বাংলা

চীনকে বেছে নেওয়া মানে সুযোগ বেছে নেওয়া: সিএমজি সম্পাদকীয়

CMGPublished: 2024-01-18 17:42:45
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

জানুয়ারি ১৮: “চীনের অর্থনীতি প্রায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার বজায় রেখেছে এবং এখনও বিশ্ব অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসাবে বিরাজ করছে। এটি অবশ্যই একটি বড় সুবিধা।” ব্রিটিশ পণ্ডিত মার্টিন জ্যাক সম্প্রতি সিএমজিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে একথা বলেন। গতকাল (বুধবার) চীন-প্রকাশিত ২০২৩ জাতীয় অর্থনৈতিক উপাত্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশাকে নিশ্চিত করেছে।

প্রাথমিক হিসাবে দেখা গেছে, সদ্যসমাপ্ত বছরে চীনের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি ছিল ১২৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, আগের বছরের তুলনায় যা ৫ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। অর্থনীতি প্রসারিত হয়েছে, মাথাপিছু জিডিপি আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, কর্মসংস্থান পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে, শহরে বেকারত্বের হার আগের বছরের চেয়ে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে, স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ বেড়েছে এবং প্রধান শিল্পপণ্যের উৎপাদন, বিনিয়োগ, আমদানি ও রপ্তানি বেশিরভাগ সূচক ২০১৯ সালের স্তরকে ছাড়িয়ে গেছে। এক উপাত্তে দেখা যায়, চীনের অর্থনীতি সুসংহত হচ্ছে এবং এর পুনরুদ্ধারের প্রবণতা শক্তিশালী হচ্ছে।

গত বছর বিশ্ব অর্থনীতি মন্থর হয়েছে, আন্তর্জাতিক অবস্থা জটিল হয়েছে এবং ঘন ঘন ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত ঘটেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ৩ শতাংশ এবং ইউরোপীয় কমিশন ২০২৩ সালে ইউরোজোনের প্রবৃদ্ধি হারের পূর্বাভাস কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশে এনেছে। অন্যদিকে, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির মধ্যে সর্বোচ্চ।

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মোট চাহিদা অপর্যাপ্ত। মুদ্রাস্ফীতি এবং উন্নত দেশগুলোতে আর্থিক নীতির প্রভাবে অনেক দেশে জীবনযাত্রা ও ঋণদানের খরচ বেড়েছে, যা ব্যবহারকে প্রভাবিত করছে। বর্তমানে, বিশ্বব্যাপী চাহিদা মন্থর এবং কিছু দেশে বাণিজ্য সুরক্ষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনের প্রতিবেদনে পূর্বাভাস করা হয়েছে, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক পণ্যবাণিজ্যের পরিমাণ ৭ দশমিক ৫শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে চীনের পণ্য আমদানি ও রপ্তানি স্থিতিশীল রয়েছে এবং চীন টানা সাত বছর ধরে বিশ্বের পণ্যবাণিজ্যে বৃহত্তম দেশ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো চীন এখন শুধু ‘বিশ্বের কারখানা’ নয়, বরং একটি বৈশ্বিক উদ্ভাবনের উচ্চভূমি।

উদাহরণ হিসাবে রোবটের কথা বলা যায়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মাঝে মাঝে রাস্তায় রোবট চলাফেরা করতে দেখা যায়। তারা মানুষের কাছে পণ্য পৌঁছে দেয়। এই পরিষেবা রোবটগুলোর বেশিরভাগই চীনে উত্পাদিত। এটি চীনের উদ্ভাবন ক্ষমতার একটি ক্ষুদ্র দিক মাত্র।

গত কয়েক দিন বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম ২০২৪-এর বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভিন্ন ঝুঁকির সম্মুখীন এ বিশ্বে ‘বিশ্বাস পুনর্গঠনের’ আহ্বান জানানো হয় বার্ষিক সভায়। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট বোর্জ ব্রেন্ডা বলেন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে চীন দেশগুলোর মধ্যে আস্থা পুনর্গঠনে অবদান রাখতে পারে। বৈশ্বিক বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ নিম্নমুখী চাপের সম্মুখীন হওয়ার প্রেক্ষাপটে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চীনে বিদেশি বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত নতুন ব্যবসায়ী উদ্যোগ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত পাঁচ বছরে চীনে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে লাভের হার ছিল প্রায় ৯ শতাংশ, যা আন্তর্জাতিকভাবে তুলনামূলকভাবে উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সম্প্রতি ২০২৪ সালের জন্য চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ব্যাপারে তাদের পূর্বাভাস বাড়িয়েছে। জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনের মহাসচিব রেবেকা গ্রিনস্প্যান বলছিলেন, চীন অনেক শিল্পে একটি শীর্ষস্থানীয় অবস্থানে রয়েছে এবং এর অর্থনৈতিক রূপান্তর অগ্রসর হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে অব্যাহত প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn