বাংলা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে চীনের সহযোগিতা জোরদারের আগ্রহ ও প্রসঙ্গকথা

CMGPublished: 2024-05-27 14:25:30
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

মে ২৭: আজ (সোমবার) ৭৭তম বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলন শুরু হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী চীনা প্রতিনিধিদল গত ২৫ মে সুইজারল্যাণ্ডের জেনিভায় এক প্রেস ব্রিফিং আয়োজন করে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের উপ-মহাপরিচালক ছাও সুয়ে থাও, জাতিসংঘের জেনিভা কার্যালয় ও সুইজারল্যাণ্ডের অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার চীনা প্রতিনিধিদের কাউন্সিলার ইয়াং চি লুন, এবং জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য-মুখপাত্র মি ফেং এবারের প্রেস ব্রিফিংয়ে সংশ্লিষ্ট সংবাদদাতাদের প্রশ্নের জবাব দেন।

উপ-মহাপরিচালক ছাও প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, দীর্ঘকাল ধরেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ও বিভিন্ন দেশের সাথে স্বাস্থ্য খাতে বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন, যাতে মানবজাতির স্বাস্থ্যসংক্রান্ত অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলা যায়। সক্রিয়ভাবে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও আঞ্চলিক সহযোগিতামূলক ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে আসছে চীন।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর পর, চীন যথাসময়ে হু এবং সংশ্লিষ্ট দেশ ও আঞ্চলিক সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সমাজের সামনে মহামারীসংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত পেশ করেছে ৩ সহস্রাধিকবার; বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশ, ১০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার সাথে মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিত্সা প্রস্তাবসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত দলিলপত্র ভাগাভাগি করেছে; বিশেষজ্ঞ সেমিনার বা টেলি-কনফারেন্স আয়োজনের সংখ্যা ছিল ৩ শতাধিক; মহামারীকবলিত ৩৪টি দেশে ৩৮টি এন্টি-মহামারী বিশেষজ্ঞদল পাঠিয়েছে চীন; এবং ভালোভাবে মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করতে ৫০টিরও বেশি দেশে নিযুক্ত চীনা চিকিত্সাদলকে সহায়তা করেছে।

ছাও আরও বলেন, ১৬০টিরও বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চীন। এতে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ শীর্ষক গণস্বাস্থ্য সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সহযোগিতার ‘বন্ধু বৃত্ত’ বেড়েছে, এবং বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটেছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন দেশে চীন চিকিত্সাকর্মীদের দল পাঠানো অব্যাহত রেখেছে, ৪৩টি দেশের ৪৮টি হাসপাতালের সাথে সংশ্লিষ্ট সহযোগিতা চালিয়েছে, ৩০টিরও বেশি দেশে ছানিসংক্রান্ত অপারেশান কার্যক্রম চালিয়ে বহুজনের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে এনেছে; এবং হার্টের অপারেশনের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ রক্ষা করেছে।

কাউন্সিলার ইয়াং প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে, মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং মানবজাতির স্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয় নিয়ে সংলাপ ও সহযোগিতা চলছে। এই গুরুত্বপূর্ণ মূহূর্তে তাইওয়ানের ‘মিনচিন’ পার্টি পুনরায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য কিছু দেশের মাধ্যমে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি অযৌক্তিক এবং বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ইয়াং চি লুন বলেন, ১৯৭১ সালের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাব এবং ১৯৭২ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে ২৫.১ নম্বর প্রস্তাবে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে যে, গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সরকার হচ্ছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় চীনের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি। এসব প্রস্তাব ও দলিল ‘এক-চীন নীতি’র আলোকেই গৃহীত হয়। আর, ‘এক-চীন নীতি’র মূল কথাই হচ্ছে, বিশ্বে শুধু একটি চীন আছে, তাইওয়ান চীনের একটি অংশ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সরকার হচ্ছে গোটা চীনের একমাত্র বৈধ সরকার। তাইওয়ানসম্পর্কিত খসড়া প্রস্তাব তাই ‘এক-চীন নীতি’র সাথে সাংঘর্ষিক।

ইয়াং চি লুন আরও বলেন, চীনের কেন্দ্রীয় সরকার তাইওয়ানের জনস্বাস্থ্যের ওপর বেশ গুরুত্ব দেয়। ‘এক-চীন নীতি’র পূর্বশর্তে, চীন তাইওয়ান অঞ্চলের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের অধিকার সুনিশ্চিত করেছে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাবের পক্ষে নিজেদের সমর্থনের কথা পুনরায় ঘোষণা করেছে এবং দৃঢ়ভাবে ‘এক-চীন নীতি’ মেনে চলার কথা বলেছে। এ সব দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে তাইওয়ানের যোগদানের বিরোধী এবং শতাধিক দেশ, বিশেষভাবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দেওয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে চীনের অবস্থানকে সমর্থন করেছে। এর মধ্য দিয়ে, আন্তর্জাতিক সমাজ কী চায়, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn