বাংলা

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সি চিন পিংয়ের বৈঠক

CMGPublished: 2024-01-11 16:42:06
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

গতকাল (বুধবার) বিকেলে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেইজিংয়ে মহাগণভবনে চীন সফররত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুর সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকের শুরুতে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মুইজ্জুকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “নতুন বছরে আমার সঙ্গে দেখা করা প্রথম বিদেশি নেতা আপনি এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটা আপনারও প্রথম বিদেশ সফর। এটি চীন ও মালদ্বীপের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব প্রদানের প্রতিফলন।”

সি চিন পিং মুইজ্জুকে চীনা জনগণের পুরাতন বন্ধু বলে আখ্যায়িত করেন এবং মালদ্বীপের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের উচ্চ মূল্যায়ন করেন। তিনি বলেন, “চীন ও মালদ্বীপ ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। ছয়শ’ বছর আগে, চীনের মিং রাজবংশ আমলে নৌ অভিযাত্রী চেং হ্য আপনার দেশ সফর করেছিলেন। দুদেশের মানুষ সামুদ্রিক রেশমপথের মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে।”

প্রেসিডেন্ট সি বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর গত ৫২ বছর ধরে চীন ও মালদ্বীপ সবসময় পরস্পরকে সম্মান করে এসেছে, সমর্থন দিয়েছে এবং এমন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যেখানে বড় ও ছোট দেশ সমানভাবে যোগাযোগ করে এবং পরস্পরকে সহযোগিতা ও সাহায্য করে।

তিনি বলেন, “২০১৪ সালে আমি মালদ্বীপ সফর করি এবং সে সময় দুপক্ষ একমত হয় যে, তারা ভবিষ্যতমুখী সার্বিক বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে। গেল ১০ বছরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ যৌথ নির্মাণ এবং নানা ক্ষেত্রের আদান-প্রদান ফলপ্রসূ হয়েছে।

সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, চীন-মালদ্বীপ সম্পর্ককে সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশিদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত করা দুদেশের উন্নয়নের প্রয়োজন এবং তাদের মানুষের প্রতাশ্যার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। মালদ্বীপের সঙ্গে নানা ক্ষেত্রে বিনিময় ও সহযোগিতা প্রসারিত করতে চীন-মালদ্বীপ অভিন্ন লক্ষ্যের সমাজ গড়ে তুলতে চীন ইচ্ছুক বলেও জানান তিনি।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) একশ’ বছরেরও বেশি সময়ের সংগ্রাম ও অভিজ্ঞতাও তুলে ধরে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, মালদ্বীপের নিজের অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ উন্নয়নপথ খুঁজে পেতে দেশটিকে চীন সহায়তা করে এবং তার সার্বভৌমত্ব, ভৌগলিক অখণ্ডতা, জাতীয় মর্যাদা রক্ষায় সমর্থন দেয়।

চীনা নেতা বলেন, দেশ প্রশাসনের অভিজ্ঞতা নিয়ে মালদ্বীপের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং উচ্চ মানের ‘বেল্ট অ্যাড রোড’ যৌথ নির্মাণ বাস্তবায়ন করতে চায় তাঁর দেশ। তিনি অর্থ-বাণিজ্য, কৃষি বাগান, সুনীল অর্থনীতি, সবুজ অর্থনীতি ও ডিজিটাল অর্থনীতিসহ নানা ক্ষেত্রে দুদেশের সহযোগিতা জোরদারের পরামর্শ দেন এবং মালদ্বীপের আরও বেশি শিক্ষার্থীকে চীনে আমন্ত্রণ জানান।

সি চিন পিং বলেন, চীন ও মালদ্বীপ উভয়ই উন্নয়নশীল দেশ এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ব্যাপার নিয়ে দু দেশের মতামত ও অবস্থানের মধ্যে রয়েছে অনেক মিল রয়েছে। তিনি মন্তব্য করেন, দুপক্ষের উচিত বহুপক্ষীয় যোগাযোগ ও সহযোগিতা ঘনিষ্ঠ করা, বহুপক্ষবাদ ও উন্নয়নশীল দেশের অভিন্ন স্বার্থ রক্ষা করা, মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের সমাজ গড়ে তোলা এবং বিশ্বে শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি অর্জনে অবদান রাখা।

চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, মালদ্বীপের সঙ্গে দুবাই জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের মতৈক্য বাস্তবায়ন করতে এবং প্যারিস চুক্তির সার্বিক ও ‘কার্যকর বাস্তবায়ন’ এগিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছুক চীন।

মুইজ্জু বলেন, মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের নিয়ে তিনি প্রথম বারের মতো চীন সফর করছেন। তিনি বলেন, মালদ্বীপ এক চীন নীতিতে অবিচল থাকে এবং নিজ সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভৌগলিক অখন্ডতা রক্ষায় একে অপরকে সমর্থন দেয়, যা মালদ্বীপ-চীন সম্পর্কে সুষ্ঠু উন্নয়নের ভিত্তি।

মালদ্বীপের অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়নে চীন অনেক সাহায্য দিয়ে আসছে – একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বিশেষ করে ‘বেল্ট অ্যাড রোড’ যৌথ নির্মাণ থেকে অনেক উপকৃত হয় মালদ্বীপের জনগণ।

মুইজ্জু জানান, চীনের ফু চিয়ান প্রদেশ সফরকালে তিনি নিজ চোখে চীনের উন্নয়ন-সাফল্য দেখেছেন এবং প্রেসিডেন্ট সির নেতৃত্বের অবদান উপলব্দি করেছেন।

আশা করা যায়, সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশিদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সুযোগ ধরে চীন ও মালদ্বীপ সহযোগিতার চ্যানেল প্রসারিত করবে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আরও অগ্রগতি অর্জন করবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn