বাংলা

ড্রাগন নৌকা উত্সব প্রসঙ্গ

CMGPublished: 2024-06-10 18:34:38
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

জুন ১০: প্রতিবছর ড্রাগন নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ও চুংজি খাওয়ার মতো কিছু আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, ড্রাগন নৌকা উত্সব পালন করে চীনারা। চীনের পাশাপাশি, ড্রাগন নৌকা প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলেও। বস্তুত, এর মাধ্যমে চীনা সংস্কৃতির গভীর অর্থ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন করে ছড়িয়ে পড়ে।

ড্রাগন নৌকা উত্সব হলো চীনের চারটি বড় ঐতিহ্যগত উত্সবের একটি। ২০০৯ সালে ইউনেস্কো তুয়ান উ চিয়ে তথা ড্রাগন নৌকা উত্সবকে মানবজাতির অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এটি ছিল এ তালিকায় স্থান পাওয়া প্রথম চীনা উত্সব। এ প্রেক্ষাপটে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, চীনা সংস্কৃতি সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ড্রাগন নৌকা উত্সবের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমির মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকেন। এ সময় পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়ে এবং এর মাধ্যমে সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদার হয়। চীনের বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত ড্রাগন নৌকা উত্সবের অনুষ্ঠানগুলোতে বিদেশী বন্ধুরাও অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের শিক্ষার্থী আখাই ছংছিংয়ে ড্রাগন নৌকা উত্সবের অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অভিজ্ঞতা অর্জন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। এভাবে তিনি চীনের লোকপ্রথা সম্পর্কে জেনেছেন।

তুর্কিয়ের মেয়ে চিয়ানান থিয়ানচিনে অনেক বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। তিনি ড্রাগন নৌকা প্রতিযোগিতায় পরিশ্রম ও ঐক্যের শক্তি অনুভব করেন। ফিলিপিন্সের বাগকামেন ড্রাগন নৌকা দলের প্রধান ২০২৪ সালের চীন-আসিয়ান আন্তর্জাতিক ড্রাগন নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সময় বলেন, চীন হলো ড্রাগন নৌকা প্রতিযোগিতার উত্সস্থল। খোদ চীনে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ যেন স্বপ্ন পূরণের মতো।

চলতি বছর নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন মহলও ড্রাগন নৌকা উত্সব উদযাপন করেছে। জার্মানিতে প্রথম ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক ড্রাগন নৌকা প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়। বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদরা, অঞ্চল, ভাষা, জাতিসত্তা ও সংস্কৃতির পার্থক্য পাশে সরিয়ে রেখে, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কাছাকাছি আসেন এবং নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

আজকাল বিশ্বায়নের প্রক্রিয়া দ্রুততর হচ্ছে। সাংস্কৃতিক যোগাযোগ দেশগুলোর মধ্যে বিনিময়ের গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে সংস্কৃতি ও ক্রীড়া খাতের যোগাযোগ বাড়ছে। আর এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সমঝোতা ও পারস্পরিক সম্মানবোধ জোরদার হচ্ছে।

চীনা সংস্কৃতির চেতনা মানবসমাজের অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। আন্তর্জাতিক সমাজ তা স্বীকারও করে নিচ্ছে। চীন বিভিন্ন সভ্যতার মধ্যে যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। আর এর লক্ষ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়নের শক্তিশালী জীবনীশক্তি ব্যবহার করে, বিভিন্ন সভ্যতাকে একসাথে সমৃদ্ধ ও বিকাশের সুযোগ দেওয়া।

চলতি বছরের ড্রাগন নৌকা উত্সবের দিনেই পালিত হয় জাতিসংঘের প্রথম আন্তর্জাতিক সভ্যতা-সংলাপ দিবস। সম্প্রতি ৭৮তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে, সর্বসম্মতিক্রমে এ দিবস পালনের চীনা প্রস্তাব গৃহীত হয়। তাই এখন থেকে প্রতি বছরের ১০ জুন আন্তর্জাতিক সভ্যতা-সংলাপ দিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হবে। বিভিন্ন দেশ সাংস্কৃতিক যোগাযোগের মাধ্যমে, একে অপরের কাছ থেকে শিখবে এবং অভিন্ন কল্যাণ অর্জন করবে বলে চীন আশা করে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn