বাংলা

চীন-ইউরোপ সহযোগিতা ও বিশ্বের উন্নয়ন

CMGPublished: 2024-05-13 15:59:45
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

মে ১৩: গত সপ্তাহে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তার ফ্রান্স, সার্বিয়া ও হাঙ্গেরি সফর শেষ করেন। এই সফর কেবল এই তিনটি দেশ এবং চীন-ইইউ সম্পর্কের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি বিশ্বের শান্তিপূর্ণ উন্নয়নে নতুন গতিও সঞ্চার করেছে।

প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর ফ্রান্স সফরের সময়, চীন ও ফ্রান্স কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বৈশ্বিক শাসন, কৃষি বিনিময় ও সহযোগিতার মতো একাধিক ইস্যুতে বেশ কয়েকটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে এবং বেশকিছু আন্তঃবিভাগীয় চুক্তি স্বাক্ষর করে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, দুটি প্রভাবশালী দেশ হিসাবে, চীন ও ফ্রান্সের সম্পর্ক সাধারণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কগুলোর চেয়ে অনেক বেশি তাত্পর্যপূর্ণ এবং তা চীন ও ইউরোপ, এমনকি বিশ্বের জন্য সহযোগিতার একটি ভালো উদাহরণ সৃষ্টি করবে।

চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমির ইউরোপিয়ান স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফেং চোং পিং বলেন, “আমরা প্রায়শই এ কথা বলি যে, যদি চীন ও ইউরোপ সহযোগিতা করে এবং হাত মেলায়, তবে "নতুন শীতল যুদ্ধ" আর হবে না। এর মাধ্যমে আসলে বৈশ্বিক স্তরে এ দু’পক্ষের প্রভাবের কথাই বলা হয়। যদি চীন ও ইউরোপ অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করে, তাহলে বিশ্বায়ন এগিয়ে যেতে থাকবে, যা বৈশ্বিক স্তরের বিষয়। তাই, এটি একটি বড় আলোচিত বিষয়। চীন ও ইইউ-র দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সহযোগিতাকে আরও গভীর করার প্রবল ইচ্ছাও রয়েছে।”

এদিকে, সার্বিয়া সফরের সময়, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুচিচ দু’দেশের সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর ও উন্নত করার এবং নতুন যুগে চীন-সার্বিয়া অভিন্ন ভবিষ্যতের সমাজ গড়ে তোলার ঘোষণা দেন। সার্বিয়া প্রথম ইউরোপীয় দেশ, যে যৌথভাবে চীনের সাথে একটি অভিন্ন ভবিষ্যতের সমাজ গড়ে তুলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন ও সার্বিয়ার মধ্যে ঐতিহ্যগত বন্ধুত্ব আরও বাস্তব সহযোগিতার ফলাফলে রূপান্তরিত হচ্ছে; যা প্রমাণ করে যে, চীন ও ইইউ-র মধ্যে সহযোগিতা অপরিহার্য।

চায়না ফাউন্ডেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রের পরিচালক সুন হাই ছাও বলেন, “আমরা বার বার জোর দিয়ে বলছি যে, চীন ও ইউরোপ দুটি প্রধান বাজার, দুটি প্রধান সভ্যতা, এবং দুটি প্রধান শক্তি। তাদের উচিত সহযোগিতা আরও গভীর করা। এটিই মূলধারা, এবং এর সাথে সমন্বয় করা উচিত; এটাই নেতৃত্ব, অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। চীন বিশ্বকে খোলা মনে আলিঙ্গন করে এবং আশা করে যে, বিশ্বের সকল দেশও তাদের পক্ষপাতদুষ্টু আচরণ ত্যাগ করবে এবং চীনের উন্নয়নকে সঠিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করবে।”

প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর হাঙ্গেরি সফরের সময়, চীন ও হাঙ্গেরি দু’দেশের মধ্যে সরবরাহ চেইন খাতে সহযোগিতার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। হাঙ্গেরিকে দ্বিতীয় চীন আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন উন্নয়ন মেলার প্রধান অতিথি দেশ হিসেবে অংশগ্রহণ করার আমন্ত্রণও জানিয়েছে চীনের বাণিজ্য উন্নয়ন সমিতি। এর উদ্দেশ্য, দুটি দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আরও বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা। হাঙ্গেরি জানিয়েছে, আজকের অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের যুগে সব দেশের একসঙ্গে কাজ করা আগের যে-কোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি।

হাঙ্গেরিয়ান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান প্যারাগ বলেছেন, “এখন বিশ্বায়নের যুগ। আমাদের ভবিষ্যত উন্নয়নকে টেকসই করার জন্য, একটি সাধারণ উন্নয়ন-পদ্ধতি খুঁজে বের করার লক্ষ্যে, দেশ, মানুষ ও অর্থনীতিকে সংযুক্ত করা প্রয়োজন।”

সিএমজি’র প্রতিবেদক চাং চিয়ান বলেন, “ফ্রান্স, সার্বিয়া ও হাঙ্গেরি পশ্চিম ইউরোপ এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত এবং তারা তাদের অঞ্চলে চীন-ইউরোপ পারস্পরিক কল্যাণকর সহযোগিতার পক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের এবারের ইউরোপ সফর এমন সক্রিয় বিনিময়ের প্রবণতাকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছে, যা শুধুমাত্র চীন ও ইউরোপের মৌলিক ও দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, বরং বিশ্বের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্যও সহায়ক।”

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn