বাংলা

ফেন্টানাইল সংকট সমাধানে নিজের দিকেই নজর দেওয়া উচিত যুক্তরাষ্ট্রের: সিএমজি সম্পাদকীয়

CMGPublished: 2024-02-01 17:04:58
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

ফেব্রুয়ারি ১: মঙ্গলবার বেইজিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ মাদকবিরোধী অভিযান মিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন চীনের জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ কমিটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। একই দিন মাদকবিরোধী অভিযান বিষয়ে চীন-মার্কিন পারস্পরিক সহযোগিতার একটি ওয়ার্কিং গ্রুপের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর ঘোষণা করা হয়। দুই দেশের দুই রাষ্ট্রপ্রধানের সানফ্রান্সিসকো বৈঠক বাস্তবায়নে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করে সিএমজি সম্পাদকীয়।

২০২২ সালের আগস্টে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান অঞ্চলে সফরের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মাদকবিরোধী সহযোগিতা স্থগিত করেছিল চীন। এবার চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মাদকবিরোধী বিষয়ক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো পরামর্শ ও সহযোগিতার ব্যবস্থা চালু করেছে, যা উভয়পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ এবং সংলাপের পরিবেশের উন্নতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি চীন-মার্কিন সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে গঠনমূলক ভূমিকাও পালন করছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাদকবিরোধী সহযোগিতার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র জোরালোভাবে প্রচার করছে। আমেরিকান সমাজে ফেন্টানাইল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার সঙ্গে এই তোড়জোড়ের সম্পর্ক আছে।

ফেন্টানাইল একটি শক্তিশালী ওপিওড, যা মূলত ক্লিনিকাল অ্যানালজেসিয়া এবং অ্যানেস্থেশিয়ায় ব্যবহৃত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘমেয়াদে ওপিওডের অপব্যবহারের ফলে সমাজের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর ওষুধে পরিণত হয়েছে ফেন্টানাইল।

যুক্তরাষ্ট্রে এর এত অপব্যবহার কেন? নেপথ্যে আছে অনেকগুলো কারণ। প্রথমত, ব্যক্তিস্বার্থের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানিগুলো নীতিগত সুরক্ষা পেতে রাজনীতিবিদদের কাছে ধরনা দেয়। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভরাও বিভিন্ন উপায়ে ডাক্তারদের আরও ওষুধ বিক্রিতে উৎসাহ দেয়। এতে সবাই মিলে স্বার্থের একটি চক্র তৈরি করেছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও দুর্বল। এতে করে এটি স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানাইলের অপব্যবহার সঙ্কটের মূল কারণ যুক্তরাষ্ট্র নিজেই। যা তাদের অভ্যন্তরীণ শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতাই প্রতিফলিত করে।

অতীতে মাদকের মারাত্মক শিকার ছিল চীন। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবসময় মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ দেখানো হয়েছে এবং মাদক উৎপাদন, পাচার ও মাদক-সম্পর্কিত অন্যান্য অপরাধ দমন করেছে কঠোরভাবে।

২০১৯ সালের মে মাসে বিশ্বজুড়ে ফেন্টানাইলকে নিয়ন্ত্রণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল চীন। এরপর মাদকবিরোধী অভিযান বিষয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ, আন্তরিক ও গভীর সহযোগিতার সম্পর্ক বজায় রাখা হয়েছে। এ নিয়ে বহুবার চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন এবং অন্যান্য মাদকবিরোধী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত চীন থেকে ফেন্টানাইল জব্দ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সমস্ত ফেন্টানাইল-সম্পর্কিত পদার্থকে নিয়ন্ত্রণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেনি। সত্যিকার অর্থে, ফেন্টানাইল সংকট নির্মূল করতে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা কারণ খুঁজে বের করতে হবে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মাদকবিরোধী যে পারস্পরিক সহযোগিতা আবার শুরু হয়েছে তা মূলত দুই দেশের সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

সম্প্রতি, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ করছে। এ তালিকায় জনগণের মধ্যে আদান-প্রদান থেকে শুরু করে আর্থিক সংলাপ; সামরিক যোগাযোগ থেকে উচ্চস্তরের কূটনৈতিক পরামর্শও আছে।

এটি প্রতীয়মান যে, দুই দেশ ধীরে ধীরে সানফ্রান্সিসকো বৈঠকে দুই নেতার ঐকমত্য বাস্তবায়ন করছে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সহযোগিতার মাধ্যমে অভিন্ন কল্যাণের সঠিক পথ অনুসরণ করলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উন্নয়নের ধারা বজায় রাখা সম্ভব হবে বলে বিশ্বাস করে সিএমজি সম্পাদকীয়।

লিলি/ফয়সল

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn