জাপানি গাড়ির কোম্পানির তথ্য-জালিয়াতি; মাথা নত করে আস্থা ফেরানো কঠিন: সিএমজি সম্পাদকীয়
জুন ৭: বৃহস্পতিবার ভোরে জাপানি টিভি স্টেশনগুলোয় একটি দৃশ্য দেখা যায়। জাপানের কিছু কর্মী উদ্বিগ্ন চেহারায় সুজুকি মোটর করপোরেশনের সদর দফতরে ছুটে আসেন। কারণ কয়েকদিন আগেই সুজুকিসহ পাঁচটি জাপানি গাড়ি কোম্পানি প্রকাশ করেছে গাড়ির নিরাপত্তা পরীক্ষার সময় তারা মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছে। আর এরপর থেকেই সর্বস্তরে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা স্বীকার করেছেন, ঘটনাটি কেবল জাপানের অটোমোবাইল সার্টিফিকেশন সিস্টেমের ভিতকেই নাড়িয়ে দেয়নি, বরং জাপানের অটোমোবাইল শিল্পের বিশ্বাসযোগ্যতারও ক্ষতি করেছে। কিছু বিশ্লেষক উল্লেখ করেছেন, অটোমোবাইল শিল্প জাপানের উৎপাদন শিল্পের একটি স্তম্ভ। তাই এ ধরনের জালিয়াতির প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী।
গত বছরের এপ্রিলে একটি ‘রহস্যময়’ চিঠিতে দাইহাতসু মোটর করপোরেশনের এক কর্মী জাপানের পরিবহন বিভাগকে তার কোম্পানির মিথ্যা তথ্য বানানোর প্রমাণ দাখিল করেছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে জাপান সরকারের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দাইহাতসু মোটর করপোরেশনের মিথ্যা তথ্য বানানোর ইতিহাস ৮০’র দশকের শেষের দিকে শুরু হয়, যখন কিনা ‘মেড ইন জাপানের’ স্বর্ণযুগ ছিল। অর্থাৎ দাইহাতসু মোটরের জালিয়াতি চলছে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে।
চলতি বছরের মে’র শেষ দিকে জাপানের পরিবহন বিভাগের জরিপে দেখা যায়, দাইহাতসু মোটরের এ কাজটাকে বলা যায় ‘হিমশৈলের অগ্রভাগ’। টয়োটা মোটর করপোরেশন, হোন্ডা মোটর, মাজদা মোটর কোপরেশন, ইয়ামাহা মোটরস এবং সুজুকি মোটরসহ জাপানের ৫টি প্রধান গাড়ি প্রতিষ্ঠানের মোট ৩৮টি মডেলের গাড়ি এ নকল তথ্যের সঙ্গে জড়িত। এগুলোর ৬টি মডেল এখনও বাজারে বিক্রি হচ্ছে। প্রতারণা উন্মোচিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট জাপানি গাড়ি প্রতিষ্ঠানগুলো একের পর এক ক্ষমাও চেয়েছে।