বাংলা

মৌলিক সমস্যা সমাধান হলে চীন-মার্কিন সম্পর্ক ভালো হবে: সিএমজি সম্পাদকীয়

CMGPublished: 2024-04-28 13:37:36
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

এপ্রিল ২৮: ‘চীন একটি আত্মবিশ্বাসী, উন্মুক্ত, সমৃদ্ধ ও উন্নয়নশীল যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায়। চীন আশা করে, যুক্তরাষ্ট্রও চীনের উন্নয়নকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবে।’ গত শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে সাক্ষাত্কালে জোর দিয়ে বলেন যে, দুই দেশের অংশীদার হওয়া উচিত, প্রতিদ্বন্দ্বী নয়; পরস্পরকে ক্ষতি নয়, সাহায্য করা উচিত। দু’পক্ষের উচিত মতৈক্য খোঁজা এবং ভিন্নতাকে সম্মান করা। প্রতিশ্রুতি ভালোভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত। যুক্তরাষ্ট্র চীনের কাছে বেশ কিছু রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চীন আশা করে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখবে, ভালোভাবে দু’দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সানফ্রান্সিস্কো মতৈক্য বাস্তবায়ন করবে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্থিতিশীল উন্নয়ন জোরদার করবে।

গত বছরের নভেম্বর মাসে, দুই দেশের শীর্ষনেতার সান ফ্রান্সিস্কো বৈঠকের পর থেকে চীন-মার্কিন সম্পর্ক মন্দা থেকে বের হয়ে স্থিতিশীল উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে। কূটনৈতিক, আর্থ-বাণিজ্যিক, আইন প্রয়োগ, কৃষি ও সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধারাবাহিক সংলাপ ও সহযোগিতা চলছে। ব্লিনকেনের এবার চীন সফর দুই দেশের উচ্চ পদস্থ বিনিময়ের প্রবণতা অব্যাহত রেখেছে। দু’পক্ষ পাঁচটি মতৈক্য পৌঁছেছে। সেগুলো হলো- অব্যাহত সামরিক বিনিময় করা, মাদক দমন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সহযোগিতা আরো বাড়ানো এবং দু’দেশের মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্প্রসারণ করা। যা দু’দেশের সংলাপ বজায় রাখা, মতভেদ দূর করা এবং সহযোগিতা বাড়ানোর সদিচ্ছা প্রকাশ করে।

পাশাপাশি বুঝতে হবে যে, যদিও সম্পর্ক কিছুটা উন্নত হয়েছে, তবে নেতিবাচক উপাদানও বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বার বার চীনের ‘ওভার-ক্যাপাসিটি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করে, বৈদেশিক সাহায্য প্রস্তাবের মাধ্যমে চীনের তাইওয়ান ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করে, সিনচিয়াংয়ের মানবাধিকার ব্যাপারে অযৌক্তিক অভিযোগ করে, এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনকে প্রতিরোধে ‘ছোট জোট’ গঠন করে। এমন আচরণ চীন-মার্কিন সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

বাস্তবতা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের কথা ও বাস্তব আচরণ ভিন্ন। চায়না ফরেন আফেয়ারস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লি তুং হাই সিএমজি সম্পাদকীয়কে বলেছেন, চীনের সঙ্গে মার্কিন সরকারের সম্পর্ক পরিচালনার ক্ষেত্রে দ্বিমুখী দৃষ্টিভঙ্গি একটি বড় দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। এ ছাড়া, এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী বছর, যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক খেলা তীব্রতর হয়েছে এবং চীন নীতির দিকনির্দেশকে প্রভাবিত করে এমন উপাদান মার্কিন সরকারের চীন নীতিকে সীমাবদ্ধ করেছে। যার ফলে চীনের প্রতি মার্কিন মনোভাব অনির্দিষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রকে চীনকে নিয়ন্ত্রণ ও দমন করার সময় চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করে। এতে দেখায় যে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু লোক ভুলবশত চীনকে "সবচেয়ে বড় কৌশলগত প্রতিযোগী" হিসাবে বিবেচনা করছে এবং চীনের উন্নয়নের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কৌশলগত ভুল ধারণা রয়েছে।

ব্লিনকেন তাঁর সফরের সময়, চীন আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে চীন-মার্কিন সম্পর্কের অবস্থান সম্পর্কে মৌলিকভাবে চিন্তা করার আহ্বান জানিয়েছে, তাইওয়ানকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করতে হবে, চীনা জনগণের উন্নয়নের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই চীন-মার্কিন সম্পর্ককে দায়িত্বের সাথে পরিচালনা করতে চায় এবং সম্মত হয় যে, "একটি উন্নয়নশীল ও সফল চীন বিশ্বের জন্য একটি ভাল ব্যাপার," তার উচিত এসব কথা শোনা এবং সেগুলোকে কাজে লাগানো।

বর্তমানে, চীন-মার্কিন সম্পর্ক স্থিতিশীল করার গতি অর্জন করা সহজ ব্যাপার নয়, এবং উভয় দেশ এবং আন্তর্জাতিক সমাজের সব স্তর তাকে স্বাগত জানিয়েছে। "সানফ্রান্সিসকো ভিশন" বাস্তবে পরিণত করার জন্য এবং চীন-মার্কিন সম্পর্ককে সত্যিকার অর্থে স্থিতিশীল করতে, আরও উন্নত করতে এবং এগিয়ে নিয়ে যেতে উভয় পক্ষকেই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য, চীন সম্পর্কে তার ভুল বোঝাবুঝি সংশোধন করা উচিত এবং চীনের উন্নয়নকে সঠিকভাবে দেখা করা উচিত।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn