তী ধাপে আমরা ভালভাবে দু’দেশের নেতাদের বৈঠকের মতৈক্য বাস্তবায়ন করবো। তিনি বলেন, পারস্পরিক সম্মান, মতভেদ নিয়ন্ত্রণ, অভিন্ন কল্যাণের সহযোগিতার ভিত্তিতে অব্যাহতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মাদক দমনের ক্ষেত্রের সংলাপ ও সহযোগিতা জোরদার করবে চীন, যাতে দু’দেশের সম্পর্কের স্থিতিশীল ও টেকসই উন্নয়নে আরো বেশি ইতিবাচক শক্তি সঞ্চার করা যায়।

‘২০২৩ সালে চীনের মাদক অবস্থা ও পরিস্থিতি প্রতিবেদন’ অনুযায়ী চীনের মাদক প্রধানত বিদেশ থেকে আসে। এর সঙ্গে রয়েছে অল্প পরিমাণে দেশীয় ওষুধ উৎপাদন থেকে আসা মাদক। গত বছরে চীনে বিদেশী মাদকের অনুপ্রবেশের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনের মাদকবিরোধী কর্তৃপক্ষ মোট ২০.৫টন বিদেশী ড্রাগস জব্দ করেছে যা মোট বার্ষিক ড্রাগস বিক্রয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আন্তঃসীমান্ত মাদক চোরাচালান ও পাচার কার্যক্রমের পুনরুত্থানের প্রেক্ষাপটে গত বছর চীনা জননিরাপত্তা সংস্থা মোট ১৫২জন বিদেশী মাদক পাচারকারী সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এদিকে ইউননান প্রদেশের মাদক দমন কার্যালয়ের পরিচালক চু সি বলেন, চীনের জননিরাপত্তা সংস্থা গত বছরের শেষের দিকে মায়ানমারের উত্তরাঞ্চলে ১০জন মাদক-সম্পর্কিত ঘটনায় পলাতককে ফেরত চেয়েছিল, তাদের মধ্যে ৩জনকে সফলভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে বিদেশী আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চীনের ৩৪০জনেরও বেশি মাদক-সম্পর্কিত ঘটনায় পলাতককে ধরতে এবং হস্তান্তর করতে সহায়তা করেছে। এটি কার্যকরভাবে বিদেশী ড্রাগস প্রস্তুতকারক ও গ্যাংকে দমন করেছে। এখানে, আমরা মাদক উৎপাদক ও পাচারকারীদের সতর্ক করে দিচ্ছি যেন তারা বিদেশে পলাতক থাকার পরিস্থিতিকে স্পষ্টভাবে চিনতে পারে। তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চীনে ফিরে এসে আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করুক এবং নিজেকে সংশোধনের চেষ্টা করুক।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn