বাংলা

‘পাকিস্তান চীনকে সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু মনে করে’

CMGPublished: 2024-06-04 14:25:50
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

জুন ৪: ‘পাকিস্তান ও চীনের বন্ধুত্ব অটুট!’ সম্প্রতি রাজধানী ইসলামাবাদের প্রধানমন্ত্রীভবনে, চীনের একাধিক গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে, এ কথা বলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।

প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াংয়ের আমন্ত্রণে, শাহবাজ শরীফ ৪ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত চীনে আনুষ্ঠানিক সফর করেন। এ প্রেক্ষাপটে শাহবাজ বলেন, পাকিস্তান ও চীনের বন্ধুত্ব অটুট এবং দু'দেশ ঝড়-ঝাপটায় একই তরীতে যাত্রা করে এবং চীন সবসময়ই পাকিস্তানের সবচেয়ে জরুরি সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। পাকিস্তান চীনকে সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু মনে করে।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ বলেন, পাকিস্তান দৃঢ়ভাবে ‘এক-চীন নীতি’ মেনে চলে। পাক সরকার বরাবরই এই নীতি সমর্থন করে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। পুরো পাকিস্তানি জনগণ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, তাইওয়ান চীনের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি হৃদয় থেকে পাকিস্তানের নীতি।

৪০ বছরেরও বেশি সময় আগে তাঁর প্রথম চীন সফরের কথা স্মরণ করে শাহবাজ বলেন, সে সময় তিনি বিশ্বাস করতেন যে, চীনের বিশাল সম্ভাবনাময় ভবিষ্যত আছে। সেই সময় চীনের উন্নয়নের গতি বেশি ছিল না। তবে, তখনও দেশটি মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করার পাশাপাশি, আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের পথে দৃঢ় পদক্ষেপে সামনে এগুচ্ছিল। চীন আজ একটি ‘দৈত্য’ হিসেবে বিকশিত হয়েছে এবং বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছে যে, দূরদর্শী নেতাদের নেতৃত্বে এবং জনগণের নিরলস প্রচেষ্টায়, একটি বিশ্বখ্যাত উন্নয়ন অর্জন করা সম্ভব। আজ, চীনের বাস্তব সাফল্যের মুখে, চীনের পথ সম্পর্কে সমস্ত সন্দেহ উল্টে গেছে।

শাহবাজ আবারও চীন সফরের জন্য মুখিয়ে আছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর, তিনি প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের কাছ থেকে অভিনন্দনবার্তা পান। তিনি এর জন্য সি’র কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। এটি পাকিস্তান-চীন বন্ধুত্বের একটি নিদর্শন, যা তিনি মনে রাখবেন।

শাহবাজ বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের নেতৃত্বে চীনের উন্নয়ন-কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে এবং বিপুলসংখ্যক মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছেন। পাকিস্তানি জনগণের স্বাধীনভাবে বিকাশের ক্ষমতা উন্নত করা এবং চীন থেকে দারিদ্র্য হ্রাসের অভিজ্ঞতা শেখা হলো তার এবার চীন সফরের প্রধান বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বিষয়।

শাহবাজ আশা করেন, এই সফর পাকিস্তান ও চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মিথস্ক্রিয়াকে উন্নত করবে। তা ছাড়া, এবারের সফরের মাধ্যমে, শিল্প পার্কের সমর্থক হিসেবে পাকিস্তানের শ্রমশক্তির সুবিধাগুলো কাজে লাগিয়ে, যৌথ উদ্যোগ প্রতিষ্ঠার জন্য উভয় পক্ষকে আকৃষ্ট করতে, প্রযুক্তি ও শিল্প স্থানান্তর-ব্যবস্থাকে উন্নত করতে, পাকিস্তানের উত্পাদন শিল্পের উন্নয়ন এবং যৌথভাবে একটি ‘আপগ্রেডেড সংস্করণ’-এর চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর তৈরি করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করেন।

শাহবাজ শরীফ বলেন, যৌথভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুধুমাত্র চীন ও সহ-বাস্তবায়নকারী দেশগুলোর জনগণের জন্য সুবিধা নিয়ে আসবে ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে উন্নত করবে, তা নয়, বরং বিশ্বকে ক্রমাগত অভিন্ন সমৃদ্ধি অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে উত্সাহিত করবে। পাকিস্তান ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ’, ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগ’ এবং ‘বৈশ্বিক সভ্যতা উদ্যোগ’ বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে চীনের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক।

শাহবাজ জোর দিয়ে বলেন, তরুণরাই মানুষের হৃদয়ের সংযোগকারী সেতু। পাকিস্তান দুই দেশের মধ্যে মানুষে মানুষে যোগাযোগ এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং পাক যুবক-যুবতীদেরকে চীনা ভাষা শিখতে ও চীনে অধ্যয়ন করতে উত্সাহিত করে। পাকিস্তান সংশ্লিষ্ট অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে এবং আদান-প্রদানের জন্য পাকিস্তানে আসা চীনা বন্ধুদের স্বাগত জানাবে। পাকিস্তান অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে সূচনাবিন্দু হিসেবে নিয়ে, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে চীনের উন্নত অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে, দুই দেশের মধ্যে লৌহদৃঢ় বন্ধুত্বকে সুসংহত করতে, এবং উল্লম্ফন উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn