মানবসভ্যতার অগ্রগতি এগিয়ে নেওয়া ও বিশ্বের অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চীন মেধা ও পদ্ধতি অবদান রাখছে
জুন ১১: গত ৭ জুন ৭৮তম জাতিসংঘ অধিবেশনে চীনের উত্থাপিত সভ্যতার সংলাপ বিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবস প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। এতে ১০ জুনকে ‘আন্তঃসভ্যতা সংলাপ আন্তর্জাতিক দিবস’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং উত্থাপিত বিশ্ব সভ্যতা উদ্যোগের মৌলিক ধারণা প্রতিফলিত হয়েছে। সিপিসি’র অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর, সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং ইতিবাচকভাবে বিভিন্ন সভ্যতার মধ্যে বিনিময় এগিয়ে নেওয়া ও গোটা মানবজাতির অভিন্ন মূল্যবোধ লালন করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বিশ্ব সভ্যতা উদ্যোগ উত্থাপন করেছেন। যা মানবসভ্যতার অগ্রগতি এগিয়ে নেওয়া এবং বিশ্বের অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য চীনা মেধা ও পদ্ধতি দিয়ে অবদান রেখেছে।
বিভিন্ন দেশের জনগণের সম্পর্ক উন্নয়নে মনের সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে, চীন-ফ্রান্স সংস্কৃতি ও পর্যটন বর্ষ উদ্বোধন করা হয়েছে। মার্চ মাসে, ‘কাজাখস্তান পর্যটন বর্ষ’ শুরু হয়েছে। মে মাস চীন-জাম্বিয়া সংস্কৃতি ও পর্যটন বর্ষ, চীন-তানজানিয়া পর্যটন ও সংস্কৃতি বর্ষ ও চীন-রুশ সংস্কৃতি বর্ষ একের পর এক উদ্বোধন করা হয়েছে। চীন হাতে হাত রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে একযোগে সাংস্কৃতিক বিনিময় এগিয়ে নেবে এবং মানবজাতির উন্নয়নের সুফল ভাগাভাগি করবে।
চীনের সামাজিক বিজ্ঞান একাডেমির অধ্যাপক হু চেং রং বলেন, জনগণের মনের সংযুক্তি আসলে হচ্ছে বিভিন্ন দেশের বিনিময়ের একটি ভিত্তি। এটা বাস্তবায়িত হলে, আমরা একে অপরকে বুঝতে পারব।
বিশ্বের বিভিন্ন সভ্যতা একটি বিভিন্ন রঙয়ের ফুলের বাগানের মতই। সভ্যতাগুলো একে-অপরে বিনিময় করে আরও রঙিন ও উন্নত হয়। চীনা সভ্যতা সবসময় বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার সঙ্গে বিনিময় ও একে অপরের কাছে শিখতে পারে। সিপিসি’র অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সভ্যতার বিনিময় এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করছেন। এতে সভ্যতার বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের জনগণের বন্ধুত্ব উন্নত হচ্ছে।
২০১৪ সালের মার্চ মাসে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। এতে তিনি সভ্যতাগুলোর মধ্যে বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষার ধারণা তুলে ধরেন এবং গোটা মানবজাতির অভিন্ন স্বার্থ বৃদ্ধির জন্য চীনা মেধা ও পদ্ধতি উপস্থাপন করেন।
২০১৯ সালের মে মাসে, এশিয়া সভ্যতা সংলাপ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে, একে অপরের সঙ্গে সম্মান, সমতার ভিত্তিতে আচরণ করা, উন্মুক্ত ও সহনশীলতা, একে-অপর থেকে শিক্ষা লাভ করা, যুগের তাল মিলিয়ে অগ্রগতি , উদ্ভাবনীমূলক উন্নয়ন এবং এশীয় সভ্যতা ও বিশ্ব সভ্যতার সুন্দর ভবিষ্যত সৃষ্টি করার আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
২০২৩ সালের মার্চ মাসে, সিপিসি ও বিশ্বের পার্টিগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের সংলাপ সম্মেলনে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং প্রথমবার বিশ্ব সভ্যতা উদ্যোগ উত্থাপন করেন। বিশ্বের সভ্যতার বৈচিত্র্যকে সম্মান করা, গোটা মানবজাতির অভিন্ন মূল্যবোধ প্রচার করা, সভ্যতার উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে গুরুত্ব দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করাসহ নানা খাতে গুরুত্ব দেয় বিশ্ব সভ্যতা উদ্যোগ। পাশাপাশি, বিশ্বকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক গণপণ্য প্রদান করে এ উদ্যোগ।
২০২৩ সালের জুন মাসে, সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ও উন্নয়ন বিনিময় সভায় বলেন, চীনা সভ্যতার অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশ্ব সভ্যতার প্রতি চীনা সংস্কৃতি উন্মুক্ত মনোভাব রয়েছে।
চীনের সামাজিক বিজ্ঞান একাডেমির গবেষক লি শিয়াং ইয়াং বলেন, সংস্কৃতি খাতে সি চিন পিংয়ের চিন্তাধারা শুধু চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নে শক্তি যুগিয়েছে- তাই নয়, বরং মানবজাতির অভিন্ন সমস্যা সমাধানে মেধা প্রদান করেছে এবং মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য শক্তি যুগিয়েছে।