গাজায় মানবিক বিপর্যয়: যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী নীতিতে নিন্দামুখর বিশ্ব, প্রশংসা চীনের
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হবার পর ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত গাজায় ১৭ হাজার ৭০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের বড় একটা অংশ নারী ও শিশু। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজা উপত্যকার বেশির ভাগ অংশ ধুলোয় মিশে গিছে। হাসপাতাল, স্কুল, জাতিসংঘ স্থাপনা, কোনো কিছুই বাদ পড়েনি হামলা থেকে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সহায়তাদানকারী সংস্থার অনেক কর্মীও মারা গেছেন এ সব হামলায়।
ইসরায়েলের আকাশ ও স্থল হামলায় গাজা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সম্পূর্ণভাবে। সেখানে পাঠানো যাচ্ছে না কোনো মানবিক ত্রাণ। মাঝখানের কয়েকদিনের যুদ্ধবিরতিতে কিছু ত্রাণ পাঠানো সম্ভব হলেও যুদ্ধবিরতির সময় না বাড়ায় ইসরায়েল আবার শুরু করেছে তার নির্বিচার হামলা।
ইসরায়েলের নির্বাচার হামলায় ফিলিস্তিনের গাজায় মানবিক এ বিপর্যয় উত্তরোত্তর বাড়ছে। চীনের গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্প্রতি একান্ত সাক্ষাৎকারে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের প্রেসিডেন্ট মিরজানা স্পোলজেরিক ইগার গত সপ্তাহে দক্ষিণ গাজায় তাঁর সফরের সময় পর্যবেক্ষণ করা ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।
মিরজানা বলেন, ‘গাজায় মানবিক পরিস্থিতি খারাপের থেকে অধিকতর খারাপের দিকে যাচ্ছে। সেখানে পরিস্থিতি ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখানকার মানুষের কোনো ধরনের নিরাপত্তা নেই।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় স্বাস্থ্যসেবা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে উল্লেখ করে রেডক্রস প্রেসিডেন্ট বলেন, সেখানে পর্যাপ্ত ওষুধ নেই, অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় সার্জন নেই, প্রয়োজনীয় অপারেশন থিয়েটার নেই। গত কয়েক দিনে পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়েছে। আর এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
এমন এক সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন সমুন্নত রাখতে চীনের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতার প্রশংসা করেছেন রেডক্রস প্রধান। বড় দেশ হিসেবে চীন তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে উল্লেখ করে রেডক্রস প্রেসিডেন্ট বলেন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন রক্ষায় চীনের উদ্যোগ উচ্চ প্রশংসার যোগ্য। চীনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে অন্যদেরও মানিবক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে আহ্বান জানান মিরজানা। কারণ সংঘাতের সময় বেসামরিক জনগণকে রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানবিক আইন তৈরি করা হয়েছে।